ড্রেসিরুমে আয়েশ করে কফি খাচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই দেখেন ৫ উইকেট নেই! স্কোরবোর্ডের দিকে তাকিয়ে বিশ্বাসই হচ্ছিল না তাসকিন আহমেদের।

প্রায় চার মাস পর মাঠে ফিরে ৪৭ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন। তাসকিনের জন্য গতকালের রাতটা হতো সাফল্য উদ্‌যাপনের। কিন্তু ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে পরাজিত দলের প্রতিনিধি হয়ে তিনি যেন কাঠগড়ায়ই দাঁড়িয়ে গেলেন! প্রচণ্ড গরমে লালচে হয়ে ওঠা ঘর্মাক্ত চেহারায় দিলেন ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি।

এটাই আসলে খেলা, যেখানে ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলের সাফল্য–ব্যর্থতাই আগে আসে। কলম্বোর রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে কাল শ্রীলঙ্কার ২৪৪ রানের জবাবটা ভালোভাবেই দিতে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এক পর্যায়ে তারা ভেঙে পড়ল তাসের ঘরের মতো। মাত্র ৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে মুহূর্তে বাংলাদেশ ছিটকে যায় ম্যাচ থেকে। শেষ পর্যন্ত ১৬৭ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচ হারে ৭৭ রানে।

নাজমুল হোসেনের রানআউটের পর টপাটপ উইকেট পড়ে যাচ্ছিল। ফিরে যান থিতু ব্যাটসম্যান ওপেনার তানজিদ হাসানও। তাসকিনের দৃষ্টিতে তখনই আতঙ্ক পেয়ে বসে সবাইকে এবং সে আতঙ্ক থেকেই বিপর্যয়, ‘দুই জন সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়ায় কিছুটা আতঙ্ক তো ছড়িয়েছেই। তামিম (তানজিদ) আউটের পর আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এরপর যে আউটগুলো হয়েছে, কিছুটা অপ্রত্যাশিত ছিল। যেভাবে আউট হয়েছি, এতটা বাজে দল আমরা নই। সবারই সামর্থ্য আছে। কিন্তু ওই বিপর্যয়টার জন্যই হেরে গেলাম।’

১ উইকেটে ১০০ রান করেও বাংলাদেশ শেষ ৯ উইকেট হারিয়েছে ৬৭ রানে। তানজিদের ৬১ বলে ৬২ রানের পর মিডল অর্ডারে জাকের আলীর ৬৪ বলে ৫১ রানের ইনিংসেও লক্ষ্যের কাছাকাছি যেতে পারেনি বাংলাদেশ। দল ভালো ব্যাটিং করেনি স্বীকার করেও তাসকিনের আফসোস, ‘আমাদের শুরুটা ভালো ছিল। কিন্তু এরপর যেটা হয়েছে, ভালো হয়নি। জাকের দারুণ ব্যটিং করেছে। ওর সঙ্গে আরও ব্যাটসম্যান থাকলে আমরা জিততে পারতাম। ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি, এটা স্বীকার করতেই হবে। ২–৩ জনের ব্যটিং দেখে মনে হয়নি উইকেট বাজে ছিল। আমাদের ব্যর্থতা আছে।’

পায়ের চোট কাটিয়ে প্রায় চার মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই যে বোলিং করেছেন, তাতে সন্তুষ্টই হওয়ার কথা তাসকিনের। কিন্তু দল হেরে গেলে আসলে কোনো কিছুতেই সন্তুষ্টি আসে না। নিজের বোলিং নিয়ে বলতে গিয়েও তাই কণ্ঠে হতাশা, ‘ভালো বল করেছি, আরও ভালো করা যেত। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভালো শুরুর পরও ৫ রানে ৭ উইকেট হারানো অপ্রত্যাশিত। এটা হওয়া ঠিক হয়নি।’

প্রেমাদাসার উইকেটে পরে ব্যাট করা দলের হারের দৃষ্টান্ত বেশি। উইকেট এখানে স্পিনারদের বন্ধু হয়ে ওঠে। তবে কাল নিজেদের বাজে পারফরম্যান্সের জন্য সেসবকে অজুহাত করেননি তাসকিন, ‘এখানে লো স্কোরিং ম্যাচ হয় বেশি। পরে ব্যাট করা দলের হারার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তারপরও ম্যাচটা আমাদের হাতেই ছিল।’

শুরুতে উইকেট হারিয়েও শ্রীলঙ্কার ইনিংস যেভাবে এগোচ্ছিল, তাতে তাদের রানটা আরও বেশি হওয়াও অস্বাভাবিক ছিল না। সেটি যে হয়নি, তার জন্য তাসকিন কৃতিত্ব দিচ্ছেন বোলারদের, ‘ওদের যে অবস্থা ছিল, তার চেয়ে ৩০–৪০ রান কমে অলআউট করতে পেরেছি।’ এরপরই আবার সেই হতাশা, ‘আশা করছিলাম ৫–৭ ওভার আগেই জিতে যাব। ওই বিপর্যয়টা বড় ক্ষতি করেছে। খুবই দুঃখজনক।’

ক্রিকেটারদের হতাশার দিনে দেশবাসীকে সুখবর দিয়েছে নারী ফুটবল দল। ইয়াঙ্গুনে মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে এএফসি নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে। তাদের অভিনন্দন জানিয়ে তাসকিন বলেছেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশি। যেকোনো খেলায়ই যখন লাল–সবুজ থাকে, তখন আমরা সবাই বাংলাদেশ। তাদের জন্য শুভকামনা। আমরাও আশা করি ভালো কিছু করব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট হ র র জন য আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বিআরটিএর নতুন নির্দেশনা

মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, সদর দপ্তরের অনুমোদন ছাড়া আমদানিকৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন না করার জন্য সব সার্কেল অফিসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শীতাংশু শেখ বিশ্বাসের সই করা নির্দেশনায় এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে কিছু কিছু অসাধু মোটরসাইকেল আমদানিকারক সেমি নকড ডাউন (এসকেডি) বা কমপ্লিটলি নকড ডাউন (সিকেডি) অবস্থায় মোটরসাইকেল আমদানি করে তার আমদানিসংক্রান্ত কাগজপত্র জালিয়াতি করে কমপ্লিটলি বিল্ড ইউনিট (সিবিইউ) হিসেবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করছে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ লঞ্চ হলো সিএফ মটোর ৩ বাইক

বাইক ডেলিভারি নেওয়ার আগেই এগুলো দেখে নিন, নইলে ঠকবেন

এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১৬৫ সিসির বেশি সিসি সম্পন্ন মোটরসাইকেলকে ১৬৫ সিসি, বা তার চেয়ে কম সিসিবিশিষ্ট মোটরসাইকেল হিসেবে ঘোষণা করে কাস্টমস থেকে ছাড় করা হচ্ছে এবং বিআরটিএ থেকে রেজিস্ট্রেশনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন বন্ধে বিআরটিএ সদর কার্যালয় থেকে মোটরসাইকেলের সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সিবিইউ বা এসকেডি অবস্থায় আমদানি করা মোটরসাইকেলগুলোর চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বরের তালিকা অনুমোদন ও বিআরটিএ আইএস এ আপলোড করা হবে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সার্কেল অফিসগুলো রেজিস্ট্রেশন দেবে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়, তাই আগামী ৩১ জুলাইয়ের পর থেকে সিবিইউ/এসকেডি অবস্থায় আমদানি করা সব মোটরসাইকেলের চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বরের তালিকা অনুমোদন ছাড়া মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

এ বিষয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যানে অনুমোদন রয়েছে। এটির ব্যত্যয় ঘটলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ