জুলাই বিপ্লবে ঘরে থাকা ব্যক্তিরা কখনোই জনগণের আনন্দের ভাষা বুঝবে না: বাঁধন
Published: 2nd, July 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। কিন্তু সাম্প্রতি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নারী নির্যাতন, ধর্ষণসহ নানা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন এই অভিনেত্রী। এজন্য তাকে কটু কথাও শুনতে হয়েছে। তার মতে, বিপ্লবের দিন যারা রাজপথে ছিল না তারা কখনই জনগণের ভেতরের ভাষা বুঝতে পারবে না।
বুধবার সকালে ফেসবুকে বাঁধন লিখেছেন, ‘যারা জুলাই বিপ্লবকে ভুল বলে, তাদের জন্য আমার দুঃখ হয়। সেই মুহূর্তে সেটাই ছিল জেগে ওঠার সঠিক সময়। বলা যায়, সময়ের প্রয়োজনে জেগে ওঠা। বহুসংখ্যক মানুষ যে পরিমাণ বিচারহীনতার মুখোমুখি হচ্ছিল, তা মানবিকভাবে ভেঙে পড়ার পর্যায়ে পৌঁছেছিল। আর একটা কথা, সরকার রাতারাতি ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠে ছিল না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে মানুষের নৈতিক দাবি ও কথা বলার অধিকার কেড়ে নেয়। এখানে আর কোনো উপায় ছিল না।’
বাঁধন লিখেছেন, ‘বিপ্লবের দিন যারা রাস্তায় ছিল না, তারা কখনোই জনগণের ভেতরের ভাষা বুঝতে পারবে না। সেই মুহূর্তে সে কাপুরুষের মতো দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই আনন্দটি ছিল সত্যিকারের। আমি সেই জয়ের আনন্দ প্রতিটি হৃৎস্পন্দন দিয়ে অনুভব করেছিলাম। রাস্তায় এই ধরনের স্বাধীনতা এবং শক্তি অনুভব করার অভিজ্ঞতা জীবনে একবারই হয়েছিল।’
জুলাই বিপ্লবের পরে কি হয়েছিল এই প্রসঙ্গে টেনে তিনি লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, বিপ্লবের পরে অনেক কিছু ঘটেছিল, এবং সেগুলো সবই সুখকর অনুভূতির ছিল না। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট যে সময়ের প্রয়োজনে জুলাই বিপ্লব সঠিক জিনিস ছিল।’
এদিকে কদিন আগেই কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ধর্ষণ ও নিগ্রহের ঘটনা নিয়েও প্রতিবাদ করেন বাঁধন। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন রেখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘এই দেশে কি আমি নিরাপদ। উত্তরটা সহজ নয়। এখানে বেঁচে থাকার জন্য আমরা জী করি। আমরা সহ্য করি মানিয়ে নেই।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব