ক্যানসার শনাক্ত করা বেশ কঠিন বা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আর তাই অনেকে ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করতে না পারায় মারা যান। এবার রোগের লক্ষণ প্রকাশের কয়েক বছর আগেই রক্তের প্লাজমায় ক্যানসারের ডিএনএ মিউটেশন খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। এর ফলে ভবিষ্যতে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই ক্যানসার শনাক্ত করা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ক্যানসার ডিসকভারিতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুক্ত-ভাসমান ডিএনএ আর মৃত কোষ থেকে জেনেটিক অবশিষ্টাংশ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা ক্যানসার শনাক্তের প্রায় সাড়ে তিন বছর আগেই লক্ষণ শনাক্ত করেছেন। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ক্যাথরিন অ্যালেক্স-পানাবিয়েরেস জানিয়েছেন, হাসপাতালে ক্যানসার শনাক্তের আগেই ক্যানসারের খোঁজ পেতে এই গবেষণা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ক্যানসার হওয়ার আগে শনাক্ত করা সম্ভব হলে চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।

গবেষণায় ৫২ জন ব্যক্তির রক্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ২৬ জন ব্যক্তি রক্তদানের ছয় মাসের মধ্যে ক্যানসারে আক্রান্ত হলেও বাকি ২৬ জন কমপক্ষে ১৭ বছর ক্যানসারমুক্ত ছিলেন। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ইউসুয়ান ওয়াং জানিয়েছেন, ২৬ জন ক্যানসার রোগীর মধ্যে ১৮ জনের রক্তে কোনো মিউটেশন খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডিএনএ সিকুয়েন্সের মাধ্যমে মিউটেশন শনাক্ত করতে প্রত্যেক রোগীর জন্য হাজার হাজার ডলার খরচ হতে পারে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, রক্তের নমুনা থেকে ডিএনএ সিকুয়েন্সের পাশাপাশি শ্বেতরক্তকণিকার তথ্য বিশ্লেষণ করে রক্তে জেনেটিক মিউটেশন পাওয়া গেছে, যা ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণের ইঙ্গিত দেয়। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে স্তন, কোলন, অগ্ন্যাশয় ও লিভার ক্যানসার শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড এনএ

এছাড়াও পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

আরো পড়ুন:

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়

এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।

তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।

পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।

এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।

আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।

এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ