রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় পদ্মা নদীর একটি বোয়াল ও মহাবিপন্ন বাগাড় মাছ প্রায় ২৭ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে স্থানীয় এক ব্যক্তি বোয়াল এবং পাবনার কাজিরহাট এলাকার এক ব্যবসায়ী বাগাড়টি কিনে নেন।

এর আগে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার এক মৎস্য ব্যবসায়ী ওই মাছ দুটি নিলামে কিনেছিলেন।

স্থানীয় মৎস্যজীবীরা বলেন, মানিকগঞ্জের জাফরগঞ্জের জেলেরা আজ সোমবার সকালে আরিচা এলাকায় বড় একটি বাগাড় ধরেন। পরে এটি বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাট বাজারের দেলোয়ার সরদার নামের এক ব্যক্তির আড়তে নেন। ১৩ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন বাগাড়টি নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ ১৮ হাজার ৮৫০ টাকায় মাছটি কিনে ১৯ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করেন। এর আগে ১১ এপ্রিল দৌলতদিয়ায় ১০ কেজি ওজনের একটি বাগাড় নিলামে ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে পাঁচ কেজি ওজনের একটি বোয়াল ধরা পড়ে। সেটি আজ সকালে বাজারের হালিম মণ্ডলের আড়তে তোলা হয়। মাছটি ৭ হাজার টাকায় কিনে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে ৭ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেন শাহজাহান শেখ।

শাহজাহান শেখ বলেন, তিনি আজ সকালে বাগাড়টি নিলামে ১ হাজার ৪৫০ টাকা কেজি দরে মোট ১৮ হাজার ৮৫০ টাকায় কেনেন। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুঠোফোনে পাবনার কাজিরহাট এলাকার এক ব্যবসায়ী ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে মোট ১৯ হাজার ৫০০ টাকায় সেটি কিনে নেন।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী বাগাড় শিকার, ধরা ও বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার ও প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি অব্যাহত আছে। নিলামে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় বাগাড় বিক্রি হলেও আইনত কোনো পদক্ষেপ নজরে আসেনি।

খাবারের খোঁজে বা প্রজনন মৌসুম হওয়ায় বাগাড় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে জানিয়ে রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, ‘বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বাগাড় শিকার ও বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও মৎস্য সংরক্ষণ আইনে এমনটি নেই। এ কারণে আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না। ইচ্ছা করলে উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট এল ক র দ লতদ য় ব যবস য় মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ