নারী কমিশন নিয়ে গালাগাল আলোচনাকে খারাপ দিকে নিয়ে গেছে: ফরহাদ মজহার
Published: 21st, May 2025 GMT
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন নিয়ে চলমান বিতর্কে অশালীন ভাষা ও গালাগাল ব্যবহারের কারণে আলোচনা সঠিক পথে অগ্রসর হতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, কিছু আলেমের কটু ভাষা আলোচনাকে নীতিহীন ও বিভ্রান্তিমূলক করে তুলেছে, যা উভয় পক্ষেরই ক্ষতি করেছে।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘নারীর ন্যায্যতা ও নারী সংস্কার কমিশন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন ফরহাদ মজহার। গণশক্তি সভা নামের একটি সংগঠন এ সভার আয়োজন করে।
ফরহাদ মজহার বলেন, নারী সংস্কার কমিশনকে খুব খারাপ ভাষায় গালাগালের বিষয়টা আলোচনাটাকে খারাপ দিকে নিয়ে গেছে এবং এতে উভয় পক্ষেরই ক্ষতি হয়েছে। এটা পশ্চাৎপদ সমাজের লক্ষণ, যেখানে যুক্তির চেয়ে গালাগাল প্রাধান্য পাচ্ছে। এতে একটি যুক্তিনির্ভর ও নৈতিক আলোচনার সুযোগ হারিয়ে যাচ্ছে।
যৌনকর্মকে শ্রম হিসেবে স্বীকৃতির দাবির পেছনে থাকা বাস্তবতা ও সামাজিক প্রেক্ষাপটের দিকটি বিবেচনার আহ্বান জানান ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘আপনি যদি বলেন, একজন নারী পতিতাবৃত্তিতে লিপ্ত, তাহলে আপনাকে জিজ্ঞেস করতে হবে—সে কেন সেখানে গেল? সে তো খুশি হয়ে যায়নি। কোনো মেয়ে জন্ম থেকে যৌনকর্মী হতে চায় না। একজন নারী যদি অভাবে পড়ে এই পথ বেছে নেন, তাহলে প্রশ্ন আসে—ওই সমাজ, আলেম বা ধর্মীয় নেতারা তাঁর জন্য কী করেছেন, তাঁর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা কি তাঁরা করেছেন।’ তিনি বলেন, সমাজে যৌনতা ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা পাশাপাশি চলে, এবং যেহেতু সামাজিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা দেশে নেই, তাই শুধু আইন করে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এ জন্য নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার বিকাশ জরুরি।
নারী কমিশনের গঠন ও এর পেছনের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, কমিশনটি সমাজের প্রতিনিধিত্বমূলক হয়নি। এতে অংশগ্রহণকারী ও সমালোচক উভয়ের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।
নারী অধিকার ও ইসলাম নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে ফরহাদ মজহার বলেন, ইসলাম নারীর স্বতন্ত্র কর্তা সত্তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বহু আগে। কিন্তু আমাদের আলেমরা যদি ইসলামের প্রকৃত ব্যাখ্যা দিতেন, তাহলে নারীবাদীরা যেসব দাবি তুলছেন, তার অনেক কিছুই আগেই ইসলামেই পাওয়া যেত। সমাজে নারী ও পুরুষের সম্পর্ক কেবল যৌনতার নয়, বরং প্রজাতি পুনরুৎপাদন ও পারিবারিক কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে গঠিত। এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই আলোচনা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে ফরহাদ মজহার।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি আইয়ুব ভূঁইয়া। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক শামিমা তাসনিম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স ক্যাথলিক গির্জার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে কোনো একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিজের এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিশাল এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
জেডি ভ্যান্স বলেন, তাঁর যে মন্তব্য নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি মূল বক্তব্য থেকে কেটে নেওয়া একটি অংশ। কোন প্রসঙ্গে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন, সেটা দেখানো হয়নি।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে তরুণদের সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’র একটি অনুষ্ঠানে এক তরুণীর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হিন্দু সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছেন।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।জবাব দিতে এক্স পোস্টে ভ্যান্স বলেন, একটি পাবলিক ইভেন্টে তাঁকে তাঁর আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি ওই প্রশ্ন এড়িয়ে যেত চাননি, উত্তর দিয়েছেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘প্রথমেই বলি, প্রশ্নটি আসে আমার বাঁ পাশে থাকা একজনের কাছ থেকে, আমার আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে। আমি একজন পাবলিক ফিগার, লোকজন আমার ব্যাপারে জানতে আগ্রহী এবং আমি প্রশ্নটি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলাম না।’
এ বছর জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে জেডি ভ্যান্স ও তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স