নোবেল শান্তি পুরষ্কার আন্তর্জাতিকভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সম্মানের মধ্যে একটি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই পুরষ্কারের জন্য সমর্থন দিয়েছে। এর আগে একই কাণ্ড করেছিল পাকিস্তান। ট্রাম্প যদি নোবেল পুরষ্কার জয়ী হন, তাহলে তিনি হবেন তালিকায় থাকা পঞ্চম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আদতেই কি ট্রাম্প নোবেল পাবেন?  কীভাবে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয় এবং এর যোগ্যতাই কী, তা জানলে ট্রাম্পের পুরষ্কার পাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা আন্দাজ সম্ভব।

কে জিততে পারে?

ডিনামাইটের উদ্ভাবক সুইডিশ শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছা অনুযায়ী নোবেল পুরষ্কার সেই ব্যক্তিকে দেওয়া উচিত ‘যিনি জাতিগুলোর মধ্যে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি, স্থায়ী সেনাবাহিনীর বিলুপ্তি বা হ্রাস এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা ও প্রচারের জন্য সর্বাধিক বা সর্বোত্তম কাজ করেছেন।’

নোবেল ওয়েবসাইটের ভূমিকায় শান্তি পুরষ্কার কমিটির চেয়ারম্যান জর্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস বলেছেন, “বাস্তবে যে কেউ নোবেল শান্তি পুরষ্কারের প্রাপক হতে পারেন। পুরষ্কারের ইতিহাস স্পষ্টভাবে দেখায় যে এটি সারা বিশ্ব থেকে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে দেওয়া হয়।”

কাদের মনোনীত করা যেতে পারে?

হাজার হাজার মানুষ নাম প্রস্তাব করতে পারেন- সরকার ও সংসদের সদস্য; বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান; ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, আইন ও দর্শনের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রাক্তন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীরা রয়েছেন এই প্রস্তাবকের তালিকায়। তবে প্রার্থী নিজেকে মনোনীত করতে পারে না। মনোনীতদের তালিকা ৫০ বছর ধরে গোপন রাখার ঐতিহ্য রয়েছে। অবশ্য যারা মনোনয়ন দেন তাদের তাদের পছন্দ প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখার মতো কিছুই নেই।

কে সিদ্ধান্ত নেয়?

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তি পুরষ্কারের জন্য একটি উপ-কমিটি করেছে, যার মধ্যে নরওয়েজিয়ান সংসদ নিযুক্ত পাঁচজন ব্যক্তি রয়েছেন। সদস্যরা প্রায়শই অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ হন, তবে এটি স্থায়ী নিয়ম নয়। বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে আছেন PEN ইন্টারন্যাশনালের নরওয়েজিয়ান শাখার প্রধান, যা মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষাকারী একটি দল।

কমিটি কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়?

মনোনয়ন ৩১ জানুয়ারি শেষ হবে, যার অর্থ চলতি বছর ট্রাম্পকে নেতানিয়াহুর মনোনয়ন বিবেচনা করা হবে না। কমিটির সদস্যরা ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বৈঠকের আগে তাদের নিজস্ব মনোনয়ন করতে পারবেন। তারা একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে এবং প্রতিটি মনোনীত প্রার্থীকে স্থায়ী উপদেষ্টা ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের একটি দল মূল্যায়ন করে। কমিটি সর্বসম্মতির প্রতি লক্ষ্য রাখে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রায়শই পুরস্কার ঘোষণার কয়েক দিন আগে নেওয়া হয়।

বিরোধ

নোবেল শান্তি পুরস্কারকে প্রায়শই একটি রাজনৈতিক বার্তা বহনকারী হিসেবে দেখা হয়েছে। নোবেল ওয়েবসাইট বলেছে যে কিছু প্রাপক ‘অত্যন্ত বিতর্কিত রাজনৈতিক চরিত্র।’ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র কয়েক মাস পরেই এই পুরস্কার জিতেছিলেন। ১৯৭৩ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এবং ভিয়েতনামী রাজনীতিবিদ লে ডুক থোকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসানের জন্য আলোচনার জন্য শান্তি পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নোবেল কমিটির দুই সদস্য পদত্যাগ করেছিলেন।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ক র র জন ত কম ট র র জন য মন ন ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্প কি এবার শান্তিতে নোবেল পাবেন?

নোবেল শান্তি পুরষ্কার আন্তর্জাতিকভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সম্মানের মধ্যে একটি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই পুরষ্কারের জন্য সমর্থন দিয়েছে। এর আগে একই কাণ্ড করেছিল পাকিস্তান। ট্রাম্প যদি নোবেল পুরষ্কার জয়ী হন, তাহলে তিনি হবেন তালিকায় থাকা পঞ্চম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আদতেই কি ট্রাম্প নোবেল পাবেন?  কীভাবে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হয় এবং এর যোগ্যতাই কী, তা জানলে ট্রাম্পের পুরষ্কার পাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা আন্দাজ সম্ভব।

কে জিততে পারে?

ডিনামাইটের উদ্ভাবক সুইডিশ শিল্পপতি আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছা অনুযায়ী নোবেল পুরষ্কার সেই ব্যক্তিকে দেওয়া উচিত ‘যিনি জাতিগুলোর মধ্যে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি, স্থায়ী সেনাবাহিনীর বিলুপ্তি বা হ্রাস এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা ও প্রচারের জন্য সর্বাধিক বা সর্বোত্তম কাজ করেছেন।’

নোবেল ওয়েবসাইটের ভূমিকায় শান্তি পুরষ্কার কমিটির চেয়ারম্যান জর্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস বলেছেন, “বাস্তবে যে কেউ নোবেল শান্তি পুরষ্কারের প্রাপক হতে পারেন। পুরষ্কারের ইতিহাস স্পষ্টভাবে দেখায় যে এটি সারা বিশ্ব থেকে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে দেওয়া হয়।”

কাদের মনোনীত করা যেতে পারে?

হাজার হাজার মানুষ নাম প্রস্তাব করতে পারেন- সরকার ও সংসদের সদস্য; বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান; ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান, আইন ও দর্শনের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রাক্তন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীরা রয়েছেন এই প্রস্তাবকের তালিকায়। তবে প্রার্থী নিজেকে মনোনীত করতে পারে না। মনোনীতদের তালিকা ৫০ বছর ধরে গোপন রাখার ঐতিহ্য রয়েছে। অবশ্য যারা মনোনয়ন দেন তাদের তাদের পছন্দ প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখার মতো কিছুই নেই।

কে সিদ্ধান্ত নেয়?

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তি পুরষ্কারের জন্য একটি উপ-কমিটি করেছে, যার মধ্যে নরওয়েজিয়ান সংসদ নিযুক্ত পাঁচজন ব্যক্তি রয়েছেন। সদস্যরা প্রায়শই অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ হন, তবে এটি স্থায়ী নিয়ম নয়। বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে আছেন PEN ইন্টারন্যাশনালের নরওয়েজিয়ান শাখার প্রধান, যা মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষাকারী একটি দল।

কমিটি কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়?

মনোনয়ন ৩১ জানুয়ারি শেষ হবে, যার অর্থ চলতি বছর ট্রাম্পকে নেতানিয়াহুর মনোনয়ন বিবেচনা করা হবে না। কমিটির সদস্যরা ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বৈঠকের আগে তাদের নিজস্ব মনোনয়ন করতে পারবেন। তারা একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে এবং প্রতিটি মনোনীত প্রার্থীকে স্থায়ী উপদেষ্টা ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের একটি দল মূল্যায়ন করে। কমিটি সর্বসম্মতির প্রতি লক্ষ্য রাখে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রায়শই পুরস্কার ঘোষণার কয়েক দিন আগে নেওয়া হয়।

বিরোধ

নোবেল শান্তি পুরস্কারকে প্রায়শই একটি রাজনৈতিক বার্তা বহনকারী হিসেবে দেখা হয়েছে। নোবেল ওয়েবসাইট বলেছে যে কিছু প্রাপক ‘অত্যন্ত বিতর্কিত রাজনৈতিক চরিত্র।’ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র কয়েক মাস পরেই এই পুরস্কার জিতেছিলেন। ১৯৭৩ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এবং ভিয়েতনামী রাজনীতিবিদ লে ডুক থোকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসানের জন্য আলোচনার জন্য শান্তি পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নোবেল কমিটির দুই সদস্য পদত্যাগ করেছিলেন।
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ