Samakal:
2025-11-03@03:23:00 GMT

সড়কে সড়কে নরক যাত্রা

Published: 18th, May 2025 GMT

সড়কে সড়কে নরক যাত্রা

মৌলভীবাজার জেলার গুরুত্বপূর্ণ দুই উপজেলা কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ। দীর্ঘ সময় ধরে আঞ্চলিক ও স্থানীয় পর্যায়ে সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার এ দুই উপজেলার বাসিন্দারা। ঢল ও বন্যাপ্রবণ এসব এলাকার বেহাল সড়কগুলোর কারণে স্বাভাবিক চলাচল এবং স্থানীয় অর্থনীতি ও কৃষিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জনদুর্ভোগের ব্যাপারে বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা সত্ত্বেও সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি উপজেলা দুটির ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক এলাকা পরিদর্শনের পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন সমকালের কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ প্রতিনিধি।
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে কুলাউড়া উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের পৃথিমপাশা ও কর্মধা ইউনিয়নের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান সড়কটি এখন সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ওই সড়কের শতাধিক স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। কোথাও এর আকার ৩০ থেকে ৫০ ফুট। বেহাল এই সড়কের কারণে ভোগান্তির পাশাপাশি আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে উপজেলার এই দুটি ইউনিয়ন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কগুলো মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন। পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজার থেকে সদপাশা হয়ে কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কটি ২০১৭-১৮ সালে সর্বশেষ সংস্কার করা হয়। এর পর আর কোনো মেরামত করা হয়নি।
সরেজমিন দুই ইউনিয়নের সংযোগকারী সড়কটির বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, প্রায় পুরো সড়কই চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে এই সড়কের কর্মধা ইউনিয়নের বুধপাশা গ্রামের মোড়ারবাজার এলাকায় তিনটি স্থানে ৩০ থেকে ৩৫ ফুট, দানুরমোড়া এলাকার তিনটি স্থানে প্রায় ৫০ ফুট এবং পৃথিমপাশা ইউনিয়নের কানিকিয়ারি গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ২০ থেকে ২৫ ফুট ভেঙে গিয়ে দেড় থেকে দুই ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সড়কজুড়ে উঠে গেছে ইটের সলিং ও পিচ।
এই সড়ক ধরেই পৃথিমপাশা ইউনিয়নের কানিকিয়ারি, রাজনগর, গণকিয়া, ধামুলী, শিকড়িয়া, লুতাবিল ও কর্মধা ইউনিয়নের বুধপাশা, দিগলকান্দি, ফটিগুলি, পূর্ব ফটিগুলি, টাট্রিউলী, দোয়ালগ্রাম, রাজানগর ও মুরইছড়া চা বাগান, মুরইছড়া বস্তি, ১২ থেকে ১৫টি খাসিয়া পানপুঞ্জিসহ দুই ইউনিয়নের ২০ থেকে ২২ গ্রামের লোককে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। 
এ সড়কে নিয়মিত সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালান ফিরোজ আহমদ, ফারুক মিয়া, শামিম মিয়া, লিয়াকত মিয়াসহ অনেকেই। এই সড়কের ভোগান্তি নতুন নয়। সড়কে দুর্ভোগের কথা বলতে গিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এই সড়কে দীর্ঘদিন ধরে কোনো মেরামতকাজ হয়নি। সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে সড়কে ফাটল দেখা দিলে পিচ উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধপাশা স্কুল বাজারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সমাজকর্মী এম.

মঈনুল ইসলাম মছলু বলেন, মুরইছড়া-রবিরবাজার সড়কটিতে চলতে গেলে ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। কুলাউড়া সদর ও রবিরবাজার থেকে এ সড়কের শেষ দিকে সীমান্তবর্তী মুরইছড়া ইকো পার্কের অবস্থান। এলাকার লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকের যাতায়াত রয়েছে সড়কটি দিয়ে। 
এলজিইডির কুলাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম জানান, আরসিআইপি প্রজেক্টের আওতায় ওই সড়কসহ উপজেলার অন্য এলাকায় ২০ কিলোমিটার সড়কের মেরামত কাজের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
পৃথিমপাশা ইউপি চেয়ারম্যান জিমিউর রহমান চৌধুরী বলেন, সড়কটি মেরামতের অভাবে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় একাধিকবার আলোচনা হয়েছে।
এদিকে জেলার কমলগঞ্জ-আদমপুর-কুরমা সড়কের অবস্থাও একই। প্রথম দিকে এসব ক্ষত ছিল ছোট ছোট। নির্ধারিত সময়ে সেগুলো সংস্কার করা হলে গোটা সড়কের অবস্থা এমন হতো না।
এই সড়কের ৫ কিলোমিটার অংশের বিটুমিন ও খোয়া উঠে গেছে সবটাই। ভাঙা অংশের গর্তগুলো বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কটি মেরামতের জন্য দুই বছর আগে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় ঠিকাদার কাজটি না করেই চলে যান। এর পর এই সড়ক সংস্কারে আর কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।
উপজেলা এলজিইডি সূত্র জানায়, সদর থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ৭ কিলোমিটার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চৌমুহনী থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত রাস্তার কার্পেটিং করা হয়। গত সাত বছরে সড়কটি রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মৌলভীবাজার সড়কটি মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করে।
কাজ পাওয়া ঠিকাদার বাজারে পাথর ও বিটুমিনের দাম বৃদ্ধিতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কাজটি না করে সরকারি বিধি অনুযায়ী ১০ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে চলে যায়। এর পর খোদ এলজিইডি বিভাগই হিমশিম খাচ্ছে এই সড়কের কাজ করানোর ব্যাপারে।
আদমপুর এলাকার সমাজকর্মী আকাশ আহমদ ও শাব্বির এলাহী এবং ব্যবসায়ী নীলু সিংহ অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৪ বছর আগে থেকেই কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। আদমপুর, ইসলামপুর, কমলগঞ্জ সদর ও আলীনগর ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। সড়কের অনেক স্থানে বিটুমিন ও ইট-পাথর উঠে গিয়ে ছোট-বড় দুই শতাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে।
সরেজমিন দেখা যায়, কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়কটির আলেপুর নামক এলাকা থেকে আদমপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের অসংখ্য স্থানে কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া ও পাথর বেরিয়ে পড়েছে। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইঞ্জিনচালিত যানবাহন, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে।
এই সড়কে টমেটো, খাসিয়া পানের মতো কৃষিপণ্য পরিবহন করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। ভাঙাচোরা রাস্তায় মালবাহী ট্রাকের চাকা খুলে যাওয়া, অ্যাঙ্গেল ভেঙে যাওয়া বা উল্টে যাওয়ার মতো ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। কয়েকটি দুর্ঘটনায় প্রাণহানিও হয়েছে।
উল্লিখিত এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় সেখানে গর্তে ভরে গেছে। অটোরিকশাচালক মিছির মিয়া, সুলতান মিয়া ও হোসেন আলী বলেন, এই সড়কে চলাচল আর সম্ভব নয়। গোটা এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে উপজেলা থেকে। আমাদের বাঁচান আপনারা। কিছু একটা করেন রাস্তার জন্য। 
মাইক্রোবাস চালক জসিম মিয়া ও আব্দুস সালাম বলেন, ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রায়ই যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে যা রোজগার হয়, তার প্রায় সবটাই চলে যায় মেরামতে।
আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, রাস্তাটি মেরামতের জন্য বারবার সংশ্লিষ্টদের কাছে জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে সড়কটি। দ্রুত মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
এলজিইডির কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল আজম বলেন, কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়কটি সংস্কারের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে টেন্ডার আহ্বান করা হয়ছিল। নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় ক্ষতির ভয়ে কাজে হাত দেননি ঠিকাদার। পরবর্তী সময়ে আবারও রাজস্ব খাত থেকে মেরামতের চেষ্টা করা হলেও বরাদ্দের পরিমাণ বেশি হওয়ায় করা সম্ভব হয়নি। শিগগিরই দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু হবে।
জেলা প্রশাসক ইসরাইল হোসেন বলেন, এই সড়কটি আর সংস্কারের সুযোগ নেই। এখানে নতুন রাস্তা করতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কাজ শুরু করা হবে।
দুর্ভোগে অতিষ্ঠ মানুষ নিজেরাই নেমেছে কাজে
বেহাল সড়কে ভোগান্তির সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় নিজেরাই সংস্কারকাজে নেমেছেন কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর বাজার এলাকার বাসিন্দারা। বাজারের গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে থেকে কান্দিগাঁও পর্যন্ত সড়কটি মেরামত করছেন তারা।
জানা গেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখানকার গ্রামীণ জীবন এবং অর্থনীতির অন্যতম সহায়ক। এই সড়ক ধরেই উপজেলার আদমপুর এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য স্থানীয় ও বাইরের বাজারে যায়। কয়েকশ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন চরমভাবে অব্যাহত হচ্ছে এই সড়কের কারণে।
রোববার সকাল থেকে এলাকার বাসিন্দারা সড়কের মেরামতকাজ শুরু করেন। পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া সড়কে এখন হালকা যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। এই সড়কটি দিয়ে আদমপুর বাজার গ্রামীণ ব্যাংকের সম্মুখ থেকে পশ্চিম কান্দিগাঁও গ্রামের শত শত মানুষ চলাচল করে। 
ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, এই রাস্তাটি আগে একাধিকবার সংস্কার করা হয়েছে। কয়েক দফা বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
ইউএনও মাখন চন্দ্র সূত্রধর গ্রামবাসীকে স্বেচ্ছায় সড়ক সংস্কার করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, রাস্তাটির টেকসই উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক আদমপ র ব জ র স স ক র কর ত র জন য ম র মত র উপজ ল র র সড়কট র অন য র এল ক রব জ র এল ক র র সড়ক ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য

দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।

আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।

আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা।

কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ