বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০টি হীরার খনির ৫টিই এক দেশে
Published: 14th, May 2025 GMT
১আইখাল, রাশিয়া
রাশিয়ার সাখা অঞ্চলে আইখাল খনির অবস্থান। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় হীরার খনি। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে এই খনিতে মজুতের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৭ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ক্যারেট। ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত এটি ওপেন-পিট বা উন্মুক্ত খনি ছিল। এরপর এটিকে ভূগর্ভস্থ খনিতে রূপান্তর করা হয়।
আইখাল হীরার খনি থেকে প্রতিবছর প্রায় ১৩ লাখ ক্যারেট হীরা উত্তোলন করা হয়। বিশ্বের অপরিশোধিত হীরার এক-তৃতীয়াংশ এখান থেকেই উত্তোলন করা হয়ে থাকে। রাশিয়ার আংশিক রাষ্ট্রায়ত্ত হীরা কোম্পানি আলরোসার অধীনস্থ আইখাল মাইনিং কোম্পানি এই খনি পরিচালনা করে।
২জোয়ানেং, বতসোয়ানাবতসোয়ানার কালাহারি মরুভূমিতে জোয়ানেং খনির অবস্থান। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরার খনি। ডি বিয়ার্স ও বতসোয়ানা সরকারের যৌথ উদ্যোগ হিসেবে পরিচিত ডেবসওয়ানা ডায়মন্ড কোম্পানি খনিটি পরিচালনা করে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুসারে, এ খনিতে হীরার সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ ১৬ কোটি ৬৬ লাখ ক্যারেট। বর্তমানে খনিটির ৪০০ মিটার গভীরে খননকাজ চলছে। ২০৩৪ সাল পর্যন্ত এ খনি থেকে হীরা উত্তোলন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৩উদাচনি, রাশিয়াউদাচনি খনির অবস্থান রাশিয়ার ইয়াকুতিয়া অঞ্চলের সাখা রিপাবলিকে। রুশ ভাষায় ‘উদাচনি’র অর্থ ‘ভাগ্যবান’। আলরোসা কোম্পানি এ খনি পরিচালনা করে।
১৯৭১ সালে এ খনিতে হীরা উত্তোলন শুরু হয়। তখন এটি উন্মুক্ত খনি ছিল। বর্তমানে, খনিটি থেকে ভূগর্ভস্থ পদ্ধতিতে হীরা উত্তোলন করা হয়। এ খনিতে সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ ১৬ কোটি ৪৪ লাখ ৬০ হাজার ক্যারেট।
৪জুবিলি, রাশিয়াজুবিলি খনির অবস্থানও রাশিয়ার ইয়াকুতিয়া অঞ্চলের সাখা রিপাবলিকে। এটি উন্মুক্ত পদ্ধতির হীরার খনি। ২০১৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত হিসাব অনুসারে এই খনিতে সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি ৩০ লাখ ক্যারেট। এর মধ্যে ৫ কোটি ১০ লাখ ক্যারেট হীরা ভূগর্ভে মজুত আছে।
১৯৮৬ সাল থেকে এটি আলরোসার আইখাল মাইনিং ও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন হীরা কোম্পানি আলরোসার প্রসেসিং ডিভিশনের যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। ২০২২ সালে এ খনি থেকে প্রায় ৪৯ লাখ ৯০ হাজার ক্যারেট হীরা উত্তোলন হয়।
৫নিউরবা, রাশিয়ানিউরবা খনি রাশিয়ার সাখা অঞ্চলে অবস্থিত। এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম হীরার খনি। এ খনি থেকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে হীরা উত্তোলন করা হয়। ২০১৮ সালের জুলাই মাসের হিসাব অনুসারে এ খনিতে মজুতের পরিমাণ ১৩ কোটি ৩০ লাখ ক্যারেট।
৬ওরাপা, বতসোয়ানাবতসোয়ানার ফ্রান্সিসটাউন থেকে ২৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট এলাকায় ওরাপা খনির অবস্থান। ডি বিয়ার্স ও বতসোয়ানা সরকারের যৌথ মালিকানার কোম্পানি ডেবসওয়ানা এ খনি পরিচালনা করে থাকে। ১৯৭১ সাল থেকে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে এখান থেকে হীরা উত্তোলন করা হচ্ছে।
২০১৮ সালের হিসাব অনুসারে এ খনিতে সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ প্রায় ১৩ কোটি ১২ লাখ মেট্রিক টন। ২০২২ সালে ওরাপা খনি থেকে প্রায় ৮ কোটি ৮৫ লাখ ক্যারেট হীরা উত্তোলন করা হয়েছে।
৭কাটোকা, অ্যাঙ্গোলাকাটোকা খনি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ স ব অন স র ২০১৮ স ল র উন ম ক ত পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধিমালা গ্রহণের আদেশ স্থগিত, আপিল শুনবেন সর্বোচ্চ আদালত
অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধিমালা গ্রহণ করে সাত বছর আগে দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
বিধিমালা গ্রহণসংক্রান্ত আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) শুনানি নিয়ে লিভ মঞ্জুর (আপিল করার অনুমতি) করে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আজ রোববার এ আদেশ দেন। এর ফলে এ–সংক্রান্ত আপিল শুনবেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
বিচার বিভাগ পৃথক্করণ-সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা-২০১৭ প্রজ্ঞাপন আকারে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয়।
এই বিধিমালা গ্রহণ করে ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি আদেশ দেন তৎকালীন দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ।
এই আদেশ পুনর্বিবেচনা চেয়ে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরসহ আট আইনজীবী গত মাসে আপিল বিভাগে আবেদন (রিভিউ) করেন।
রিভিউ আবেদনটি গত ২১ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার শুনানি হয়। সেদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ আদেশের জন্য আজ দিন রাখেন।
আদালতে পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। মাসদার হোসেন মামলাটি নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকসংক্রান্ত মামলা হিসেবে পরিচিত। এই মামলার রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর আইন মন্ত্রণালয় বিধিমালার একটি খসড়া তৈরি করে ২০১৫ সালের ৭ মে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায় তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে জানান আপিল বিভাগ। বিধিমালা সংশোধন করে দেন আদালত। সুপ্রিম কোর্ট কমিটির সংশোধনী অনুসারে বিধিমালার গেজেট সরকার প্রকাশ করবে বলে আশা করে ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট আদেশ দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ৯ সদস্যের আপিল বিভাগ।
আজকের আদেশের পর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৫ সালের ৭ মে তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি বিষয়ে প্রস্তাবনা সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো হয়। ২০১৬ সালে আগস্টে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে শৃঙ্খলা বিধিটি সংশোধনীসহ আবার সরকারের কাছে পাঠানো হয়। এ কথা বলে যে শৃঙ্খলাবিধিতে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। কিন্তু তৎকালীন সরকার এই পরিবর্তনগুলো গ্রহণ না করে সরকারের দেওয়া আগের শৃঙ্খলাবিধি তা প্রজ্ঞাপন আকারে ২০১৭ সালে প্রকাশ করে। এই বিধিমালাটি সুপ্রিম কোর্ট ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি এক আদেশের মাধ্যমে গ্রহণ করে নেয়।
এর মধ্যে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে উল্লেখ করে এই আইনজীবী বলেন, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি যিনি ছিলেন, তিনি (বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) দেশের বাইরে যেতে বাধ্য হন। তিনি দেশের বাইরে থেকে পদত্যাগপত্র পাঠান। নতুন করে ভারপ্রাপ্ত যে প্রধান বিচারপতি (বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা) হন, তাঁর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই শৃঙ্খলাবিধি গ্রহণ করে নেন। তারিখ ছিল ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি। এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ আবেদনটি করা হয়। আগের আদেশ ছিল নয় বিচারপতির সমন্বয়ে, তা রিভিউ না করে পরবর্তী সময়ে পাঁচ বিচারপতির সমন্বয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এ ধরনের আদেশ দিতে পারেন না। এটা সুপ্রিম কোর্টের আগের আদেশের প্রতি অবমাননা প্রদর্শনের শামিল।
শৃঙ্খলা বিধিমালা গ্রহণ করে ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারির আদেশ আপিল বিভাগ স্থগিত করে দিয়েছেন বলে জানান শিশির মনির। তিনি বলেন, একই সঙ্গে নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য যে শৃঙ্খলাবিধি আছে, তা এই সময়ে কার্যকর থাকবে। একইভাবে হাইকোর্ট বিভাগে যে রিট আবেদনের (সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে) শুনানি হচ্ছে তা, যথাযথভাবে চলবে। রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে তিন বিষয়ে আদেশের মাধ্যমে লিভ মঞ্জুর করা হয়েছে।