দখলমুক্ত করে সুপেয় পানি নিশ্চিত করুন
Published: 17th, May 2025 GMT
বাগেরহাট জেলা প্রাকৃতিকভাবে লবণাক্ত এলাকা। এখানকার মানুষের সুপেয় পানির সংকট যুগ যুগ ধরে। এ সংকট মেটাতে বড় আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করে সেখানকার পুকুরগুলো। কিন্তু ব্রিটিশ আমলের পুরোনো সেসব পুকুর খনন করতে গিয়ে হয়েছে লুটপাটের উৎসব। পরবর্তী সময়ে পুকুরগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় শুকনো মৌসুমে জেলার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ আরও চরমে পৌঁছেছে। বাগেরহাটের মানুষের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে পুকুরগুলো উদ্ধার করা ছাড়া বিকল্প নেই।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, লবণাক্ত অঞ্চলে সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাগেরহাট জেলার উপজেলাগুলোতে ১৫১টি পুকুর খনন এবং পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপনের কথা ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কাজ শেষ করেছে চার বছর আগে। এতে ৫৫ কোটি টাকা খরচ করা হলেও এই প্রকল্পের সুফল স্থানীয় মানুষ চার মাসও ভোগ করতে পারেনি।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক পুকুরে অতিরিক্ত খনন করে ঠিকাদারেরা মাটি বিক্রি করেছেন। এতে পাড় ভেঙে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করেছে, যা মিষ্টি পানির এই আধারগুলোকে করেছে অকার্যকর। অন্যদিকে, যেসব পিএসএফ স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলোর কার্যকারিতা ছিল অত্যন্ত স্বল্পমেয়াদি—কেউ কেউ বলছেন, এক সপ্তাহেই অচল হয়ে পড়েছে। তাহলে এই কোটি কোটি টাকা গেল কোথায়?
সরকারি বিধি অনুযায়ী, এই পুকুরগুলোতে মাছ চাষ কিংবা গোসল করা নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক পুকুর এখন স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাছ চাষের দখলে। পুকুর খননের ক্ষেত্রেও বহু জায়গায় কাজ হয়েছে শুধু কাগজে-কলমে। খনন হয়েছে নামমাত্র, কিন্তু বিল তুলে নেওয়া হয়েছে পুরোটাই। এই একটি প্রকল্পই বলে দেয় কীভাবে উন্নয়নের নামে বাজেট বরাদ্দ হয়, কাজের নামে লুটপাট হয় এবং শেষে মানুষের সংকট আরও বাড়ে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ লুটপাটের মহোৎসব হয়েছে। প্রভাবশালীরাও তখন থেকে পুকুরগুলো দখল করে আছে। গণ-অভ্যুত্থানে সে সরকারের পতন হওয়ার পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে অনেক পুকুরের দখলদারিতেও হয়েছে হাতবদল। বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এবার সময় এসেছে পুকুরগুলো দখলমুক্ত করে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার।
এসব পুকুর ঘিরে প্রকল্পে যে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে, তার তদন্ত করতে হবে। দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলাকারী কর্মকর্তা এবং প্রভাবশালী দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে পুকুরগুলো কখন দখলমুক্ত করা হবে। বাগেরহাটের সব উপজেলায় সুপেয় পানির সংকট দূর করতে সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ক ত কর প ক রগ ল প রকল প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দখলমুক্ত করে সুপেয় পানি নিশ্চিত করুন
বাগেরহাট জেলা প্রাকৃতিকভাবে লবণাক্ত এলাকা। এখানকার মানুষের সুপেয় পানির সংকট যুগ যুগ ধরে। এ সংকট মেটাতে বড় আশীর্বাদ হিসেবে কাজ করে সেখানকার পুকুরগুলো। কিন্তু ব্রিটিশ আমলের পুরোনো সেসব পুকুর খনন করতে গিয়ে হয়েছে লুটপাটের উৎসব। পরবর্তী সময়ে পুকুরগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় শুকনো মৌসুমে জেলার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ আরও চরমে পৌঁছেছে। বাগেরহাটের মানুষের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে পুকুরগুলো উদ্ধার করা ছাড়া বিকল্প নেই।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, লবণাক্ত অঞ্চলে সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাগেরহাট জেলার উপজেলাগুলোতে ১৫১টি পুকুর খনন এবং পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপনের কথা ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কাজ শেষ করেছে চার বছর আগে। এতে ৫৫ কোটি টাকা খরচ করা হলেও এই প্রকল্পের সুফল স্থানীয় মানুষ চার মাসও ভোগ করতে পারেনি।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক পুকুরে অতিরিক্ত খনন করে ঠিকাদারেরা মাটি বিক্রি করেছেন। এতে পাড় ভেঙে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করেছে, যা মিষ্টি পানির এই আধারগুলোকে করেছে অকার্যকর। অন্যদিকে, যেসব পিএসএফ স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলোর কার্যকারিতা ছিল অত্যন্ত স্বল্পমেয়াদি—কেউ কেউ বলছেন, এক সপ্তাহেই অচল হয়ে পড়েছে। তাহলে এই কোটি কোটি টাকা গেল কোথায়?
সরকারি বিধি অনুযায়ী, এই পুকুরগুলোতে মাছ চাষ কিংবা গোসল করা নিষিদ্ধ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক পুকুর এখন স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাছ চাষের দখলে। পুকুর খননের ক্ষেত্রেও বহু জায়গায় কাজ হয়েছে শুধু কাগজে-কলমে। খনন হয়েছে নামমাত্র, কিন্তু বিল তুলে নেওয়া হয়েছে পুরোটাই। এই একটি প্রকল্পই বলে দেয় কীভাবে উন্নয়নের নামে বাজেট বরাদ্দ হয়, কাজের নামে লুটপাট হয় এবং শেষে মানুষের সংকট আরও বাড়ে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ লুটপাটের মহোৎসব হয়েছে। প্রভাবশালীরাও তখন থেকে পুকুরগুলো দখল করে আছে। গণ-অভ্যুত্থানে সে সরকারের পতন হওয়ার পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে অনেক পুকুরের দখলদারিতেও হয়েছে হাতবদল। বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এবার সময় এসেছে পুকুরগুলো দখলমুক্ত করে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার।
এসব পুকুর ঘিরে প্রকল্পে যে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে, তার তদন্ত করতে হবে। দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলাকারী কর্মকর্তা এবং প্রভাবশালী দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে পুকুরগুলো কখন দখলমুক্ত করা হবে। বাগেরহাটের সব উপজেলায় সুপেয় পানির সংকট দূর করতে সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।