কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কের প্রভাব বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, বুধবার নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি নোটিশ পোস্ট করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক সাজেদুল ইসলাম সবুজ। পরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এ সময় জেলা সমন্বয়ক সাজেদুল ইসলাম সবুজের সমন্বয়ক পরিচয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে প্রকল্প হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। 

এ সময় আহত হন জেলা সমন্বয়ক মেহেদী হাসান রনি, রশিদুজ্জামান রাফি ও সাজেদুল ইসলাম সবুজ। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন দু’পক্ষের অনুসারীরা।

আহত সমন্বয়ক রশিদুজ্জামান রাফি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন একদম শুরুর পর্যায়ে যে আন্দোলন হয়, তা আমার হাত ধরেই শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত ছিলাম। কয়েকজন তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সমন্বয়ক পদ ব্যবহার করে হুমকি-ধামকি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব খাটিয়ে তারা বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নিচ্ছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, আমরা জানতে পেরেছি যে, কাবিখা নামের প্রকল্প থেকে তারা (সবুজরা) ৬ ইউনিয়নে ৭ লাখ টাকা করে বরাদ্দ নিয়েছেন। ইতোপূর্বে ৯ লাখ টাকা উত্তোলনও করেছেন কিন্তু কোনো কাজ করেনি সাজেদুল ইসলাম সবুজ। কিন্তু আমরা তাদের অনেককে আজকে দেখতে পাই, তারা আন্দোলনে ছিল না। আবার তারা নাগরিক কমিটির পরিচয় দিয়েও নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে।

সমন্বয়ক রাফি আরও বলেন, আমাদের জুলাইয়ের আহত-শহীদদের রক্তের উপর গাদ্দারী করে তারা কিভাবে এসব কাজ করতে পারেন? এটা কি আমরা ছেড়ে দিতে পারি? 

সমন্বয়ক মেহেদী হাসান রনি বলেন, সমন্বয়ক সবুজকে প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় আমাদের উপর আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে আমাদেরকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন তার (সবুজের) সমর্থকরা। 

সমন্বয়ক সাজেদুল ইসলাম সবুজ বলেন, রৌমারীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কমিটি নেই। জেলা আহ্বায়কের নির্দেশনা অনুযায়ী, বুধবার আমি একটা পোস্ট করেছিলাম ফেসবুকে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে। বৃহস্পতিবার মতবিনিময়ে শেষে হোটেলে নাস্তা শেষ করে উপজেলা চত্বর দিয়ে শহীদ মিনারের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় আমাদের এক বড় ভাই ছিল রঞ্জু ইসলাম। তার সঙ্গে রনি খারাপ ব্যবহার করে। এতে আমি কথা বলায় আমার উপর হামলা করে। 

এছাড়া উপজেলা থেকেও ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির কিছু লোকজন আমার উপরে হামলা করে। তাদের মধ্যে শামীম হোসেন আমার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এছাড়াও হামলা করে ওমর ফারুক ইশা, রিজু, মেহেদী হাসান রনি, শাকিবসহ নাম না জানা অনেকে।

এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামসুদ্দিন বলেন, প্রকল্পগুলো দেওয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদে। এটা তাদের বিষয়।

এ ঘটনায় রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহত স জ দ ল ইসল ম সব জ সমন বয়ক স সমন বয়ক র প রকল প আম দ র স ঘর ষ উপজ ল র উপর

এছাড়াও পড়ুন:

‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না’ লেখা সরিয়ে নতুন পোস্ট দিলেন ফয়েজ তৈয়্যব

‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন না। তার ক্ষমতা প্রয়োজন নেই। কিন্তু একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ড. ইউনূসকে দরকার আছে।’

শুক্রবার দুপুরে এ কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পোস্টটি ডিলিট করে আরেকটি পোস্ট দেন তিনি।

বিকেলের পোস্টে ফয়েজ তৈয়্যব লেখেন, ‘ডিসক্লেইমার। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যারের বিষয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসটি আমার ব্যক্তিগত মতামত। এটাকে নিউজ না করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। ধন্যবাদসহ।’

দুপুরের পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না। অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনের জন্য ড. ইউনূস স্যারের দরকার আছে। বরং ক্যাবিনেটকে আরও গতিশীল হতে হবে। সরকারকে আরও বেশি ফাংশনাল হতে হবে, উপদেষ্টাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে, দৃশ্যমান অগ্রগতি জনতার সামনে উপস্থাপন করতে হবে—এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না। আমাদের দেখাতে হবে যে, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তীতে জনতার সম্মতিতে ক্ষমতায় এসে প্রফেসর সাফল্য দেখিয়েছেন। বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মান আছে, এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’

ফয়েজ তৈয়্যব লেখেন, ‘আমি মনে করি, সরকারকে এখন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে আলোচনায় বসতে হবে, নিয়মিত বসে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত চাইতে হবে। কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়। পাশাপাশি সেনাবাহিনীও রাজনীতিতে নাক গলাতে পারবে না। আজকের দুনিয়ায় কোনো সভ্য দেশের সেনাবাহিনী রাজনীতি করে না। তাই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বক্তব্যে সেনাপ্রধান জুরিশডিকশনাল কারেক্টনেস রক্ষা করতে পারেননি। তবে সেনাবাহিনীকে প্রাপ্য সম্মান দেখাতে হবে, আস্থায় রাখতে হবে। সেনাবাহিনী প্রশ্নে হুট করে কিছু করা যাবে না, হঠকারী কিছু করা যাবে না। তেমনি, ইনক্লুসিভনেসের নাম করে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনও চাওয়া যাবে না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব এবং আস্থার জায়গা, সেটা কেউ ভঙ্গ করবে না।’

নির্বাচনের বিষয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন, ‘সকল দরকারি প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন এপ্রিল-মের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করি। এ সময়ে সকল যৌক্তিক সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে, করতে হবে জুলাই সনদ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ