বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোয় সরকারি হস্তক্ষেপের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সবল করতে দুর্বল সরকারি ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সরকারীকরণ করা হতে পারে। প্রয়োজনে সরকার থেকে ব্যাংকগুলোকে নতুন করে মূলধন দিয়ে পুনর্গঠনও করা হতে পারে। 

বৃহস্পতিবার রাতে দুবাইয়ে প্রবাসীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে জনতা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক। সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দেশটির কয়েকটি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। 

আহসান এইচ মনসুর বলেন, দুর্বল ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে আগের যে মালিকানা আছে, সেগুলো থাকবে না। আমরা সেখানে হস্তক্ষেপ করে পুনর্গঠন করব। তবে কোনো আমানতকারী টাকা হারাবে না। আমানতকারীর চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। সবার স্বার্থ দেখা হবে; কাউকে বাদ দেওয়া হবে না। 

বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, অর্থ পাচারে জড়িতদের ধরতে প্রয়োজন বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা নেওয়া হবে। অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ জব্দের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। 

সভায় মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সর্বাধিক রেমিট্যান্স পাঠানোয় আমিরাত প্রবাসীদের সাধুবাদ জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ। সাধারণ কর্মীদের বৈধ পথে আরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে ফি কমানোর বিষয়ে জোর দেন কনসাল জেনারেল মো.

রাশেদুজ্জামান। 

অনুষ্ঠানে আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশে জনতা ব্যাংকের নতুন ১৩টি বুথ স্থাপনের ঘোষণা দেন জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম ফজলুর রহমান। 

জনতা ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশিদ ওহাব, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান প্রমুখ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র বল আম র ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়কে ‌‌পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিন্দা জানিয়েছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায়ের পর প্রকাশিত পাঁচ পৃষ্ঠার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিস্ক্রিয় করে দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি পন্থা হচ্ছে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া।”

আরো পড়ুন:

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

এই রায়ে কষ্ট পেয়েছি: শেখ হাসিনার আইনজীবী

ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এর আগে এ বিচার প্রক্রিয়াকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

তিনি বলেন, “এমন একটি ট্রাইব্যুনাল যেখানে ন্যায্যভাবে অভিযোগ যাচাই ও পরীক্ষা করা হয়, সেখানে অভিযোগকারীদের মুখোমুখি হতে আমি ভয় পাই না।”

তিনি আরো যোগ করেন, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, এই অভিযোগগুলো হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নিয়ে যেতে।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, তিনি তার মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত রেকর্ড নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রায় ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হয়। ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়ে ছয়টি অংশ রয়েছে।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি অনলাইন

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ