শুধু চরিত্রের ভেতরেই ডুবে ছিলাম: ইরফান সাজ্জাদ
Published: 15th, May 2025 GMT
প্রায় দুই বছর আগের কথা। ছোটপর্দার ব্যস্ত অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ অনিয়মিত হয়ে পড়েন টিভি নাটকে। মিডিয়ার আড্ডা আয়োজনেও খুব একটা দেখা মিলত না তাঁর। নতুন কোনো সিনেমায় অভিনয়েরও কোনো খোঁজখবর দিচ্ছিলেন না। একেবারে কাজের মধ্যে ডুবেছিলেন। তাঁকে নিয়ে যখন জল্পনা-কল্পনা চলছিল, তখনই সাদা গেঞ্জি গায়ে এলোমেলো চুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘আই অ্যাম লাভ উইথ দিস ক্যারেক্টার।’
জানালেন বিপ্লব হায়দারের ‘আলী’ সিনেমায় অভিনয়ের খবর। ইরফান সজ্জাদ অভিনীত সেই সিনেমাটি আসছে ঈদে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে ইরফান সাজ্জাদ বলেন, ‘২০২৩ সালের জুলাইতে ‘আলী’ সিনেমার দৃশ্য ধারণ শুরু হয়েছিল। এ সিনেমায় শুটিংয়ের জন্য তিন মাস নতুন কোনো কাজই করিনি। শুধু চরিত্রের ভেতরেই ডুবে ছিলাম। এটি আপামর জনসাধারণের গল্প। সবাই এ গল্পের সঙ্গে একাত্ম হতে পারবেন। আমি যেহেতু নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছি, তাই যতটা কষ্ট করার ও শ্রম দেওয়ার দিয়েছি।
পরিচালক বলেছেন, তিনি আলীকে আলীরূপে আমার মধ্যে যেভাবে দেখতে চেয়েছেন, ঠিক তাই পেয়েছেন। যে কারণে তিনি দারুণ খুশি। আমিও আলী চরিত্রটিতে অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে ভীষণ আনন্দিত। সিনেমাটি নিয়ে বেশ আশাবাদী। শুনেছি, এটি ঈদে মুক্তি পাবে। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে ভেবে ভালো লাগছে।’
নিজের অভিনীত চরিত্র প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘আলী সিনেমায় আমি একজন বোবা ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির চরিত্রে অভিনয় করেছি। যার কোনো সংলাপ নেই। শুধু সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করতে হয়েছে। এটি একটি বাণিজ্যিক সিনেমা হলেও এর নির্মাণশৈলী বেশ পরীক্ষামূলক। এখানে আমার অভিনয়ের যথেষ্ট সুযোগ ছিল। চেষ্টা করেছি আলী চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে। কতটা পেরেছি সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শকই তা ভালো বলতে পারবেন’।
২০১৩ সালে ‘ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম দি আলটিমেট ম্যান’ প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু ইরফান সাজ্জাদের। লাখো প্রতিযোগীকে পাশ কাটিয়ে বিজয়ের মুকুট মাথায় তোলেন এ তরুণ। এরপর নাটক-টেলিছবিতে নিয়মিত অভিনয় করছেন তিনি। অভিনয় ক্যারিয়ারে সাদিয়া ইসলাম মৌ, রিচি সোলায়মান, বিজরী বরকতুল্লাহ, নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ অনেক গুণী অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে তাঁকে দেখা গেছে।
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘মন জানে না মনের ঠিকানা’। পরের বছর প্রেক্ষাগৃহে আসে ‘ভালোবাসা এমনই হয়’। তানিয়া আহমেদের পরিচালনায় এ সিনেমাটি দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এর অপেক্ষা করছিলেন ভালো গল্প ও চরিত্রের জন্য। সিনেমা দুটির মুক্তির অর্ধযুগ পর তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন চলচ্চিত্রে। গত বছরের শেষের দিকে মুক্তি পায় তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘ভয়াল’। এটি পরিচালনা করেছেন বিপ্লব হায়দার। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে অনম বিশ্বাসের ‘ফুটবল ৭১’।
সরকারি অনুদানে নির্মিত ফুটবল ৭১ সিনেমায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের বীরত্বগাথার পাশাপাশি থাকবে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়দের গল্প। শুধু ছোট পর্দা-সিনেমা নয়, ওটিটিতেও দেখিয়েছেন তাঁর অভিনয় মুনশিয়ানা।
সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ-তে মুক্তি পেয়েছে ইরফান সাজ্জাদ অভিনীত নাটকে ‘গ্যাংস্টার ব্রোস’। এটি এমন এক কনটেন্ট, যা শুধু গ্যাংস্টারদের গল্প নয়। এখানে মানবতা, বন্ধুত্ব আর আত্মত্যাগের এক গল্প পর্দায় তুলে এনেছেন নির্মাতা সাজিব খান। এতে বজলু চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন ইরফান। নাটকটি নিয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছেন বলে জানালেন এ অভিনেতা। তাঁর সঙ্গে ফজলু চরিত্রে আছেন সাইদুর রহমান পাভেল। দু’জনকে ঘিরেই নাটকের গল্প এগিয়ে গেছে।
বর্তমানে ঈদ নাটক ও টেলিছবির কাজ করছেন ইরফান সাজ্জাদ। গতকাল ভিকি জাহেদের পরিচালনায় ‘সন্দেহ’ নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন তিনি। আগের তুলনায় তিনি ছোট পর্দার কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। সিনেমা ও ওটিটিতেই ব্যস্ত থাকতে চান তিনি। সে লক্ষ্যেই এগিয়ে চলছেন এ তারকা অভিনেতা।
দেখতে দেখতে কেটে গেল তাঁর ক্যারিয়ারের প্রায় এক দশক। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট, জানতে চাইলে ইরফান বলেন, ‘আমি যতটুকু অভিনয় করার সক্ষমতা রাখি, তার ৫০ শতাংশও করিনি। এখনও অনেক কিছু করার বাকি। অনেক কিছু শেখার আছে। চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে সবসময়ই চেষ্টা করছি। তারকা নয়, ভালো অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখি। দর্শকের ভালোবাসা নিয়ে বহুদূরে এগিয়ে যেতে চাই।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইরফ ন স জ জ দ ইরফ ন স জ জ দ চর ত র ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা
সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী