এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ বাড়ছে
Published: 15th, May 2025 GMT
দেশে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিং।শহরের চেয়ে গ্রামীণ এলাকায় এই ব্যাংকিং সেবা বেশি প্রসারিত হচ্ছে। এছাড়া বাড়ছে আমানত।অন্যদিকে ঋণ বিতরণের হারও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের মার্চ শেষে (জানুয়ারি থেকে মার্চ, ২৫ পর্যন্ত) প্রথম প্রান্তিকে দেশে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৯৬৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগের বছর একই সময়ে আমানতের পরিমাণ ছিল ৩৬ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। গত প্রান্তিকে ২০২৪ সালে ডিসেম্বর শেষে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। বছরের ব্যবধানে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত বেড়েছে ১৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ।আর তিন মাসের ব্যবধানে আমানত বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এদিকে, এজেন্ট ব্যাংকের আমানত বাড়ার পাশাপাশি ঋণ বিতরণের পরিমাণও বেড়েছে।চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ২৬ হাজার ৬৩৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা।আগের বছর একই সময়ে ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৪৮২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে ঋণ বিতরণের পরিমাণ বেড়েছে ৬১ শতাংশের বেশি। গত ডিসেম্বর শেষে ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল ২৪ হাজার ২৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।তিন মাসের ব্যবধানে ঋণ বিতরণের হার বেড়েছে ১০ দশমকি ৮৬ শতাংশ।
আরো পড়ুন:
সোনালী ব্যাংক চালু করল নিজস্ব পেমেন্ট সুইচ
বিদেশে চিকিৎসা খরচ পাঠানোর সীমা বাড়ল
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের পরিমাণও দিন দিন বাড়ছে।চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে এক লাখ ৮১ হাজার ২০৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।আগের বছর একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক লাখ ৪৯ হাজার ৯১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। গত বছর ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল এক লাখ ৭৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ বেড়েছে ২০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তিন মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ।
চলতি বছর প্রথম প্রান্তিকে নারী গ্রাহকদের হিসাব দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২১ লাখ ৮৮ হাজার ৪২৪টি। যা মোট হিসাবের ৪৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে নারী গ্রাহকদের হিসাব সংখ্যা ছিল এক কোটি ১০ লাখ ৬০ হাজার ৮৭৯টি।
গত মার্চ মাস শেষে দেশে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মোট হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৬ লাখ ৭১ হাজার ৪২২। এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকার গ্রাহদের হিসাব সংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৩টি। যা মোট হিসাবের ৮৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে দেশের ৩১টি ব্যাংকের ১৫ হাজার ৮৩৮টি এজেন্ট এবং ২১ হাজার ২৩টি আউটলেট নিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং কাজ করছে।
উল্লেখ্য, এজেন্টের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে ২০১৪ সালে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের যাত্রা শুরু। এরপর থেকে দিন দিন এর পরিধি বাড়ছে। বর্তমানে ৩১টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ২টি সরকারি, ২১টি বেসরকারি এবং ৮টি ইসলামী ধারার ব্যাংক।এসব প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা জমা, ঋণ বিতরণ, পরিষেবা বিল পরিশোধ, রেমিট্যান্স গ্রহণসহ নানা ধরনের সেবা দিচ্ছে।
ঢাকা/এনএফ/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম প র ন ত ক ঋণ ব তরণ র র ব যবধ ন র পর ম ণ দশম ক বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জেনে জি এম কাদের কাউন্সিল স্থগিত করেন
জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরবিরোধী অংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, গত ২০ মে দলের প্রেসিডিয়াম সভায় ২৮ জুন জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেনে জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। পরে আদালতের নির্দেশে সদস্যপদ ফিরে পেয়ে তাঁরা সম্মেলন আয়োজন করেন। তাই জি এম কাদের আর আইনত চেয়ারম্যান নন।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই অভিযোগ করেন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে দাবি করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আদালতে যাই, আদালত আমাদের সদস্যপদ বহাল করেন ও কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। আমরা রায় পেয়েছি ৩০ জুলাই। কাউন্সিল হয় ৯ আগস্ট। এই মধ্যবর্তী সময়ে জি এম কাদের আদালতে যাননি। এখন তিনি বাইরে চিল্লাচিল্লি করছেন। সুতরাং বিষয়টি আপনাদের বুঝতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা কাউন্সিল করেছি।’
সম্মেলন আয়োজনে কোনো তড়িঘড়ি বা লুকোচুরি করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। তিনি বলেন, অনৈতিকভাবে জি এম কাদের যে সম্মেলন স্থগিত করেছিলেন, সেই সম্মেলন তাঁরা আবার আয়োজন করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙ্গল’ এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নম্বর–১২ তাঁরা ব্যবহার করবেন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁরা সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেবেন।
জি এম কাদের সম্মেলনের ট্রেন মিস করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন কাদেরবিরোধী অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, কাউন্সিল হয়ে গেছে। এখন আর কোনো আকুতির সুযোগ নেই। তাঁরা পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস ব্যবহার করছেন, এটা অন্যায় করছেন। শিগগির এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাদেরবিরোধীদের কাউন্সিলে জি এম কাদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ৯ আগস্ট কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। আগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। তাই আইনত জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান পদের ভিত্তি নেই। তাঁরা মিলেমিশে কাজ করার জন্য জি এম কাদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির কাদেরবিরোধী অংশের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের সর্বাত্মক সংস্কারে কাজ করেছিলেন। বর্তমানে যে ক্রান্তিকাল চলছে, তার উত্তরণে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দরকার।
আরও পড়ুননির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি চেয়ে আনিসুল-হাওলাদার কমিটির চিঠি১৩ আগস্ট ২০২৫সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন, শফিকুল ইসলাম, নাজমা আক্তার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম, মাসরুর মাওলা, সাইদুর রহমান, ইয়াহইয়া চৌধুরী, সরদার শাহজাহান, নুরুল ইসলাম মিলন, লিয়াকত হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, হারুন আর রশিদ, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, মো. ইয়াকুব হোসেন, শেখ আলমগীর হোসেন, নীগার সুলতানা, মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, নাসির উদ্দিন সরকার, হাফেজ মাহমুদুর রহমান, সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, শারমিন পারভীন লিজা, মিজানুর রহমান, তাসলিমা আকবর রুনা, শারমিন আকতার, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
আরও পড়ুনজাতীয় পার্টির নিয়ন্ত্রণ নিতে তৎপর আনিসুল, ঠেকাতে সক্রিয় জি এম কাদের১৩ আগস্ট ২০২৫