বরিশালে একটুকরা স্বাদের আশ্রয় শতবর্ষী ‘দধি ঘর’
Published: 17th, May 2025 GMT
এখনকার খাবারের দোকান মানেই ঝলমলে সাজসজ্জা, বাহারি বিজ্ঞাপন আর আধুনিক মোড়ক। তবে এর ব্যতিক্রম আছে বরিশালে, গির্জা মহল্লার এক জরাজীর্ণ টিনের ঘরে। শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই বয়সী ‘দধি ঘর’ নামের ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটির নেই কোনো বিজ্ঞাপন কিংবা বাহারি সাজসজ্জা, তবু এর নাম শহরের মানুষের মুখে মুখে।
বরিশাল নগরের মূল ব্যবসাকেন্দ্র গির্জা মহল্লা, যার কাগজে-কলমে নাম ‘কে বি হেমায়েত উদ্দিন সড়ক’। এই এলাকা আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে গেলেও নামীদামি খাবারের হোটেল আর ঝলমলে শপিংমলের ভিড়ে এক কোনায় নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে দধি ঘর। পুরোনো কাঠামো ঠিক রেখে কাঁসার বাটিতে পরিবেশন করা খাঁটি দুধের দই, ঘোল, মাখন আর মুড়ির স্বাদে আজও জয় করে চলেছে মানুষের মন।
প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দধি ঘরের সামনে থাকে উৎসুক ক্রেতাদের ভিড়। স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে আসা ভোজনরসিকেরাও বরিশালে এসে একবার হলেও চেখে দেখেন এখানকার দই-চিড়া, মুড়ি, ঘোল আর মাখনের স্বাদ। এই দোকানের বিশেষত্ব শুধু স্বাদে নয়, পরিবেশনেও। কাঁসার বাটিতে খাবার পরিবেশন করা হয়।
প্রায় এক শতাব্দীর ইতিহাস ধারণ করা এই দধি ঘরের সূচনা করেছিলেন ১৯৩০ সালে মিনহাজ উদ্দীন রাজ। তাঁর বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা গ্রামে। শহরের একটি ঘোল-মুড়ির দোকানের কারিগর ছিলেন তিনি। পরে নিজেই একটি ছোট ঘরে শুরু করেন দই বিক্রি। তাঁর মৃত্যুর পর বড় ছেলে আদু রাজ দায়িত্ব নেন। ১৯৯৭ সালে আদু রাজের মৃত্যুর পর হাল ধরেন তাঁর ছোট ভাই আজিজ রাজ। তিনি ১৯৯৯ সালে মারা গেলে তাঁর ছেলে রিয়াজুল কবিরের হাতে যায় দধি ঘরের দায়িত্ব। এরপর চতুর্থ প্রজন্মের মাহমুদুল হাসান এই প্রতিষ্ঠানকে আগলে রাখছেন।
কাঁসার বাটিতে খাবার পরিবেশন করা হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
লাল গালিচায় পেদ্রোর ঝলমলে উপস্থিতি, পাশে শুভ্রতায় মোড়ানো এমা স্টোন
শুক্রবার দিবাগত রাতে ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের লাল গালিচায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয়ে উঠলেন জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা পেদ্রো প্যাসকাল। আরি অ্যাস্টার পরিচালিত বহু প্রতীক্ষিত নতুন চলচ্চিত্র ‘এডিংটন’ এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারে সহ-অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে হাজির হয়ে আলো ছড়ান তিনি।
গ্ল্যামারাস এই সন্ধ্যায় প্যাসকাল নজর কাড়েন একটি ক্লাসিক অল-ব্ল্যাক টাক্সেডো, ম্যাচিং জুতা ও কালচার এন্ড গ্রস ব্র্যান্ডের স্টাইলিশ চশমা পরে। লাল গালিচায় হাসিমুখে এমা স্টোনের সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা যায় তাঁকে। এ সময় এমা স্টোন পরেছিলেন একটি হোয়াইট কাস্টম লুই ভিটনের গাউন, ঝকঝকে ড্রপ ইয়ারিংস এবং সাহসী ছোট চুলের হেয়ারস্টাইল।
এই ছবির তারকাসমূহের মধ্যে আরও ছিলেন অস্টিন বাটলার, লুক গ্রিমস, ক্লিফটন কলিন্স জুনিয়র, মাইকেল ওয়ার্ড এবং জোকুইন ফিনিক্স। পুরো দলটি যখন গ্র্যান্ড থিয়েট্রে লুমিয়েরের বিখ্যাত লাল গালিচা অতিক্রম করছিলেন, তখন দর্শকদের করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে কান উৎসব প্রাঙ্গণ। দর্শকরা স্পষ্টভাবে তাদের প্রিয় পেদ্রো প্যাসকালের নামেই সবচেয়ে বেশি উল্লাসে ফেটে পড়েন।
উৎসবে আসার আগের দিনই প্যাসকালকে দেখা যায় নিস বিমানবন্দরে, যেখানে তিনি পরেছিলেন হেড-টু-টো বোটেগা ভেনেটার আরামদায়ক পোশাক। এই আরামদায়ক ভ্রমণ লুক আর উৎসবের লাল গালিচার ঝলমলে উপস্থিতি-দুইটিই দেখিয়ে দেয় তাঁর ফ্যাশনের বহুমাত্রিকতা।
এডিংটোন সিনেমাটিতে প্যাসকাল অভিনয় করেছেন এক চতুর ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছোট শহরের মেয়রের চরিত্রে, যিনি একটি মহামারির প্রেক্ষাপটে শেরিফ হিসেবে থাকা জোকুইন ফিনিক্সের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন চরম উত্তেজনাকর সংঘাতে। এটি পরিচালকের প্রথম কান অভিষেক হলেও ছবিটি ইতোমধ্যেই পাম দ’অর-এর জন্য শক্তিশালী প্রতিযোগী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
চলচ্চিত্রটি আগামী ১৮ জুলাই বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাবে।
গত ১৩ মে দক্ষিণ ফ্রান্সের কান শহরের পালে দ্য ফেস্টিভ্যালে শুরু হয়েছে ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসব। চলবে ২৪ মে পর্যন্ত। এই উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক লালগালিচা পর্ব। এই পর্বে বিশ্বের খ্যাতিনামা অভিনেত্রী, গায়িকা ও মডেলরা বাহারি পোশাকে হাঁটেন। এবারের আসরে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে ২২টি চলচ্চিত্র। এছাড়া ‘আঁ সার্তে রিগা’, ‘আউট অব কম্পিটিশন’, ‘মিডনাইট স্ক্রিনিংস’, ‘কান প্রিমিয়ার’ এবং ‘স্পেশাল স্ক্রিনিংস’-প্রতিটি বিভাগেই দেখা যাবে নানা ঘরানার, নানা দেশের চলচ্চিত্র।