গুলিস্তানে ‘জাতীয় যুবশক্তির’ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মিছিল নিয়ে আসছেন নেতা–কর্মীরা
Published: 16th, May 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তির’ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। রাজধানীর গুলিস্তানে এই অনুষ্ঠানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসছেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
আজ শুক্রবার বিকেলে গুলিস্তানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের (এখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ) পরিত্যক্ত কার্যালয়ের সামনে যুবশক্তির আত্মপ্রকাশের অনুষ্ঠান এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা অংশ নেবেন।
অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যুবশক্তির নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলের সামনের সড়কে জড়ো হচ্ছেন। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি বাইরের বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরাও এই অনুষ্ঠানে আসতে শুরু করেছেন। অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের কেউ কেউ এসেছেন। মঞ্চ থেকে মাইকে স্লোগান ও বক্তব্য চলছে। বেলা সোয়া তিনটায় মঞ্চ থেকে আওয়ামী লীগবিরোধী ছড়া আবৃত্তি করা হচ্ছিল।
অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে যুবশক্তির বৈশিষ্ট্য নিয়ে নানা বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে নির্মিত একটি ডকুমেন্টারিও (তথ্যচিত্র) দেখানো হয়েছে। মঞ্চ থেকে ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘বায়ান্নর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ প্রভৃতি স্লোগানের পাশাপাশি যুবশক্তির সাংগঠনিক স্লোগানও দেওয়া হচ্ছে৷ স্লোগানটি হলো ‘বাংলার শক্তি যুব শক্তি, যুব শক্তি জনতার মুক্তি’।
বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত মঞ্চ থেকে এসব কার্যক্রম চলছিল আর খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা আসছিলেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তির’ আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকেরা। আজ শুক্রবার বিকেলে, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, গুলিস্তান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য বশক ত র অন ষ ঠ ন কর ম র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার শুধু সাংবিধানিক জায়গায় আটকে আছে: হোসেন জিল্লুর রহমান
ত্বত্তাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সংস্কার টপ প্রায়োরিটি হওয়া দরকার। সংস্কার আলোচনা শুধু সাংবিধানিক জায়গায় আটকে আছে। জনগণের প্রাত্যহিক জীবন নির্বিঘ্ন করার বিষয়গুলো বিশেষত পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট এক পাশে ফেলে দেওয়া আছে, জনপ্রশাসন রিপোর্টটাও একই।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে 'গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সিভিল মিলিটারি সম্পর্ক' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘ইউনিটি ফর বাংলাদেশ' সংগঠনের আয়োজনে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবির, লেখক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চৌধুরী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দর্শন বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ নিজার আলম।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সংস্কার টপ প্রায়োরিটি হওয়া দরকার। এটার পলিটিক্যাল ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। কক্সবাজার একজন কাউন্সিলরকে মেরে ফেলছে, অন ক্যামেরায় পাওয়া যাচ্ছে। ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির রিপোর্ট হবে ইন্টেলিজেন্ট কিন্তু অনেক রিপোর্ট শুধুমাত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ইন্টেলিজেন্ট নয়। কাজে এটা সংস্কার হতে হবে। আমার মনে হয়, সংস্কার আর্মির নেতৃত্বেও এটি হতে পারে। এটা অবশ্যই হতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এটা রাষ্ট্রের জন্য জরুরি। সক্ষম রাষ্ট্রের জন্য চারটি বিষয় জরুরি। সার্বভৌমত্ব বলতে আমরা বুঝি জিওগ্রাফিক, এটার অন্যতম হলো নীতি সার্বভৌমত্ব। স্বৈরাচারের সময় দেখেছি নীতি নেওয়া হচ্ছে, তবে সার্বভৌমভাবে নেওয়া হচ্ছে না। পলিটিক্যাল সার্বভৌমত্ব আছে তবে ভেতরে অন্তঃসারশূন্য।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে হবে। সিভিল মিলিটারি সম্পর্ক তার একটি অংশ। রিফর্ম নিয়ে একধরনের সাংবিধানিক বিষয়গুলোর আলোচনাই প্রাধান্য পাচ্ছে। কিন্তু জনগণের প্রাত্যহিক জীবনের বিশেষ করে পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট পাশে ফেলে দেওয়া আছে। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনায় রিপোর্টটাই নাই। প্রশাসন সংস্কারের রিপোর্টটাই একইভাবে পড়ে আছে।
সাংবিধানিক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমতার ভারসাম্য জরুরি মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নতি, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের প্রয়োজন যদি মেটানো না যায়, আইনশৃংখলা/নিরাপত্তার বিষয়গুলো যদি মেটানো না যায়, তাহলে আজাদী মিথ্যা হয়ে উঠতে পারে এমন মনে হবে। এদিকে নজর দেওয়া দরকার।
নূরুল কবির বলেন, ‘সামরিক বাহিনীকে রাজনীতিকরণ করা ঠিক না' এটা হচ্ছে সবচেয়ে বেঠিক কথা। সেনাবাহিনী যদি রাজনীতি না বুঝে তাহলে তারা দেশের ক্রান্তিলগ্নে সিভিলিয়ানদের সাথে একযোগে কাজ করতে পারবে না। আপনারা রাজনীতিকরণ ও দলীয়করণকে এক করে মিলাবেন না।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য একটি ভালো সেনাবাহিনী দরকার কিন্তু সেনাশাসন দরকার নেই। সিভিল এবং মিলিটারি সম্পর্ক একটি বাইনারি অপজিশন। সেনাপ্রধান যখন এরশাদকে বলে মিলিটারি আর আপনার সঙ্গে নেই, তখনই এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। আবার গত ৩ আগস্ট যখন বর্তমান সেনাপ্রধান জুনিয়র অফিসারদের দাবির মুখে হাসিনাকে সেনাবাহিনীর অপারগতার কথা জানিয়ে দেন, তখনই হাসিনার পতন তরান্বিত হয়। ২০১৪ সাল নির্বাচন পরবর্তী সময়েই যদি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অসন্তোষ প্রকাশ করতো, তাহলে জুলাইয়ে দেড় হাজার মানুষের প্রাণ দেওয়া লাগতো না।
সৈয়দ নিজার আলম বলেন, মিলিটারি সম্পর্কে একটি বাইনারি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ এ সম্পর্ক দ্বান্দ্বিক হওয়ার কথা না। কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক থেকে শুরু করে মিলিটারি সবাই আমরা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রজন। তাই সবাইকে এক কাতারে থেকে দেশের সেবা প্রদান করতে হবে।