তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের লংমার্চে হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী)। তারা এই হামলার বিচার দাবি করেছে।

বুধবার পৃথক পৃথক বিবৃতিতে ছাত্রসংগঠন এ দাবি জানায়। ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

ছাত্র ইউনিয়নের (তামজিদ-শিমুল) অপর অংশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতো আন্দোলন দমনে “সিলেকটিভ” আচরণ অন্তর্বর্তী সরকারের ফ্যাসিস্ট মনোভাবের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।.

..এর মধ্য দিয়ে সরকার তার দলনিরপেক্ষ ভূমিকা হারিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাবিরোধী অবস্থান নিয়েছে।’

ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ এক যৌথ বিবৃতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তাঁরা অবিলম্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।

ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে পূর্বের ন্যায় ফ্যাসিবাদী কায়দায় আন্দোলন দমন ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। অবিলম্বে এই পুলিশি হামলার বিচার করতে হবে, আহতদের চিকিৎসার দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে।’

আরও পড়ুনপুলিশের লাঠিপেটা–কাঁদানে গ্যাস, যমুনা অভিমুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের লংমার্চ ছত্রভঙ্গ১০ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ১,৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত: জাতিসংঘ

জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, মে মাসের শেষের দিক থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ৭৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। খবর আরব নিউজের। 

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত আমরা রেকর্ড করেছি যে, গাজায় সাহায্য চাইতে গিয়ে অন্তত ১ হাজার ৭৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৯৯৪ জন জিএইচএফের সাইটের আশেপাশে এবং ৭৬৬ জন বিভিন্ন ত্রাণ সরবরাহ রুটে নিহত হয়েছে। এই হত্যার অধিকাংশ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হাতে ঘটেছে।

গত ১ আগস্ট জাতিসংঘের প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৭৩ জন বলা হয়েছিল। তবে এ সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। 

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলে সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিল জার্মানি

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়াল

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবারই কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ জন মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হামাসের সামরিক ক্ষমতা নষ্ট করতে কাজ করছে এবং বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সতর্কতা অবলম্বন করছে। 

সামরিক প্রধান জানান, নতুন আক্রমণের পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে, যার লক্ষ্য হামাসকে পরাজিত করা এবং বাকি জিম্মিদের মুক্ত করা।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা শহর এবং আশেপাশের শরণার্থী শিবির নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে, যা এই ভূখণ্ডের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। গাজায় উপত্যকায় সংঘাত প্রায় দুই বছর ধরে চলছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শুক্রবার জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা শহরের উপকণ্ঠে অভিযান চালাচ্ছে। যুদ্ধ সম্প্রসারণের ইসরায়েলি সরকারের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিকভাবে ক্ষোভের পাশাপাশি ইসরায়েলের ভিতরেও বিরোধের মুখে পড়েছে।

জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে, ইসরায়েল মানবিক সাহায্যের পরিমাণ ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছে।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬১ হাজার ৮২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতের এই সংখ্যাকে জাতিসংঘ বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ