এনসিপির যুব উইং ‘যুবশক্তি’র আত্মপ্রকাশ আজ
Published: 16th, May 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে তরুণদের গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব উইং করা হচ্ছে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে জাতীয় যুবশক্তি। আজ শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে শহীদ আবরার ফাহাদ অ্যাভিনিউতে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ হবে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী এ ঘোষণা দেন। এ সময় যুব উইংয়ের সমন্বয়কারী তারিকুল ইসলাম, এস এম শাহরিয়ার, তুহিন মাহমুদ, নাহিদা বুশরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘২৮ ফেব্রুয়ারি এনসিপি আত্মপ্রকাশের পর আমরা প্রত্যেক জেলার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। কীভাবে যুব সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করতে পারি, সে বিষয়ে মতামত নিয়েছি। গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে সংগঠন যেভাবে জুলাই অভ্যুত্থানে বড় আকারে নেতৃত্ব দিয়েছে, তেমনি জাতীয় যুবশক্তি বাংলাদেশে একটি নতুন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা ১০০-১৫০ বছরে একবার আসে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৪০ শতাংশ তরুণ। বাংলাদেশের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে চাইলে এই তরুণ শক্তিকে কাজে লাগানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই শক্তিকে কাজে লাগাতে হলে তরুণদেরকে সংগঠিত করতে হবে।
নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী আরও বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটি বড় কারণ ছিল তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তাদের প্রবেশ কম ছিল। তারা মাঠে নেমে এসে এই বৈষম্য ভেঙে দিয়েছে। তরুণদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তরুণদের নিয়ে আসতে জাতীয় যুবশক্তি কাজ করবে।
এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক (যুব) তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাতচল্লিশের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে যুব সমাজ অগ্রভাগে ছিল। প্রবল দেশপ্রেম থাকা সত্ত্বেও তরুণদের অধিকাংশই রাজনীতিতে জড়ানো ঝুঁকিপূর্ণ ও নিষ্ফল মনে করে। তাদের কথা বলার ও শোনার সহজলভ্য ও ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম নেই। আমরা চাই স্বাধীন মত প্রকাশ ও নৈতিক আদর্শে উজ্জীবিত যুব সমাজ তাদের কাঙ্ক্ষিত রাজনীতি করতে পারবে।’
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারিতে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের হাত ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনকে সম্প্রসারিত এবং ছড়িয়ে দিতে এনসিপি ইতোমধ্যে আরও বেশ কয়েকটি উইং গঠন করেছে। এরমধ্যে রয়েছে- এনসিপি স্বাস্থ্য উইং, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী উইং, নারী উইং, শ্রমিক উইং, আইনজীবী উইং ইত্যাদি। উইংগুলো আত্মপ্রকাশ করতে প্রস্তুতি কমিটি গঠন করেছে তারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প য বশক ত প রক শ স গঠন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।