চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে রাজস্ব আদায়ের রেকর্ড
Published: 2nd, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি হওয়া পণ্যের শুল্কায়ন করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা এই শুল্ক স্টেশনটি এককভাবে দেশের সবচেয়ে বড় শুল্ক পয়েন্ট। প্রতি কর্মদিবসে গড়ে ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে এটি। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ নামের সেই শুল্ক পয়েন্টটি এবারে ভেঙেছে অতীতের সব রেকর্ড। সদ্য বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তারা রাজস্ব আদায় করেছে ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এ অঙ্ক ছিল ৬৮ হাজার ৭৫৫ দশমিক ৭ কোটি টাকা। এই হিসেবে এক অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৬ হাজার ৬৭৬ দশমিক ৩ কোটি টাকা। শতাংশের হিসেবে যা ৯ দশমিক ৭১।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। বছরজুড়ে বন্দরে মোট ৩২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৭ টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের সমতুল্য ইউনিট) কনটেইনার হ্যান্ডেল করেছে তারা। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৭৭ টিইইউস বেশি। আগের বছর হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ টিইইউ। এখানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার অপারেশন শুরুর পর থেকে এটিই সর্বোচ্চ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের মুখপাত্র ও ডেপুটি কমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, ঈদ উপলক্ষে টানা ছুটি, পরিবহন ধর্মঘট ও এনবিআর কর্মকর্তাদের একাধিক ধাপের কর্মবিরতি ও কলমবিরতি কর্মসূচির পরও অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। এটির জন্য সব স্টেকহোল্ডারদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
তিনি জানান, রাজস্ব আদায়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। সেই তুলনায় ৪ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা পিছিয়ে আছি আমরা। তবে রাজস্ব আদায়ের সার্বিক চিত্র ইতিবাচক। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই কাস্টম হাউস রাজস্ব আদায় করেছিল ৬২ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র কর ড
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের ব্যাংক ঋণ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে
সদ্য বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নিট ৭৮ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় যা ২০ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা কম। অবশ্য অর্থবছরের শুরুর তুলনায় শেষ দিকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। মূলত সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ কমা এবং রাজস্ব আদায়ে গতি না থাকায় এমন হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৯ জুন পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। গত বছরের জুন পর্যন্ত ঋণ ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। সামগ্রিকভাবে সরকারের ঋণ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে থাকলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকে অনেক বেড়েছে। গত ২৯ জুন পর্যন্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঋণ স্থিতি ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা বেড়ে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ১০৫ কোটি টাকায় ঠেকেছে। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আগের দায় পরিশোধ হয়েছে ৫১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের ঋণ স্থিতি কমে ১ লাখ ৪ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকায় নেমেছে। এর মানে এ পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থায় সরকারের নিট ঋণ বেড়েছে ৭৮ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ঘোষণা দেন ঋণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখা হবে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছর ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। ব্যাংকের বাইরে সঞ্চয়পত্র থেকে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। তবে গত এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে উল্টো ঋণ কমেছে ৭ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা। প্রতি বছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের একটি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও গত তিন অর্থবছর ধরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ উল্টো কমছে।
ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্রের বাইরেও সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে থেকে সরকার আরও ৪৬ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা নিয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎসে সরকারের নিট ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৯১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০২৪-২৫ অর্থবছর মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ এবং চলতি অর্থবছর সাড়ে ৬ শতাংশে নামানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। মূলত এ কারণেই বাণিজ্যিক ব্যাংক ও অন্য বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পরিশোধ করা হচ্ছে। অবশ্য এ সময়ে কয়েকটি দুর্বল ব্যাংকে বিপুল অঙ্কের ধার দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।