এখনকার খাবারের দোকান মানেই ঝলমলে সাজসজ্জা, বাহারি বিজ্ঞাপন আর আধুনিক মোড়ক। তবে এর ব্যতিক্রম আছে বরিশালে, গির্জা মহল্লার এক জরাজীর্ণ টিনের ঘরে। শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই বয়সী ‘দধি ঘর’ নামের ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটির নেই কোনো বিজ্ঞাপন কিংবা বাহারি সাজসজ্জা, তবু এর নাম শহরের মানুষের মুখে মুখে।

বরিশাল নগরের মূল ব্যবসাকেন্দ্র গির্জা মহল্লা, যার কাগজে-কলমে নাম ‘কে বি হেমায়েত উদ্দিন সড়ক’। এই এলাকা আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে গেলেও নামীদামি খাবারের হোটেল আর ঝলমলে শপিংমলের ভিড়ে এক কোনায় নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে দধি ঘর। পুরোনো কাঠামো ঠিক রেখে কাঁসার বাটিতে পরিবেশন করা খাঁটি দুধের দই, ঘোল, মাখন আর মুড়ির স্বাদে আজও জয় করে চলেছে মানুষের মন।

প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দধি ঘরের সামনে থাকে উৎসুক ক্রেতাদের ভিড়। স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে আসা ভোজনরসিকেরাও বরিশালে এসে একবার হলেও চেখে দেখেন এখানকার দই-চিড়া, মুড়ি, ঘোল আর মাখনের স্বাদ। এই দোকানের বিশেষত্ব শুধু স্বাদে নয়, পরিবেশনেও। কাঁসার বাটিতে খাবার পরিবেশন করা হয়।

প্রায় এক শতাব্দীর ইতিহাস ধারণ করা এই দধি ঘরের সূচনা করেছিলেন ১৯৩০ সালে মিনহাজ উদ্দীন রাজ। তাঁর বাড়ি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা গ্রামে। শহরের একটি  ঘোল-মুড়ির দোকানের কারিগর ছিলেন তিনি। পরে নিজেই একটি ছোট ঘরে শুরু করেন দই বিক্রি। তাঁর মৃত্যুর পর বড় ছেলে আদু রাজ দায়িত্ব নেন। ১৯৯৭ সালে আদু রাজের মৃত্যুর পর হাল ধরেন তাঁর ছোট ভাই আজিজ রাজ। তিনি ১৯৯৯ সালে মারা গেলে তাঁর ছেলে রিয়াজুল কবিরের হাতে যায় দধি ঘরের দায়িত্ব। এরপর চতুর্থ প্রজন্মের মাহমুদুল হাসান এই প্রতিষ্ঠানকে আগলে রাখছেন।

কাঁসার বাটিতে খাবার পরিবেশন করা হয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘মাতৃভাষা ও শিক্ষা : শতবর্ষের ভাবনা’ বই নিয়ে আলোচনা

প্রবন্ধ সংকলন ‘মাতৃভাষা ও শিক্ষা: শতবর্ষের ভাবনা’ বই নিয়ে বইবিষয়ক পত্রিকা ‘এবং বই’ ও ‘শিক্ষালোক’-এর যৌথ উদ্যোগে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে ঢাকার শেখেরটেকের সিদীপ মিলনায়তনে এ আয়োজন করা হয়।

আলোচ্য বইটি প্রকৃতি প্রকাশনী ও সিদীপ যৌথভাবে প্রকাশ করেছে। অক্ষয়কুমার দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সৈয়দ মুজতবা আলী থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ের অধ্যাপক শহিদুল ইসলামসহ প্রথিতযশা লেখকদের আটটি লেখা নিয়ে প্রকাশিত সংকলনটি সম্পাদনা করেছেন আলমগীর খান।

সিদীপের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ শহিদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ‘এবং বই’ সম্পাদক ও লেখক ফয়সাল আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শিক্ষালোকের নির্বাহী সম্পাদক আলমগীর খান।

আয়োজনে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও অনুবাদক জাভেদ হুসেন, ইউল্যাব শিক্ষক খান মো. রবিউল আলম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক কুদরতে খোদা, কথাসাহিত্যিক আহমদ বশীর, এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক ফাতিহুল কাদির সম্রাট, কবি শামসেত তাবরেজী ও শিল্পী শিশির মল্লিক প্রমুখ।

‘এবং বই’ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, আজ আলোচনার জন্য আমরা একটি গুরত্বপূর্ণ বই নির্বাচন করেছি। যে বইটির প্রধান বিষয় মাতৃভাষা ও শিক্ষা। আমরা এবং বই ও শিক্ষালোক যৌথভাবে এ ধরনের কাজ আরও করতে চাই।

জাভেদ হুসেন ‘মাতৃভাষা ও শিক্ষা’ বইটি নিয়ে তার আলোচনায় রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, রাজার ১০০০ চোখ থাকলেও যখন শিক্ষার ব্যাপার আসে, তখন তার ৯৯০টি চোখ বন্ধ হয়ে যায়।

প্রধান অতিথি শিক্ষাবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে পরনির্ভরশীল, সেজন্য আমরা ভাষাসহ সবকিছুতেই পরনির্ভরশীল। তিনি বলেন, আমাদের বাংলা ভাষার চর্চা যেমন বাড়াতে হবে, ঠিক তেমনি প্রযুক্তিতেও নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মাতৃভাষা ও শিক্ষা: শতবর্ষের ভাবনা’ বই নিয়ে আলোচনা
  • ‘মাতৃভাষা ও শিক্ষা : শতবর্ষের ভাবনা’ বই নিয়ে আলোচনা
  • জলে ভাসা শতবর্ষী নৌকার হাটে