নুরুজ্জামানের সম্পদ ক্রোক, গোলাম দস্তগীরের শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ
Published: 8th, July 2025 GMT
সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সম্পদ ক্রোক আর সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও তাঁর স্ত্রী হাসিনা গাজীর নামে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ১৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এর বাইরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের ভবন ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের নামে থাকা জমি, প্লট, গাড়ি ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য আদালতে তুলে ধরে দুদক। পরে স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করার আদেশ চেয়ে আবেদন করা হয়।
শুনানি নিয়ে আদালত নুরুজ্জামানের নামে থাকা একটি গাড়ি, পূর্বাচলে থাকা ১০ কাঠার প্লট ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা আরও ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়। গত ৩০ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন নুরুজ্জামান।
সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে থাকা ২১টি কোম্পানির শেয়ার এবং তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা ১৩টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করে দুদক। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের নামে থাকা কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন।
এর বাইরে গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে থাকা দুটি গাড়ির নিবন্ধন অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গোলাম দস্তগীর গাজী গত বছরের ২৫ আগস্ট গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
সালমানসহ ১৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ১৩ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্যরা হলেন সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সার্ভ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল ইসলাম ও পরিচালক সারবেওয়াত সুলতানা মনামী, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মো. শাহ আলম সারোয়ার, রাবেয়া জামালী, এ আর এম নাজমুস সাকিব, কামরুন নাহার আহমেদ ও জাফর ইকবাল, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন ও নুরুল হাসনাত, বেক্সিমকো গ্রুপের উপব্যবস্থাপক কৌশিক কান্তি পণ্ডিত।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ আগস্ট গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন সালমান এফ রহমান।
শিবলী রুবাইয়াতের ভবন ক্রোকের আদেশ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নামে থাকা ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন ক্রোকের আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করে দুদক। শুনানি নিয়ে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নামে থাকা ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবনটি সাভারে অবস্থিত। গত ৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তিনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র শ য় র অবর দ ধ গ র প ত র হয় ল ইসল ম আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’