ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামিকে তাঁর স্ত্রী ও কন্যার ভরণপোষণ খরচ বাবদ প্রতি মাসে ৪ লাখ রুপি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট। দাম্পত্য নিয়ে বিবাদে শামি ও তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহান আলাদা বসবাস করছেন। আদালতে লড়াই চলছে দুজনের। আইনি লড়াই চলাকালে শামিকে তাঁর স্ত্রী ও কন্যার ভরণপোষণ বাবদ প্রতি মাসে এ পরিমাণ অর্থ দিতে হবে জানিয়েছে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই।

আরও পড়ুনসন্দেহজনক প্যাকেট, নিরাপত্তার স্বার্থে পন্ত–রাহুলদের হোটেলেই থাকতে বলা হয়েছিল৩ ঘণ্টা আগে

কলকাতার আলিপুর আদালত ২০১৮ সালে নির্দেশ দিয়েছিলেন, শামিকে প্রতি মাসে স্ত্রীর জন্য ৫০ হাজার রুপি এবং কন্যার জন্য অতিরিক্ত আরও ৮০ হাজার রুপি করে দিতে হবে। তখন হাসিন কলকাতার এ নিম্ন আদালতে আরও বেশি অর্থ দাবি করেছিলেন। নিজের জন্য ৭ লাখ রুপি ও কন্যার জন্য ৩ লাখ রুপি চেয়েছিলেন। কিন্তু আলিপুর আদালত দাবিটি খারিজ করে ওই রায় দেন। হাসিন তা মানতে না পেরে কলকাতার উচ্চ আদালতে আপিল করেন। এরপর কলকাতার হাইকোর্ট থেকে নতুন এই নির্দেশ দেওয়া হলো।

বিচারক অজয় কুমার মুখার্জি বলেন, হাসিনের ব্যক্তিগত খরচ নির্বাহে দেড় লাখ রুপি এবং কন্যার জন্য আরও আড়াই লাখ রুপি প্রতি মাসে দিতে হবে শামিকে।

আপিলে হাসিনের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে যুক্তি দেখানো হয়, ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার শামির আর্থিক অবস্থা ভালো এবং প্রতি মাসে ভরণপোষণ হিসেবে তিনি আরও বেশি অর্থ দিতে সক্ষম। ২০২১ অর্থবছরে শামির আয়কর রিটার্নের তথ্য অনুযায়ী, তাঁর বার্ষিক আয় প্রায় ৭.

১৯ কোটি রুপি। অর্থাৎ মাসে প্রায় ৬০ লাখ রুপি আয় করেন ভারতের হয়ে চলতি বছর চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জেতা এ পেসার। হাসিন তখন দাবি করেছিলেন, কন্যা ও তাঁর নিজের মিলিয়ে প্রতি মাসে ৬ লাখ রুপির বেশি খরচ হয়।

আরও পড়ুনভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর: এশিয়া কাপ শুরু ৫ সেপ্টেম্বর, ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ ৭ সেপ্টেম্বর৫ ঘণ্টা আগে

সবকিছু শোনার পর কলকাতা হাইকোর্ট হাসিনের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। বিচারক অজয় মুখার্জির ভাষায়, ‘দুই আবেদনকারীর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমার বিবেচনায়, প্রথম আবেদনকারীর (স্ত্রী) জন্য প্রতি মাসে ১,৫০,০০০ রুপি এবং কন্যার জন্য ২,৫০,০০০ রুপি করে প্রদান ন্যায়সংগত হয়।’ আদালত এ কথাও জানিয়েছেন, শামি চাইলে তাঁর কন্যার শিক্ষা এবং অন্যান্য খাতে খরচের জন্য আরও বেশি অর্থও দিতে পারেন।

আলিপুর আদালত কিসের ভিত্তিতে শামিকে প্রতি মাসে খুব অল্প পরিমাণ অর্থ ভরণপোষণ হিসেবে দেওয়ার রায় দিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতার হাইকোর্ট। সংশোধিত এ রায়ের আগের রায় সংশোধন করার কথাও বলা হয়। যুক্তি হিসেবে শামির অর্থনৈতিক সামর্থ্য এবং হাসিনের আর বিয়ে না করা ও সন্তান নিয়ে আলাদা থাকার কথা বলা হয়েছে।

ভারতের হয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছেন শামি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলক ত র

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনায় ৮ কুকুরছানা পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগ

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার একটি পুকুর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় আটটি কুকুরছানার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, ছানাগুলোকে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত করে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান।

এলাকাবাসীর ধারণা, রবিবার (৩০ নভেম্বর) রাতের কোনো এক সময় কুকুরছানাগুলো পানিতে ফেলা হয়। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ছানাগুলোর মরদেহ পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন:

লাখাইয়ে কুকুরের কামড়ে নারী-শিশুসহ আহত ১১

খুবিতে কুকুরের উৎপাত নিয়ন্ত্রণে বন্ধ্যাত্বকরণের উদ্যোগ

সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের ভেতরে ইউএনওর বাসভবনের সামনে মাটিতে পড়ে আছে আটটি কুকুরছানার নিথর দেহ। পাশেই ছানাগুলোর শরীরের গন্ধ শুঁকে তাদের স্পন্দন বোঝার চেষ্টা করছিল মা কুকুর। ছানাদের সাড়া না পেয়ে আর্তনাদ করছিল কুকুরটি। মা কুকুরের এমন কান্না দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপজেলা চত্বরে আসা অনেকে। এমন অমানবিক কাজকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না কেউ।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একটি কোনায় থাকত এই মা কুকুর। বিশ্বস্ত হওয়ায় সবাই কুকুরটিকে খুব ভালবাসে। নাম রাখা হয় টম। গত এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা প্রসব করে। সোমবার সকাল থেকে ছানাগুলো দেখতে না পেয়ে ছুটাছুটি করতে দেখা যায় তাকে। পরে টমের ছানাগুলো বস্তাবন্দি অবস্থায় পুকুর থেকে উদ্ধার হয়। দুপুরের পর মৃত কুকুর ছানাগুলোকে ইউএনওর বাসভবনের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ও তার স্ত্রী আটটি কুকুরছানাকে বস্তার মধ্যে বেঁধে গত রবিবার রাতের কোনো এক সময় ফেলে দেন উপজেলা পরিষদের পুকুরে। সোমবার সকালে পাওয়া যায় কুকুরছানাগুলোর মরদেহ। 

স্থানীয় বাসিন্দা সাগর হোসেন রনি বলেন, “নিঃসন্দেহে কুকুরছানাগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। যে নিরীহ পশুকে হত্যা করতে পারে, সে মানুষকেও হত্যা করতে পারে। কুকুরছনাকে এভাবে নির্মমভাবে হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবি করছি।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত হাসানুর রহমান নয়ন বলেন, ‘আমি এ ছানাগুলো হত্যা করিনি। আমার স্ত্রী এই কাজ করেছেন। আমি ঘটনা জানতে পেরে স্ত্রীকে অনেক বকাবকি করেছি।”

ঈশ্বরদীর ইউএনও মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ