আরিফুলকে হত্যা করে তারই ২ বন্ধু: পুলিশ
Published: 2nd, July 2025 GMT
পূর্বের কথা কাটাকাটির জেরে সুন্দরগঞ্জের চাকলিয়ার বিলে নিয়ে অটোরিকশা চালক আরিফুল ইসলাম মন্ডলকে (১৭) শ্বাসরোধে হত্যা করেন তারই দুই বন্ধু। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে গাইবান্ধার অতরিক্তি পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শরিফুল ইসলাম জানান।
নিহত অরিফুল ইসলাম মন্ডল সুন্দরগঞ্জ উপজলোর পশ্চিম শান্তিরাম গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোশারফ হোসেন মুশফিক ও শান্ত মিয়া।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এএসপি শরিফুল ইসলাম জানান, আরিফুল গত ২৮ জুন বিকেলে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। পরদিন সকালে পার্শ্ববর্তী সর্বানন্দ ইউনিয়নের চকলিয়ার বিল থেকে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা শহিদুল ইসলাম মন্ডল বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
আরো পড়ুন:
নরসিংদীতে ইউপি কার্যালয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
দুই লাখ টাকায় প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যা: পুলিশ
হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৩০ জুন রাতে অটোরিকশা চালক আরিফুলের বন্ধু মোশারফ হোসেন মুশফিক এবং মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে শান্ত মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুইজন আরিফুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
তিনি আরো জানান, পূর্বের কথা কাটাকাটির জেরে গত ২৮ জুন রাতে মোশারফ হোসেন মুশফিক ও শান্ত মিয়া আরিফুলকে সুন্দরগঞ্জের চাকলিয়ার বিলে নিয়ে যান। সেখানে তারা আরিফুলকে অতিরিক্ত গাঁজা সেবন করান। পরে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে আরিফুলকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে যায় দুই বন্ধু। ঘটনাস্থল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে কাশিমবাজার এলাকায় অটোরিকশা রেখে ব্যাটারি খুলে নিয়ে যায় তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম, ডিএসবির অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ ও কায়সার আলী।
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আস ম স ন দরগঞ জ ফ ল ইসল ম আর ফ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল