ভূমধ্যসাগরের কোল ঘেঁষে পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের ছাদে দেখা হয়ে গেল  বলিউড অভিনেতা অনুপম খেরের সঙ্গে। হাস্যবদনে নীল রঙ্গের স্যুট পরে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।  সামনে ক্যামেরা, পাশে কানের উৎসব ভিড়, আর দূরে সাগরের নীল জলরাশি। এবারের ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে এসেছেন নিজের পরিচালিত ছবি ‘তানভি দ্য গ্রেট’ নিয়ে।  এই সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়েই কথা হয় তার সঙ্গে।  

প্রশ্ন: আপনি তো এত বছর ধরে অভিনয় করে এসেছেন, হঠাৎ আবার পরিচালনায় ফেরা কেন?

অনুপম খের: (হাসি দিয়ে) ‘হঠাৎ’ বলা ঠিক হবে না। আমার মধ্যে পরিচালকটা সবসময় ছিল। ২০০২ সালে ওম জয় জগদীশ বানিয়েছিলাম, তখন থেকেই ভাবছিলাম, আরেকটা বানাবো। কিন্তু অভিনয়ের ব্যস্ততা, সময় আর সাহস—এই তিনটে একসঙ্গে জোগাড় করতে একটু সময় লেগে গেল। তানভি দ্য গ্রেট এমন একটা গল্প, যেটা না বললেই নয়।

প্রশ্ন: ছবিটা সম্পর্কে একটু বলবেন?

অনুপম খের: এটা এক তরুণী মেয়ের আত্ম-আবিষ্কারের গল্প। নাম তানভি। ছোট শহরের মেয়ে, কিন্তু স্বপ্ন বড়। ওর আত্মবিশ্বাস, সাহস, আর পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতাই এই ছবির প্রাণ। তানভির চরিত্রে অভিনয় করেছে শুভাঙ্গী দত্ত, একেবারে নতুন মুখ। কিন্তু ওর চোখে আমি যে আগুন দেখেছি, তা বহু অভিজ্ঞ অভিনেত্রীর মধ্যেও পাইনি।

প্রশ্ন: ‘তানভি দ্য গ্রেট’ ছবিটি কানে প্রদর্শিত হচ্ছে। অনুভূতি কেমন?

অনুপম খের: এটা স্বপ্নের মতো। আমি চার দশক ধরে অভিনয় করছি, ৫০০-এর বেশি সিনেমায় কাজ করেছি। কিন্তু এই প্রথম কানে আমার ছবি স্ক্রিনিং হলো, আর সেটা আমার পরিচালনায়! এটা শুধুই সম্মান নয়, এটা একধরনের নতুন শুরু।

প্রশ্ন: আপনি শুধু পরিচালনা-প্রযোজনাই করেননি, অভিনয়ও করেছেন এই ছবিতে। এটা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?

অনুপম খের: খুব চ্যালেঞ্জিং। পরিচালক হিসেবে আপনি চাইবেন সবকিছু ঠিকঠাক হোক। আবার অভিনেতা হিসেবে আপনাকে নিজের চরিত্রে ডুবে যেতে হয়। মাঝে মাঝে মনে হতো, নিজের সাথেই লড়াই করছি! (হাসেন) তবে আমার অভিজ্ঞতা কাজে দিয়েছে। টিমের সবাই অসাধারণ সাপোর্ট দিয়েছে।

প্রশ্ন: ছবিতে আইয়েন গ্লেন, বোমান ইরানি, জ্যাকি শ্রফের মতো তারকারা আছেন। কেমন অভিজ্ঞতা ছিল?

অনুপম খের: অসাধারণ! আমি বরাবর বিশ্বাস করি, ভালো সিনেমা তখনই হয়, যখন টিম ভালো হয়। আইয়েন গ্লেনের মতো আন্তর্জাতিক তারকা এবং আমাদের বোমান-জ্যাকি—সবাই ছবির ভেতরে নিজেদের ঢেলে দিয়েছেন। এটা তাদের ভালোবাসা ও আস্থার ফল।

প্রশ্ন: বলিউডের সিনেমা ও সেখানকার সিনেমার গল্প নিয়ে এখন সমালোচনা হয় এটা আপনি কিভাবে দেখছেন?

অনুপম খের: সমালোচনার যৌক্তিক কারণও কিন্তু রয়েছে। সিনেমার জন্য দরকার ভালো গল্প। ভালো গল্প বিশ্বের সব জায়গাতেই কদর রয়েছে। বলিউড ভালো গল্প থেকে ক্রমেই সরে আসছে। 
তবে এ থেকে দ্রুত উত্তরণের সময়ও আছে। এখনই দ্রুত উত্তরণের পথে হাটতে হবে। না হলে ফলাফল কি হবে তা সবাই দেখতেই পারছেন। 

প্রশ্ন: নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের জন্য আপনার বার্তা কী?

অনুপম খের: নিজেকে ছোট ভাবো না। সুযোগ নিজের হাতে তৈরি করতে হয়। আমি শিমলার এক সাধারণ পরিবার থেকে এসেছি। প্রথম সিনেমায় (সারাংশ) ২৮ বছর বয়সে ৬৫ বছরের বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। সাহসটা রাখতে হয়। আর হ্যাঁ—সবসময় শিখতে থাকো। আমি এখনও শিখছি।

প্রশ্ন: আপনি বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু বলবেন?
অনুপম খের: অবশ্যই। বাংলাদেশকে আমি খুব পছন্দ করি
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ন চলচ চ ত র উৎসব পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গল্পের প্রয়োজনে অন্তরঙ্গ দৃশ্য করেছি: রাজ রিপা

চলতি বছরের ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পায় রোমান্টিক ঘরানার চলচ্চিত্র ‘ময়না’। এ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় নবাগত চিত্রনায়িকা রাজ রিপার। সিনেমাটির কিছু দৃশ্য—বিশেষ করে চুম্বন ও অন্তরঙ্গ মুহূর্ত নিয়ে শুরু থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছিল। বিতর্কিত সেই দৃশ্য নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন রাজ রিপা।

রাজ রিপা বলেন, “কিসিং ব্যাপারটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়। চরিত্রের প্রয়োজনে করা হয়েছে। আমি রিপা হিসেবে নয়, ‘ময়না’ চরিত্র হিসেবে অভিনয় করেছি। ক্যামেরার সামনে আমি ছিলাম না, ছিল ‘ময়না’। চরিত্রের গভীরতা বোঝাতে চুম্বনের দৃশ্যটি ছিল অপরিহার্য।”

আরো সাহসী দৃশ্যে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন পরিচালক। এ তথ্য স্মরণ করে রাজ রিপা বলেন, “চরিত্রের গঠন অনুযায়ী আরো কিছু সাহসী দৃশ্যের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আমি পরিচালককে জানিয়ে দিই—সেটি আমার পক্ষে করা সম্ভব নয়। শারীরিক ভাষা বা পোশাকে কিছুটা শালীনতা বজায় রেখে কাজ করেছি।”

আরো পড়ুন:

ধর্ষণের প্রতিবাদে সরব তারকারা

৯ দিনে কত আয় করল আমিরের সিনেমা?

শালীনতা বজায় রেখে কাজ করার কথা উল্লেখ করে রাজ রিপা বলেন, “আমি ময়না সিনেমায় কাজ করেছি, কিন্তু চেয়েছি পোশাকের মাধ্যমে খানিকটা শালীনতা থাকুক। আমাকে গল্প বলেছে একটা, কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি চরিত্রটিকে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলতে, যাতে ভালো-মন্দের দ্বন্দ্বটা থাকে।”

বিতর্কের পাশাপাশি ‘ময়না’ পেয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্বীকৃতি। মনজুরুল ইসলাম মেঘ পরিচালিত সিনেমাটি লন্ডনের ‘ইএমএমএএস বিবিসি ফেস্টিভ্যাল অব মাল্টিকালচারাল ২০২৩’-এ সেরা ফিল্ম প্রোডাকশন পুরস্কার, ইতালির ‘কলিজিয়াম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩’-এ বিশেষ পুরস্কার, মুম্বাইয়ের ‘গোল্ডেন জুরি চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩’-এ সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে স্বীকৃতি, দক্ষিণ কোরিয়ার ২১তম আপোরিয়া আন্তর্জাতিক ভিলেজ চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আড়ংয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আছে প্রভিডেন্ট ফান্ড-গ্র্যাচুইটি 
  • আড়ংয়ে জব সার্কুলার ২০২৫, আছে প্রভিডেন্ট ফান্ড-বিমা 
  • সময় এখন বৃক্ষ রোপণের
  • ‘বেহুলার লাচারি’–শিল্পীদের নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত
  • ‘আনটাং’ যাচ্ছে আফ্রিকায়
  • বিএসআরএফ’র নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ ও ফল উৎসব
  • ইতিবাচক লেখনিতে ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার: ডিবিএ সভাপতি
  • সিডনিতে ‘উৎসব’–এ মেতেছেন প্রবাসীরা
  • গাজার পক্ষে সরব ব্যান্ডটি যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের চক্ষুশূলে পরিণত হলো
  • গল্পের প্রয়োজনে অন্তরঙ্গ দৃশ্য করেছি: রাজ রিপা