নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সাবেক এক ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তারে গিয়ে নাজেহাল হয়ে ফিরতে হয়েছে পুলিশ সদস্যদের। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের মানিকপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকার পর ওই পুলিশ সদস্যরা এলাকা ছেড়ে যান। পুলিশের ভাষ্য, অন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে ধরতে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে তাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। 

স্থানীয় লোকজন জানায়, আড়াইহাজারে সরকারি সফর আলী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক এজিএস ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো.

আলাউদ্দিন শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে মানিকপুর জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ে যান। এ সময় মসজিদের ভেতর ছড়িয়ে পড়ে, তাঁকে গ্রেপ্তারে বাইরে অবস্থান করছে গোপালদী তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আক্তারুজ্জামান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন একটি দল। তারা সবাই সাদা পোশাকে ছিলেন।

এ সময় স্থানীয় মুসুল্লিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে পুলিশের কাছে জানতে চান, কেন আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হবে, তাঁর নামে কোন ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সদুত্তর দিতে পারেননি। সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ তাদের ঘেরাও করে রাখে। পরিস্থিতি অন্যদিকে গড়ানোর বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পুলিশ সদস্যরা জানায়, আলাউদ্দিনকে আটক করতে তারা আর এলাকায় আসবেন না। ঘণ্টাখানেক তারা অবরুদ্ধ থাকার পর স্থানীয় গণ্যমান্য লোকদের সহায়তায় পুলিশ সদস্যরা ওই এলাকা ছেড়ে যান। 

আলাউদ্দিনের ভাষ্য, তিনি এক সময় ছাত্রলীগ করতেন। কিন্তু পাঁচ-ছয় বছর আগেই সংগঠনের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও সংসার নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত নন। তারপরও শুক্রবার দুপুরে সাদা পোশাকে তিন পুলিশ সদস্য কোনো মামলা ছাড়াই গ্রেপ্তারে এসেছিলেন। তাঁর ধারণা, ‘কারও প্ররোচনায় তারা এসেছিলেন। তখন আমি জুমার নামাজের জন্য মসজিদে ছিলাম। ভেতরে থাকাবস্থায়ই এলাকাবাসী পুলিশ সদস্যদের কাছে আমাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চায়। তারা সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে পুলিশকে সসম্মানে এলাকা থেকে বিদায় দেওয়া হয়।’

বক্তব্য জানতে এসআই আক্তারুজ্জামান ও এএসআই আমিনুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তারা ধরেননি। গোপালদী তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক জাকির হোসেনের দাবি, ‘মানিকপুর এলাকায় একটি ওয়ারেন্ট তামিল করতে যায় পুলিশ। সেখানে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়; এর বাইরে আর কিছুই না।’ তবে যে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল পুলিশ, তার নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি পরিদর্শক জাকির। 

আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিনের ভাষ্য, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি বুঝিয়ে পুলিশ সদস্যরা চলে আসেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-অঞ্চল) মেহেদি হাসান বলেন, সাদা পোশাকে পুলিশ কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযান যেতে পারে। ওই দল দূরে অবস্থান করলেও অন্তত একজন পোশাকধারী পুলিশ থাকতে হয়। মানিকপুরে পুলিশের অভিযানের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তারে এসে নাজেহাল পুলিশ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সাবেক এক ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তারে গিয়ে নাজেহাল হয়ে ফিরতে হয়েছে পুলিশ সদস্যদের। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের মানিকপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকার পর ওই পুলিশ সদস্যরা এলাকা ছেড়ে যান। পুলিশের ভাষ্য, অন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে ধরতে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে তাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। 

স্থানীয় লোকজন জানায়, আড়াইহাজারে সরকারি সফর আলী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক এজিএস ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. আলাউদ্দিন শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে মানিকপুর জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ে যান। এ সময় মসজিদের ভেতর ছড়িয়ে পড়ে, তাঁকে গ্রেপ্তারে বাইরে অবস্থান করছে গোপালদী তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আক্তারুজ্জামান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন একটি দল। তারা সবাই সাদা পোশাকে ছিলেন।

এ সময় স্থানীয় মুসুল্লিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে পুলিশের কাছে জানতে চান, কেন আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হবে, তাঁর নামে কোন ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সদুত্তর দিতে পারেননি। সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ তাদের ঘেরাও করে রাখে। পরিস্থিতি অন্যদিকে গড়ানোর বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পুলিশ সদস্যরা জানায়, আলাউদ্দিনকে আটক করতে তারা আর এলাকায় আসবেন না। ঘণ্টাখানেক তারা অবরুদ্ধ থাকার পর স্থানীয় গণ্যমান্য লোকদের সহায়তায় পুলিশ সদস্যরা ওই এলাকা ছেড়ে যান। 

আলাউদ্দিনের ভাষ্য, তিনি এক সময় ছাত্রলীগ করতেন। কিন্তু পাঁচ-ছয় বছর আগেই সংগঠনের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও সংসার নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত নন। তারপরও শুক্রবার দুপুরে সাদা পোশাকে তিন পুলিশ সদস্য কোনো মামলা ছাড়াই গ্রেপ্তারে এসেছিলেন। তাঁর ধারণা, ‘কারও প্ররোচনায় তারা এসেছিলেন। তখন আমি জুমার নামাজের জন্য মসজিদে ছিলাম। ভেতরে থাকাবস্থায়ই এলাকাবাসী পুলিশ সদস্যদের কাছে আমাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চায়। তারা সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে পুলিশকে সসম্মানে এলাকা থেকে বিদায় দেওয়া হয়।’

বক্তব্য জানতে এসআই আক্তারুজ্জামান ও এএসআই আমিনুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তারা ধরেননি। গোপালদী তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক জাকির হোসেনের দাবি, ‘মানিকপুর এলাকায় একটি ওয়ারেন্ট তামিল করতে যায় পুলিশ। সেখানে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়; এর বাইরে আর কিছুই না।’ তবে যে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল পুলিশ, তার নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি পরিদর্শক জাকির। 

আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিনের ভাষ্য, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি বুঝিয়ে পুলিশ সদস্যরা চলে আসেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। 

নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-অঞ্চল) মেহেদি হাসান বলেন, সাদা পোশাকে পুলিশ কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযান যেতে পারে। ওই দল দূরে অবস্থান করলেও অন্তত একজন পোশাকধারী পুলিশ থাকতে হয়। মানিকপুরে পুলিশের অভিযানের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ