ময়মনসিংহে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে রিকশাচালক নিহত
Published: 3rd, July 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে মজনু মিয়া (৩২) নামের এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শহরের শম্ভুগঞ্জের পুলিয়ামারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মজনু মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার শিবপুর গ্রামে। তিনি ফারুক মিয়ার ছেলে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শহরের জেল রোড তালতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখান থেকেই রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো গতকাল দুপুরে মজনু মিয়া রিকশা নিয়ে বের হন। সন্ধ্যার দিকে শম্ভুগঞ্জের পুলিয়ামারী এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন ছিনতাইকারী তাঁর রিকশা নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা মজনুর গলা ও পেটে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিবিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই মজনু মিয়াকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক স্ত্রীকে খুনের পর মেয়েকে দলিল বুঝিয়ে দিয়ে আত্মহনন
ময়মনসিংহ নগরীতে প্রাক্তন স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রাকিবুল করিম (৫০) নামে এক ব্যক্তি। আত্মহত্যার আগে তিনি জমিজমার দলিলপত্র তার মেয়েকে বুঝিয়ে দেন বলে জানান ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) ভোরে নগরের গুলকীবাড়ি এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার হয়। মরদেহ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত রওশন আক্তার (৪২) গুলকীবাড়ি এলাকার ওই বাসায় মেয়েকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। তার বাবার বাড়ি নেত্রোকোণা সদরের রাজুর বাজার এলাকায়। রাকিবুল করিম (৫০) ময়মনসিংহ নগরের সেনবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওমান প্রবাসী ছিলেন।
আরো পড়ুন:
জুলাই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিল ফ্যাসিবাদ বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ গঠন: প্রধান উপদেষ্টা
শৌচাগারে মিলল গৃহবধূর বস্তাবন্দি লাশ
পুলিশ জানায়, রাকিবুল ও রওশন দম্পতির দুই মেয়ে। তাদের বড় মেয়ে ঢাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ছোট মেয়ে ময়মনসিংহ নগরের ক্যান্টনমেন্ট কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ালেখা করে। রওশন গুলকীবাড়ি এলাকার একটি বাসায় ছোট মেয়েকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে মাস তিনেক আগে রাকিবুল ও রওশন আক্তারের ডির্ভোস হয়।
আজ মঙ্গলবার ভোরে রওশন আক্তার যে বাসায় ভাড়া থাকেন সে বাসায় প্রবেশ করেন রাবিবুল। তিনি রওশন আক্তারকে ছুরিকাঘাত করেন। মাকে ছুরিকাঘাত করতে দেখে ছোট মেয়ে রোজা আক্তার ভয়ে অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। রওশন আক্তারকে হত্যার পর রাকিবুল নিজে বাসার অপর একটি কক্ষে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দুইটি মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত রওশন আক্তারের ভাতিজা ইকবাল হোসেন শাওন বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে দুইজনের ডিভোর্স হয়েছিল। সকালে রওশন আক্তারের ভাড়া বাসায় ঢুকে রাকিবুল তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। পরে তিনি মেয়েকে বেঁধে রেখে অন্য একটি রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে নেত্রকোণা থেকে এসে মরদেহ দেখতে পাই।”
বাড়িটির দায়িত্বে থাকা রকিবুল ইসলাম লিটন বলেন, “১০-১২ বছর আগে বাসাটি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন রওশন আক্তার ও তার মেয়েরা। তার বড় মেয়ে ঢাকায় থাকত। তাদের চালচলন ভালোই ছিল। হঠাৎ এমন ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারিনি।”
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “গত ২৪ জুন ওমান থেকে দেশে আসেন রাকিবুল করিম। তিনমাস আগে স্ত্রী কর্তৃক তিনি তালাকপ্রাপ্ত হন। আজ বাসায় ঢুকে প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা করেন রাবিবুল। এরপর নিজের জমিজমার দলিলপত্র মেয়েকে বুঝিয়ে দিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেন।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না আমরা খতিয়ে দেখছি।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ