ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং আজ শুক্রবার বলেন, ‘মাত্র ২৩ মিনিটেই পাকিস্তানকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। নাশতা–পানি খেতে যে সময় লাগে, সেই সময়ের মধ্যেই সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি আমরা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছি।’

গুজরাটের ভূজ বিমানঘাঁটিতে গিয়ে আজ রাজনাথ বলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ ছিল ভারতীয় শক্তি ও ক্ষমতার ছোট্ট একটা ট্রেলার। গোটা পিকচার সময় হলে দেখানো হবে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভারতে তৈরি ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্রের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘ভারতে একটা পরিচিত কথা আছে, দিনের আকাশে তারা দেখানো। ভারতের তৈরি ব্রহ্মস পাকিস্তানিদের দেখিয়ে দিয়েছে, রাতের অন্ধকারে দিনের ঔজ্জ্বল্য কেমন লাগে।’

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের পর ভারতীয় নেতারা নিয়ম করে বিভিন্ন সেনাঘাঁটিতে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গিয়েছেন পাঞ্জাবের আদমপুর বিমানঘাঁটিতে। রাজনাথ সিং গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়েছিলেন কাশ্মীরের বাদামিবাগ সেনাছাউনিতে, আজ গেলেন ভূজে।

শ্রীনগরে গিয়ে রাজনাথ সিং প্রশ্ন তুলেছিলেন, এই রকম একটা দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্রসম্ভার নিরাপদ কি না। তাঁর প্রস্তাব ছিল, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রসম্ভার জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএএইএ–এর নজরদারিতে রাখা উচিত।

আজ ভূজে গিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) পাকিস্তানকে যে ১০০ কোটি ডলার ঋণ মঞ্জুর করেছে, তা পুনর্বিবেচনা করা দরকার। রাজনাথের অভিযোগ, এই ঋণের টাকায় পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোকে সাহায্য করবে। কাজেই এই ঋণ দেওয়া ঠিক হচ্ছে কি না, তা বিবেচনা করে দেখা দরকার।

৯ মে ওয়াশিংটনে আইএমএফের ঋণসংক্রান্ত বোর্ডের বৈঠকে ভারত তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। বলেছিল, ঋণের শর্ত পাকিস্তান মানতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই নতুন করে তাদের ঋণ দেওয়া ঠিক হবে না।

ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে রাজনাথ অভিযোগ করেন, ওই টাকার একটা বড় অংশ পাকিস্তান নষ্ট হয়ে যাওয়া সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি আবার গড়ে তোলার কাজে খরচ করবে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পার্থক্য কী, তা জানিয়ে রাজনাথ বলেন, পাকিস্তান বারবার আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেয়। আর ভারত আইএমএফকে তহবিল গড়তে সাহায্য করে, যাতে দরিদ্র দেশগুলো ঋণ পেতে পারে।

পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে অপারেশন সিঁদুর পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি বিরোধীরা জানিয়ে আসছে। সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিও দাবি করেছে। দুই দাবির কোনোটিই এখনো মানা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী দুটি সর্বদলীয় বৈঠকের একটিতেও হাজির ছিলেন না। সংসদের অধিবেশন ডাকা নিয়েও কোনো মন্তব্য করেননি। তবে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন।

এ পরিস্থিতিতে দল হিসেবে বিজেপি ও সরকার কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য প্রচার করতে দেশব্যাপী তেরঙা যাত্রা শুরু করা হয়েছে। ১১ দিন ধরে এই যাত্রা চলবে। পাশাপাশি সরকার ঠিক করেছে, পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক স্তরে আরও কোণঠাসা করতে বিভিন্ন দেশে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো হবে। সংসদীয় দলের সদস্যদের নিয়ে এসব প্রতিনিধিদল গড়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন ত র র জন থ

এছাড়াও পড়ুন:

এনসিপির সঙ্গে আইএমএফের বৈঠক

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এনসিপির সঙ্গে আইএমএ এর মিশন টিমের সঙ্গে বৈঠক হয়।

আরো পড়ুন:

এনসিপিকে নিয়ে প্রথম বই ‘এনসিপির যাত্রা`

এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, যুবক আটক

বৈঠকে এনসিপি প্রতিনিধি দল দেশের সংকটময় সময়ে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান এবং জরুরি সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার প্রতি আইএমএফ-এর ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে।

বৈঠকে উপস্থিত (আইএমএফ) বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রাজস্ব আহরণ, রাজস্ব–জিডিপি অনুপাত, ডিস্ট্রেসড অ্যাসেট এবং যুব কর্মসংস্থান বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

এনসিপি প্রতিনিধিরা এসব চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে বলেন, যে তারা রাজস্ব ডিজিটালাইজেশন, আর্থিক খাতের চলমান সংস্কারকে সমর্থন এবং সংস্কার বাস্তবায়নের ধীরগতির বিষয়ে উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সভায় আরো আলোচ্য ছিল পূর্ববর্তী সরকারের ‘ক্লেপ্টোক্রেসি’ কীভাবে শুরু হয়েছিল, জাতীয় অর্থনীতি ও প্রশাসনে এর প্রভাব কী ছিল এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্নীতিকে রোধ করতে কী ধরনের কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে ছিল, অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি কমানো, সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং অন্তর্বর্তী সরকার থেকে নির্বাচিত সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তর। উভয়পক্ষই আশা প্রকাশ করে যে বাংলাদেশের কঠোর পরিশ্রমী জনগণই উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি এবং জনগণের সম্মিলিত মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে দেশ আরো সহনশীল ও স্থিতিশীল অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাবে।

বৈঠকে আইএমএফ-এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ক্রিস পাপাজর্জিউ, বাংলাদেশ মিশন চিফ, ম্যাক্সিম ক্রিশকো, ঢাকা রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং তৌহিদ এলাহি, ডেপুটি সেক্রেটারি ও ইকোনমিক এনালিস্ট ।

এনসিপি এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জাবেদ রাসিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান, শিল্প ও বাণিজ্য সেল, মো. সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সেল, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, যুগ্ম সদস্য সচিব ও কো-লিড, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সেল, আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, সংগঠক ও কো-লিড, শিল্প ও বাণিজ্য সেল এবং মো. আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও সদস্য, শিল্প ও বাণিজ্য সেল।

ঢাকা/রায়হান/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্বল+দুর্বল=আরও দুর্বল, নাকি সবল ব্যাংক
  • এনসিপির সঙ্গে আইএমএফের বৈঠক