অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি থেকে উত্তরণে যতই চ্যালেঞ্জ থাকুক, এ উত্তরণ করতেই হবে। অন্যান্য দেশ অনেকটাই এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা যেন পিছিয়ে না পড়ি। এখন আর আমাদের ধীরে নয়, দ্রুত অগ্রসর হতে হবে।
গতকাল রাজধানীর র‍্যাডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও মাস্টারকার্ড যৌথভাবে পাঁচটি নতুন কার্ডসেবা চালু উপলক্ষে এর আয়োজন করে। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরী ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক। ব্যাংকের এমডি মতিউল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ডিএমডি ড.

মো. জাহিদ হোসেন এবং সিএফও ড. তাপস চন্দ্র পাল। এ সময় উভয় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নানা অসুবিধা রয়েছে। আরও গ্রাহকবান্ধব ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রয়োজন। সম্প্রতি তাঁর পরিচিত একজন সিনিয়র সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ব্যাংকে সেবার জন্য গেলে তাঁকে এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। তখন ব্যাংকের কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা এনে ওই ব্যাংক গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি যেন আর না হয়। একজন গ্রাহক যেন ব্যাংকে গিয়ে সময় নষ্ট না করেন, স্বচ্ছ ও দ্রুত সেবা পান। 

অনুষ্ঠানে গ্রাহকদের জন্য আরও সহজ, সুবিধাজনক ও নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতে মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও মাস্টারকার্ড যৌথভাবে একাধিক নতুন কার্ডসেবা চালু করে। মাস্টারকার্ড টাইটেনিয়াম ক্রেডিট, ওয়ার্ল্ড মাস্টারকার্ড ক্রেডিট, মাস্টারকার্ড ডেবিট, প্লাটিনাম গ্লোবাল ডেবিট এবং প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে। এসব কার্ডে সংযুক্ত রয়েছে কন্টাক্টলেস প্রযুক্তি, ডুয়াল কারেন্সি সুবিধা এবং ‘টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ বা দুই স্থর নিরাপত্তাব্যবস্থা। এসব কার্ড গ্রাহকদের দেশ-বিদেশে নির্বিঘ্নে ও নিরাপদ লেনদেনের সুবিধা দেবে। ব্যবহারকারীরা ভ্রমণ, লাইফস্টাইল ও রেস্টুরেন্ট খরচের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় ও সুবিধা পাবেন। এছাড়া মাস্টারকার্ড ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দেশব্যাপী ৯ হাজারের বেশি
পার্টনার মার্চেন্ট আউটলেটে থাকছে আকর্ষণীয় অফার ও ডিসকাউন্ট। দেশি-বিদেশি এটিএম থেকে যে কোনো সময় নগদ টাকা তোলার সুবিধাও রয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম স ট রক র ড

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জেনে জি এম কাদের কাউন্সিল স্থগিত করেন

জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরবিরোধী অংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, গত ২০ মে দলের প্রেসিডিয়াম সভায় ২৮ জুন জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেনে জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। পরে আদালতের নির্দেশে সদস্যপদ ফিরে পেয়ে তাঁরা সম্মেলন আয়োজন করেন। তাই জি এম কাদের আর আইনত চেয়ারম্যান নন।

আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই অভিযোগ করেন।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে দাবি করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আদালতে যাই, আদালত আমাদের সদস্যপদ বহাল করেন ও কাদেরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। আমরা রায় পেয়েছি ৩০ জুলাই। কাউন্সিল হয় ৯ আগস্ট। এই মধ্যবর্তী সময়ে জি এম কাদের আদালতে যাননি। এখন তিনি বাইরে চিল্লাচিল্লি করছেন। সুতরাং বিষয়টি আপনাদের বুঝতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা কাউন্সিল করেছি।’

সম্মেলন আয়োজনে কোনো তড়িঘড়ি বা লুকোচুরি করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। তিনি বলেন, অনৈতিকভাবে জি এম কাদের যে সম্মেলন স্থগিত করেছিলেন, সেই সম্মেলন তাঁরা আবার আয়োজন করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘লাঙ্গল’ এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নম্বর–১২ তাঁরা ব্যবহার করবেন।

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁরা সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেবেন।

জি এম কাদের সম্মেলনের ট্রেন মিস করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন কাদেরবিরোধী অংশের নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, কাউন্সিল হয়ে গেছে। এখন আর কোনো আকুতির সুযোগ নেই। তাঁরা পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস ব্যবহার করছেন, এটা অন্যায় করছেন। শিগগির এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাদেরবিরোধীদের কাউন্সিলে জি এম কাদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ৯ আগস্ট কাউন্সিলে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। আগের কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। তাই আইনত জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান পদের ভিত্তি নেই। তাঁরা মিলেমিশে কাজ করার জন্য জি এম কাদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতীয় পার্টির কাদেরবিরোধী অংশের মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের সর্বাত্মক সংস্কারে কাজ করেছিলেন। বর্তমানে যে ক্রান্তিকাল চলছে, তার উত্তরণে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব দরকার।

আরও পড়ুননির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি চেয়ে আনিসুল-হাওলাদার কমিটির চিঠি১৩ আগস্ট ২০২৫

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন, শফিকুল ইসলাম, নাজমা আক্তার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম, মাসরুর মাওলা, সাইদুর রহমান, ইয়াহইয়া চৌধুরী, সরদার শাহজাহান, নুরুল ইসলাম মিলন, লিয়াকত হোসেন, জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, হারুন আর রশিদ, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, মো. ইয়াকুব হোসেন, শেখ আলমগীর হোসেন, নীগার সুলতানা, মো. বেলাল হোসেন, ফখরুল আহসান শাহজাদা, নাসির উদ্দিন সরকার, হাফেজ মাহমুদুর রহমান, সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, শারমিন পারভীন লিজা, মিজানুর রহমান, তাসলিমা আকবর রুনা, শারমিন আকতার, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

আরও পড়ুনজাতীয় পার্টির নিয়ন্ত্রণ নিতে তৎপর আনিসুল, ঠেকাতে সক্রিয় জি এম কাদের১৩ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ