আজ বুধবার বেলা ১টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে দেশের নয় জেলার কিছু স্থানে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ সময় এসব স্থানে বজ্রপাতের আশঙ্কা আছে। বজ্রপাত চলার সময় ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

যে নয় জেলায় বৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে তার মধ্যে আছে গাজীপুর, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান। এসব জেলার কিছু স্থানে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব এলাকায়  ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বা তার অধিক গতিবেগে পুনরায় দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

আজকের বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক বার্তাও দেওয়া হয়েছে। বজ্রপাতের সময় বিশেষ করে ঘরের বাইরে না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বজ্রপাতের একাধিক শব্দ শোনার পর সর্বশেষ শব্দের সময় থেকে অন্তত ৩০ মিনিট ঘরের ভেতরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে, যাতে প্রাণহানির ঝুঁকি কমানো যায়।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, ফলে এই সতর্কতা বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে গাছপালা ও দুর্বল স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে। এ অবস্থায় যারা ঘরের বাইরে কাজ করেন, বিশেষ করে কৃষক, নির্মাণ শ্রমিক ও খোলা মাঠে কাজ করেন—তাদের জন্য এই সময়টি অত্যন্ত সতর্কতার।

সরকারি ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জনগণকে সচেতন করতে প্রচার চালানো হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ কমিটিগুলোকেও প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৫০০ বছরের তেঁতুল গাছ

বরেন্দ্র ভূমির ঐতিহাসিক জনপদ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মধ্যে নেজামপুর গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিয়নের শুড়লা গ্রামে নাচোলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হিসেবে আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সোয়া ৫০০ বছরের বেশি বয়সী একটি তেঁতুল গাছ। রাজকীয় এ তেঁতুল গাছটির আকার যেমন বিশাল, তেমন উচ্চতাও অনেক বেশি। গাছটিতে এখনও তেঁতুল ধরে। বক বাসা বাঁধে, ডিম পাড়ে। ঐতিহ্যবাহী এ গাছটি দেখতে মানুষের আনাগোনাও বাড়ছে গ্রামটিতে। উল্লেখ্য, নাচোল বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে শুড়লা গ্রামটির দূরত্ব ৫-৬ কিলোমিটার। 
গাছটির বয়স সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, ২০০৩ সালের আগে কেউই তেঁতুল গাছটির বয়স জানতেন না। তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক নুরুল হক তেঁতুল গাছটি দেখে এ বিষয়ে উদ্যোগী হন। তিনি উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করান। বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন, গাছটির বয়স ৫০০ বছরেরও বেশি। তখন থেকেই প্রশাসন গাছটিকে প্রাচীনবৃক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করে এর দেখভালের দায়িত্ব নেয়।  
ঐতিহ্যের পাশাপাশি গাছটিকে এলাকাবাসী সম্পদও মনে করেন। তাই গাছটিকে রক্ষার জন্য কেউ কোনো ক্ষতি করেন না। গাছটিকে ঘিরে স্থানীয় হিন্দু পরিবারগুলো এখনও পূজা করে। তারা বলেন, আগে গাছটি আরও উঁচু ছিল। ২০০০ সালের পর গাছের সবচেয়ে উঁচু ডালটি ভেঙে পড়ে। দাদারাও গাছটি এ রকমই দেখেছেন বলে গল্প শুনেছেন। 
শুড়লা গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি শিক্ষক সুবাস চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘আমার মনে পড়া থেকে শুনে আসছি, এই তেঁতুল গাছটি ৫০০ বছর আগের। গাছটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসেন।’ 
পর্যটকদের অসুবিধার দিকটি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একটি শৌচাগার আছে, যা অকেজো। তাই এখানে একটি মানসম্মত শৌচাগার, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, মন্দির এবং গাছটি ঘিরে প্রাচীর নির্মাণ, গাড়ি পার্কিং ও পর্যটকদের বসার স্থানের ব্যবস্থা করা জরুরি।’ 
তেঁতুল গাছ প্রসঙ্গে লেখক ও গবেষক আলাউদ্দিন আহমেদ বটু বলেন, ‘তেঁতুল গাছটি সংরক্ষণে আরও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো গেলে এখানে আরও পর্যটক বাড়বে।’ 
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা সরকার জানান, গাছটি প্রশাসনের পক্ষ থেকেই দেখভাল করা হয়। তবে এটি ঘিরে নতুন করে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
দীর্ঘজীবী এই গাছটি নিরাপদ থাক এটিই সবার প্রত্যাশা। v
সুহৃদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

সম্পর্কিত নিবন্ধ