আকবর আলীর অনবদ্য সেঞ্চুরি যেন এক সময় বাংলাদেশের জয়কে প্রায় নিশ্চিত করেই ফেলেছিল। কিন্তু ক্রিকেট যেমন অনিশ্চয়তার খেলা—তেমনই হলো বুধবার (১৪ মে) রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে। দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের বিপক্ষে জয় থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে থাকতে হোঁচট খেল বাংলাদেশ ইমার্জিং দল। ১০ রানের হারে হাতছাড়া হলো ম্যাচ এবং সিরিজ নিশ্চিত করার সুযোগ।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আজ টস হেরে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দল তুলে তোলে ৭ উইকেটে ৩৩২ রানের বিশাল স্কোর। ডিয়ান ফরেস্ট ছিলেন অপরাজিত ৯৬ রানে। আর কনর বয়েড করেন ঝলমলে ৯১ রান। আন্ডিল মোগাকানের ব্যাট থেকেও মূল্যবান ৫৫ রান আসে। বাংলাদেশের হয়ে রিপন মন্ডল, মাহফুজুর রহমান রাব্বী ও মারুফ মৃধা শিকার করেন দুটি করে উইকেট।

জবাবে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ দল শুরুতেই হারায় প্রথম ম্যাচের নায়ক মাহফিজুল রবিনকে। তবে ওপেনার জিশান আলমের ঝড়ো ফিফটি (৩৪ বলে ৫০) কিছুটা গতি এনে দেয় ইনিংসে। এরপর অধিনায়ক আকবর আলির সঙ্গে আরিফুল ইসলাম গড়েন ১১১ রানের পার্টনারশিপ। আরিফুল ৩৫ রানে ফিরে গেলেও, আকবর চালিয়ে যান নিজের ব্যাটিং ঝলক।

চাপের মাঝে দাঁড়িয়ে একদিকে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন, অন্যদিকে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে তার জুটিতে আসে আরও ৯৬ রান। যখন আকবর ১১০ বলে ১৩১ রানে থামেন, তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন মাত্র ৩০ বলে ৩২ রান—হাতে ছিল ৫ উইকেট!

সেই জায়গা থেকে যেন হঠাৎ করেই সব এলোমেলো হয়ে যায়। আকবর ফিরতেই রানক্ষুধা থেমে যায় দলের। রিজওয়ানের (৩৭) বিদায়ের পর একের পর এক উইকেট হারালে ভেঙে পড়ে ইনিংস। কেউ দাঁড়াতে পারেননি। রাব্বী ১১, জীবন ১, ওয়াসি ৩, মারুফ শূন্যরানে ফেরেন সাজঘরে।

প্রোটিয়া পেসার আন্ডিল সিমেলানে একাই তুলে নেন ৫ উইকেট, দারুণ সহায়তা দেন হ্যান্ডসাম মোকোয়েনা, যিনি শিকার করেন ৩টি উইকেট। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ৩২২ রানে, ৪৯.

৪ ওভারে।

এই হারের ফলে সিরিজে এখন ১-১ সমতা। তাই শুক্রবারের শেষ ম্যাচ হয়ে উঠেছে সিরিজ নির্ধারণী ফাইনাল।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের

সিলেটে পুলিশের হেফাজতে নিহত রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করেছেন নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন।

সালমা বেগম বলেন, আকবর হোসেন প্রথমেই ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তখন পুলিশ অনেক কষ্টে কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। জামিন পেয়েই যে পালানোর চেষ্টা করবেন, সেটা স্বাভাবিক ছিল।

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। পরে ১১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী। পরে মহানগর পুলিশের অনুসন্ধান কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। এরপর হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। প্রধান অভিযুক্ত আকবরকে ৯ নভেম্বর কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হলেন এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ ও টিটু চন্দ্র দাস, ফাঁড়ির ‘টু-আইসি’ পদে থাকা এসআই হাসান উদ্দিন ও আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত রোববার আকবর হোসেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। এরপর মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষ পিটিশন ফর লিভ টু আপিল দায়ের করে। শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ উচ্চ আদালতের আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি আকবর হোসেনকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

সালমা বেগম বলেন, হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান শুরু থেকেই পলাতক। কারাগারে থাকা পাঁচজনের মধ্যে চারজনই জামিনে মুক্ত আছেন। যার কারণে পুরো পরিবার ও মামলার সাক্ষীরা শঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলার বিচারকাজ প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য তিনি ন্যায়বিচার পেতে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি আবেদন জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, সহসভাপতি আমির হোসেন, দুর্নীতি মুক্তকরণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেন, সিলেট যুব উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি আফিকুর রহমান, আখালিয়ার মুরব্বি ছানাউল্লাহ ছানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁরা আকবর হোসেনকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির দাবি জানান।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল ফজল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার তাঁর জামিন স্থগিত হয়েছে। তাঁকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আত্মসমর্পণ না করলে তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গ্রেপ্তার করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রীতি খেলার শেষে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ, সুনামগঞ্জে প্রাণ হারালেন দুজন
  • সুনামগঞ্জে ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ২
  • জামিনে মুক্তির পরই ভারতে পালিয়েছেন এসআই আকবর, দাবি নিহতের মায়ের