আওয়ামী লীগের ইতিহাস একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের ইতিহাস: সালাহউদ্দিন আহমদ
Published: 16th, May 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের লিগ্যাসি, যেটা আমি সব সময় বলি, আওয়ামী লীগের ইতিহাস একদলীয় শাসনব্যবস্থার প্রবর্তনের ইতিহাস। সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসন দূরীভূত করার ইতিহাস। এই যে চোরতন্ত্রের ওয়ারেশি ব্যবস্থা, সেটা শেখ মুজিবের সময় থেকে শেখ হাসিনার সময় পর্যন্ত গড়িয়েছে।’
শুক্রবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাঙ্কুয়েট হলে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।
যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে চারটি বিভাগে ভাগ করে ধারাবাহিকভাবে সেমিনার ও সমাবেশের আয়োজন করছে। গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে প্রথম পর্বের আয়োজন শেষে খুলনায় আজ খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রবঞ্চনামূলক সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ফলে রাষ্ট্রের দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। তারা গণতান্ত্রিক জবাবদিহি নষ্ট করেছে। শেখ হাসিনার সময় বিশেষ কেন্দ্রীভূত সরকার তৈরি হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য বহু জীবন দিতে হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের ১৫-১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের সময়ের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদি আওয়ামী লীগের ওই সময়ে শুধু ট্যাক্সের ক্ষেত্রে যে অপব্যবহার ও দুর্নীতি করা হয়েছে, তা যদি অর্ধেকও করা হতো, তাহলে আমাদের শিক্ষা বাজেট ডাবল করা যেত এবং হেলথ বাজেট তিন গুণ করা যেত।
সেমিনারে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, ‘কোনো সংবিধানই মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে না, যদি রাজনৈতিক শক্তি না চায়। রাজনীতিতে ভালো মানুষ, ভালো নেতৃত্ব এলেই মৌলিক অধিকার রক্ষা সম্ভব। তরুণ প্রজন্মের জন্য এখন রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ভালো সময়। গত ১৬-১৭ বছর ভালো মানুষ যেন রাজনীতিতে না আসতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলাইনার সহযোগী অধ্যাপক আজিজুল হক, বিডি জবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রভাষক মারুফ মল্লিক, চিন্তক ও জবান সম্পাদক রেজাউল করিম, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম খন্দকার, ‘শিখো’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীর চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের সহযোগী অধ্যাপক তৌফিক জোয়ার্দার।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাল শনিবার সার্কিট হাউস মাঠে তারুণ্যের সমাবেশ হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তারুণ্যের ভাবনা ও অধিকার নিয়ে খুলনার পর ২৩ মে বগুড়ায় এবং ২৭ মে ঢাকার মাধ্যমে কর্মসূচির শেষ হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ ব যবস থ র জন ত র সময় আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইরাল ঘটনার খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার হয়: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, বর্তমানে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সত্যের চেয়ে ভাইরাল হওয়ার দিকেই মনোযোগ বেশি। এ ধরনের খবর গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রচার করা হয়। ভাইরাল নিউজের বাণিজ্যিক ও আর্থিক মূল্য আছে বলে সেটা করা হচ্ছে। এই চিন্তাধারা থেকে বের হওয়া না গেলে দেশের গণমাধ্যমগুলো বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) সেমিনারকক্ষে ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম সাম্প্রতিক অপতথ্যের গতিপ্রকৃতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজন করে পিআইবি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, মূলধারার গণমাধ্যম বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে সে জায়গাটা নেবেন কনটেন্ট মেকার বা ব্লগাররা। তিনি বলেন, তাঁরা বিকল্প গণমাধ্যম হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবেন। এ সংকট মোকাবিলায় গণমাধ্যম মালিক ও ম্যানেজমেন্টকে ডিজিটাল ভেরিফিকেশন এবং ফ্যাক্ট চেকিংয়ে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন তিনি।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। সূচনা বক্তব্যে গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র নিজে মিথ্যার কারখানায় পরিণত হয়েছিল এবং সংবাদমাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার ফেরিওয়ালা।’ গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুমের ঘটনা ঘটানোর জন্য শিকারি সাংবাদিকতা করা হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ১৫ বছরের সাংবাদিকতায় দায়িত্বশীল ধারা ক্ষীণ ছিল বলে মনে করেন ফারুক ওয়াসিফ। রাজনৈতিক জায়গা থেকে গণমাধ্যম কোনো অবস্থান নিতে পারেনি বলেন তিনি।
পিআইবির মহাপরিচালক বলেন, অপতথ্যকে শুধু ফ্যাক্টচেক দিয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এটাকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পড়েন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ (ইবিএলআইসিটি) প্রকল্পের পরামর্শক মামুন অর রশীদ। প্রবন্ধের ওপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
এতে বক্তব্য দেন প্রথমা প্রকাশনার প্রধান সমন্বয়কারী মশিউল আলম, একাত্তর টিভির সিওও শফিক আহমেদ, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক প্রমুখ। সংবাদমাধ্যমে অপতথ্য মোকাবিলায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতাবৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত বিনিয়োগের বিষয়গুলোকে তুলে ধরেন তাঁরা। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন পিআইবির জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ।