এক-দুই হাজার নয়, ১ লাখ ২৫ হাজার বছর আগের কথা। তখন পৃথিবীতে বাস করত আমাদেরই পূর্বপুরুষ—প্রস্তর যুগের মানুষেরা। সেই সময় জার্মানিতে একটি লেকের ধারে তাদের বসবাসের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সেখানে পশুর হাড় থেকে চর্বি সংগ্রহ করত তারা। এ জন্য ছিল বিশাল প্রক্রিয়াকরণব্যবস্থা। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ‘ফ্যাট ফ্যাক্টরি’ বা ‘চর্বির কারখানা’।

এ নিয়ে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘সায়েন্স অ্যাডভান্স’-এ গত বুধবার এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, জার্মানির হ্যালে শহরের দক্ষিণে নিউমার্ক-নর্ড এলাকায় কয়েক বছর ধরে খোঁড়াখুঁড়ি করে এই ‘কারখানার’ সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে মিলেছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার হাড়ের টুকরা এবং ১৬ হাজার পাথরের সরঞ্জাম। চর্বি সংগ্রহের কাজে আগুন ব্যবহারের প্রমাণও মিলেছে।

গবেষকদের বিশ্বাস, সোয়া লাখ বছর আগের ওই মানুষেরা ছিল বিলুপ্ত নিয়ান্ডারথাল প্রজাতির। জার্মানির ওই লেকের ধারে তারা পাথরের হাতুড়ি দিয়ে পশুর বড় হাড় চূর্ণ করত। তারপর সেগুলো ফোটানো হতো পানিতে। একপর্যায়ে হাড় থেকে আলাদা হয়ে চর্বি পানির ওপর ভেসে উঠলে, তা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করত তারা। এ থেকে বোঝা যায়, পুষ্টির বিষয়ে বেশ সচেতন ছিল নিয়ান্ডারথালরা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের সুষম খাবারে সামান্য পরিমাণ চর্বির আবশ্যকতা রয়েছে। এই চর্বি নিয়ান্ডারথালদের জন্য আরও বেশি জরুরি ছিল। কারণ, পশুপাখি শিকার করতে তাদের অনেক শক্তি খরচ করতে হতো। তারা মূলত পশুপাখি থেকে পাওয়া খাবার খেয়েই বেঁচে থাকত। ফলে মাংস ও ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতি হলে নিয়ান্ডারথালদের অপুষ্টিতে ভোগার বড় ঝুঁকি ছিল।

ইউরোশিয়া অঞ্চলে বসবাসকারী নিয়ান্ডারথালরা ৪০ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। জার্মানির নিউমার্ক-নর্ড এলাকায় ৩০০ বছরের বেশি সময় তাদের বসবাস ছিল। নেদারল্যান্ডসের লেইডেন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক উইল রোয়েব্রোকস বলেন, নিয়ান্ডারথালরা বোকা ছিল বলে একটি ধারণা রয়েছে। তবে তাদের বিষয়ে নতুন যে তথ্য পাওয়া গেছে, তা অন্য কিছু প্রমাণ করছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ