হাতে প্রজ্বলিত মোমবাতি। এক মিনিট নীরবতা শেষে সবাই সমস্বরে গাইলেন, ‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে/ কত প্রাণ হলো বলিদান,/ লেখা আছে অশ্রুজলে’। গান শেষে সবাই একে একে মোমবাতি রাখেন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে। শনিবার রাত আটটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে এভাবেই শাহরিয়ার আলম সাম্যকে স্মরণ করেন সহপাঠী ও বন্ধুরা।

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন শাহরিয়ার। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন শাহরিয়ার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্মরণসভায় অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড লিডারশিপ বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিস আল শায়েখ বন্ধু শাহরিয়ারের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আমার মূল সাহস ও শক্তি ছিল সাম্য। প্রতিটা দিন আমরা যখন আন্দোলনে যেতাম, আমি এটাই ভাবতাম যে সাম্য আছে আমার সঙ্গে; আমার কিছু হবে না। সে এমন একটা মানুষ ছিল, কখনো তাঁর বন্ধুবান্ধব বা ভাইকে পেছনে ফেলে চলে যেত না।’

শাহরিয়ারের আরেক বন্ধু মশিউর আমিন বলেন, সাম্য হত্যার বিচারে কোনো তৎপরতা নেই। তিনি বলেন, বর্তমান বাংলা একাডেমির আশপাশের এলাকায় ক্লোজসার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরা নেই। এটা যদি সাম্য হত্যার আগের থেকেই না থেকে থাকে, সেটার দায় তো কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

শাহরিয়ারের সহপাঠী সোহেল রানা বলেন, কয়েক দিন ধরে বিচারের দাবিতে এখানে–সেখানে দৌড়াচ্ছি; কিন্তু কোথাও সন্তোষজনক অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।

আরও পড়ুনশাহরিয়ার হত্যায় গ্রেপ্তার তিনজন ৬ দিনের রিমান্ডে৬ ঘণ্টা আগে

স্মরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শাহরিয়ারের হলের শিক্ষার্থী মাহিদ্দুজ্জামান জ্যোতি। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় এখন পর্যন্ত একটা ঈদ করেছি। ওই ঈদ আমি করেছি সাম্য ভাইয়ের সঙ্গে।’

রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলে হলে শাহরিয়ারের স্মরণে মোমবাতি জ্বালিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে বলে জানান তাঁর আরেক সহপাঠী আবিদুর রহমান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম মব ত স মরণ

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলামোটরে এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ফের ককটেল বিস্ফোরণ

রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আবারও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাত ১১টার দিকে এই বিস্ফোরণ হয়। এতে ইমন হাওলাদার নামে একজন আহত হয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিকুস সালেহীন সাংবাদিকদের জানান, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার জুলাই পদযাত্রার চিত্র প্রদর্শনী চলছিল। এর মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে উপস্থিত নেতাকর্মীসহ লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রমনা থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে।

তবে কে বা কারা কীভাবে এই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে রমনা থানার ওসির মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে রমনা থানার ডিউটি অফিসার এসআই জালাল উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। সেইসঙ্গে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।

এদিকে বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কলাবাগান থানা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ইমন হাওলাদার আহত হন। তবে তার আঘাত গুরুতর নয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

এর আগেও এনসিপি কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় একাধিকবার ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গত ৩ জুলাই রাত ৮টার দিকে শাহবাগ মোড়ে জুলাই প্রদর্শনী চলাকালে দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এর আগের দিন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পদযাত্রার প্রদর্শনীর গাড়িতে বিস্ফোরণ হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ