বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়াসহ পাঁচ দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। শুক্রবারের (৪ জুলাই) মধ্যে দাবি মানা না হলে শনিবার (৫ জুলাই) থেকে পরিবহন ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে সিলেট শহরের কোর্ট পয়েন্টে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। 

সমাবেশে সিলেটের মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। 

আন্দোলনকারীদের ৫ দাবি হলো— বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়া, ক্রাশার মেশিন ধ্বংসের অভিযান বন্ধ করা, পাথর পরিবহনকারী ট্রাক আটক না করা, চালকদের হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করা এবং সিলেটের জেলা প্রশাসকের অপসারণ।

সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, “শ্রমিক-মালিকদের দাবিগুলো একেবারেই ন্যায্য ও যৌক্তিক। সরকার যদি দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে সিলেটের অর্থনীতি থমকে যাবে।” 

তিনি বলেন, “আমরা পরিবেশের পক্ষে। একইসঙ্গে ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকদেরও ক্ষতি চাই না। তাই, পরিবেশসম্মতভাবে পাথর উত্তোলন শুরুর অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন।”

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং জিরো টলারেন্স নীতির নামে চালানো অভিযান শ্রমিক ও মালিকদের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এসব অনিয়ম বন্ধ না হলে পরিবহন ধর্মঘট অনির্দিষ্টকালের জন্যও ডাকা হতে পারে। এর দায় সরকারকে নিতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে পাথর-সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান।

এর আগে ১৪ জুন প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা তাদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন। 

পরিদর্শন শেষে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না।

অন্যদিকে, অবৈধ পাথর ব্যবসা ঠেকাতে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দ্রুততার সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে থাকা পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই ১৬ জুন থেকে পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন। এ অভিযান সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কোনো না কোনো স্থানে নিয়মিত চলছে। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। 

ঢাকা/নূর/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট পর ব শ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

পলাতক আ.লীগ নেতার মাকে কুপিয়ে স্বর্ণালংকার-টাকা লুট

নোয়াখালীর কবিরহাটে বাড়িতে ঢুকে হোসনে আরা বেগম (৭০) নামের এক নারীকে কুপিয়ে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জগদানন্দ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীর ছেলে মোহাম্মদ কামাল খান উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

মোহাম্মদ কামাল খান স্থানীয়ভাবে কামাল কোম্পানি হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের এই নেতা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে আত্মগোপনে। তাঁর ভাই মাইন উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তাঁর মা বসতঘরে একাই ছিলেন। তিনি স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুর্বৃত্তরা বাড়িতে ঢুকে তাঁর মায়ের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনটি কোপ দেয়। পরে দুটি কান ছিঁড়ে শরীরে থাকা প্রায় চার ভরি স্বর্ণালংকার ও ঘরে বিছানার নিচে রাখা সাড়ে তিন লাখ টাকা লুটে নেয়।

হোসনে আরাকে কিছুক্ষণ পর রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের সামনের কক্ষে অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর নাতি সালমান। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। পরে ওই নারীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হয়। মাইন উদ্দিনের অভিযোগ, এটি নিছক চুরির ঘটনা নয়, এটি দুর্ধর্ষ ডাকাতি।

কবিরহাট থানার ওসি শাহীন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ওই নারী শরীরে সব সময় স্বর্ণালংকার পরতেন। তাদের ধারণা, চুরি করতে আসা দুর্বৃত্তদের চিনে ফেলায় তাঁকে কোপানো হয়। পুলিশ এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে চেষ্টা চালাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ