সুনামগঞ্জে আ. লীগ যুবলীগের ৬ নেতা কারাগারে
Published: 15th, May 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ছয় নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ওই ৬ নেতা জেলা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিচারক মো. হেমায়েত উদ্দিন তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন– জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শংকর চন্দ্র দাস, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো.
ওই ছয়জনের জামিন নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী নুরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ্বল।
গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সুনামগঞ্জ পৌর শহরে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত জহুর আহমদের ভাই জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট ও সাধারণ সম্পাদক নোমান বখ্ত পলিন বখতসহ ৯৯ জনকে আসামি করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ স ন মগঞ জ য বল গ র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারের সাবেক ডিসি ও জেলা জজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ
জালিয়াতির একটি মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. রুহুল আমিন; সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মাতারবাড়ীতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলা থেকে ডিসির নাম বাদ দিতে এ জালিয়াতি হয় বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে উঠে আসে। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এই মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন।
দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এর আগে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ গঠন থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। আগামী ৩ আগস্ট থেকে মামলার সাক্ষ্য শুরু হবে।
কাজী ছানোয়ার আহমদ আরও বলেন, কক্সবাজারের সাবেক ডিসি রুহুল আমিন ২০১৭ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যান। পরে তিনি জামিনে বের হন। এর আগে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম বর্তমানে অবসরে রয়েছেন। অন্য তিন আসামি হলেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ। আজ শুনানির সময় আদালতের কাঠগড়ায় পাঁচ আসামি উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে মাতারবাড়ীর বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী এই দুর্নীতির ঘটনায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন দুদককে। তবে মামলার পরপরই তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো কাগজপত্র থেকে ১ নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে তা পাঠান। বিষয়টি জানাজানির পর বাদী কায়সারুল একই আদালতে রুহুল আমিন, সাদিকুল ইসলামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্ত শেষে দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক রিয়াজউদ্দিন গত বছরের ১ জুলাই পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী মামলার সব নথিপত্র আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফরিদ আহমদের কাছে দাখিল করেন। পরদিন (২০ নভেম্বর) সকালে আদালতের কর্মচারী সৈয়দ আকবর নথিপত্র কক্সবাজার ডাকঘরে জমা দেওয়ার জন্য রওনা দিলে তাঁকে আবার আদালতে ফিরিয়ে এনে খামটি স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদের মাধ্যমে জেলা ও দায়রা জজের কাছে পাঠানো হয়। পরে নানা কৌশলে আবেদন থেকে জেলা প্রশাসকের নাম বাদ দেওয়া হয়।
তদন্তে আরও উঠে আসে, ফৌজদারি দরখাস্ত রেজিস্ট্রারে ২৮ জন আসামির নাম থাকলেও পরে ৩টি পৃষ্ঠা পাল্টে ১ নম্বর আসামি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাফর আলমের নাম বসানো হয় এবং বাদীর স্বাক্ষর জাল করে ২৮ জনের জায়গায় ২৭ জনকে আসামি দেখিয়ে দুদকে নথি পাঠানো হয়। এই জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশারদের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।
দুদক ও আদালত সূত্র জানায়, মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ১ হাজার ৪১৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ ছিল ২৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে চিংড়িঘের বাবদ ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ওই অর্থের মধ্যে মনগড়া ২৫টি ঘের দেখিয়ে ১৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি তুলে আত্মসাৎ করা হয়। আরও বিভিন্ন উপায়ে আত্মসাৎ করা হয় টাকা। ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর প্রথম আলোতে ‘শুরুতে লুট ২২ কোটি টাকা’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরদিন মামলাটি দায়ের হয়।