জিতলেই সিরিজ, রাজশাহীতে আজ তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে সমীকরণ ছিল এমনই। এই ম্যাচেই ২২৫ রানের তুলনামূলক ছোট পুঁজি নিয়েও বাংলাদেশ দেখাল দারুণ বোলিং নৈপুণ্য। প্রতিপক্ষকে ৩৪ রানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় আকবর আলীর দল।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুটা ছিল হতাশাজনক। ইনিংসের শুরুতেই ফিরে যান ওপেনার রিজওয়ান। এরপর একের পর এক উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৮ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে দল।

এই কঠিন সময়ে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়েন মাহফুজুর রহমান রাব্বি ও রাকিবুল হাসান। অষ্টম উইকেটে গড়েন মূল্যবান ৮৪ রানের জুটি। রাব্বি করেন ৫৮ রান, রাকিবুল খেলেন ৪২ রানের কার্যকর ইনিংস। তাদের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ অলআউট হওয়ার আগে পৌঁছে যায় ২২৫ রানে।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় প্রোটিয়ারা। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। সফরকারীদের ধসিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন রাকিবুল হাসান, যিনি একাই নিয়েছেন ৪টি উইকেট। রাব্বি ও ওয়াসি সিদ্দিকী নেন ২টি করে উইকেট। প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন তায়ান ভ্যান ভুরেন। তবে তার ইনিংস ম্যাচ বাঁচাতে যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৯১ রানেই অলআউট হয় সফরকারীরা।

ফলে ৩৪ রানের জয় নিয়ে সিরিজ জয়ের উৎসবে মাতে বাংলাদেশ ইমার্জিং দল। ম্যাচের সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়ে রাব্বি ও রাকিবুল রাখলেন দারুণ ছাপ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

আইসিসির এপ্রিলের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দারুণ পারফরম্যান্স করায় আইসিসির এপ্রিল মাসের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও নিউজিল্যান্ডের পেসার বেন শিয়ার্সকে পেছনে ফেলে মিরাজের এপ্রিল মাসের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার খবরটি আজ আইসিসির ওয়েবসাইটে জানানো হয়।

সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে আইসিসির মাসসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হলেন মিরাজ। ক্যারিয়ারে এই প্রথম আইসিসির মাসসেরা হলেন ২৭ বছর বয়সী এই স্পিন অলরাউন্ডার।

গত এপ্রিলে সিলেট ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ ১–১ ব্যবধানে ড্র করে বাংলাদেশ। এই দুই টেস্টে ৩ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৮.৬৬ গড়ে এক সেঞ্চুরিসহ মোট ১১৬ রান করেন মিরাজ। ৪ ইনিংসে বোলিং করে সর্বোচ্চ ১৫ উইকেট নেন। সিলেটে প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জিতলেও সফরকারিদের দুই ইনিংসেই ৫টি করে উইকেট নেন মিরাজ। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে অলআউট হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন। সেই টেস্টে জিম্বাবুয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১ রানে অলআউট হওয়ার পথে ৫ উইকেট নেন মিরাজ। ইনিংস ও ১০৬ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

এপ্রিল মাসের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পর আইসিসিকে মিরাজ বলেছেন, ‘আইসিসির মাসসেরা হওয়া অবিশ্বাস্য সম্মান। যেকোনো ক্রিকেটারের জন্য আইসিসির পুরস্কারই সর্বোচ্চ, আর বৈশ্বিকভাবে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়াটা আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। এসব মুহূর্ত আমার ক্যারিয়ারের গতিপথকে মনে করিয়ে দেয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে ২০১৬ অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড় হওয়া ছিল আমার জন্য অনেক বড় প্রেরণা। এই পুরস্কারটিও তেমনই বিশেষ কিছু।’

মিরাজ আরও বলেছেন, ‘আইসিসির এমন স্বীকৃতি আমাকে দেশের জন্য আরও ভালো করার প্রেরণা। সতীর্থ, কোচ ও ভক্তদের ধন্যবাদ জানাই—এই পুরস্কার তাদেরও।’ বাংলাদেশের পুরুষ ক্রিকেটারদের মধ্যে মিরাজের আগে সর্বশেষ আইসিসির মাসসেরা হয়েছেন সাকিব, ২০২৩ সালের মার্চে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টের এই সিরিজেই বল হাতে ঝলক দেখান মুজারাবানি। ৬ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এ পেসার দুই টেস্ট মিলিয়ে নেন ১০ উইকেট। এর ৯টিই সিলেটে, যা চার বছর পর জিম্বাবুয়েকে টেস্ট জেতাতে সহায়তা করে। সিলেট টেস্টে সেরা খেলোয়াড়ও হন মুজারাবানি।

নিউজিল্যান্ডের পেসার সিয়ার্স গত মাসে আলো ছড়িয়েছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। নিজেদের মাঠে বাবর–রিজওয়ানদের ৩–০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করে কিউইরা।সিয়ার্স প্রথম ওয়ানডেতে খেলেননি। শেষ দুই ওয়ানডেতে সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগান, পাঁচটি–পাঁচটি করে নেন ১০ উইকেট।

২০২১ সাল থেকে মাসসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দিচ্ছে আইসিসি। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির একটি স্বাধীন ভোটিং একাডেমি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করেন। প্যানেলে আছেন সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার ও ক্রীড়া সাংবাদিক। এ ছাড়া দর্শকেরাও আইসিসির ওয়েবসাইটে গিয়ে মনোনীত তিন খেলোয়াড়ের একজনকে ভোট দিতে পারেন।

নারী–পুরুষ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের চার ক্রিকেটার চারবার আইসিসির মাসসেরা হলেন। ২০২১ সালের মে মাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পুরস্কার জেতেন মুশফিকুর রহিম। সাকিব জিতেছেন দুবার—২০২১ সালের জুলাইয়ের পর ২০২৩ সালের মার্চে। একমাত্র বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে নাহিদা আক্তার আইসিসির মাসসেরা স্বীকৃতি পেয়েছেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খালেদের ৬ উইকেট, ২৫৬ রানে অলআউট নিউজিল্যান্ড ‘এ’
  • আইসিসির এপ্রিলের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ