জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় মেরু অঞ্চলে হিমবাহ এবং বিভিন্ন পর্বতমালার শীর্ষে থাকা বরফ দ্রুত গলছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিয়ে উপকূলীয় দেশগুলোর জন্য তৈরি করছে বিপর্যয়কর ঝুঁকি। এবার হিমবাহ ও পর্বতমালার বরফের গলন নিয়ে আরও এক বিপদের আভাস দিয়েছেন গবেষকরা। নতুন এক গবেষণা বলছে, জলবায়ু সংকটে হিমবাহ ও পর্বতমালার শীর্ষে থাকা বরফ গলে যাওয়ার ফলে সুপ্ত আগ্নেয়গিরি জেগে উঠে শুরু হতে পারে ধ্বংসাত্মক অগ্ন্যুৎপাতের ঢেউ। 

জানা গেছে, গবেষণার প্রয়োজনে এর সঙ্গে যুক্ত একদল গবেষক চিলিতে আন্দিজ পর্বতমালায় সবচেয়ে উঁচু জায়গায় সক্রিয় ও সুপ্ত উভয় ধরনের আগ্নেয়গিরির মাঝখানে তাঁবু গেড়ে ছিলেন। সেখানে ‘মোচো-চোশুয়েঙ্কো’ নামে একটি আগ্নেয়গিরির ওপর বিশদ গবেষণা চালানো হয়। ওই আগ্নেয়গিরিতে রেডিওআইসোটোপ ব্যবহার করে বরফ যুগের আগে, বরফ যুগ চলাকালে ও পরে তৈরি হওয়া আগ্নেয় শিলার বয়স নির্ধারণ করা হয় । মনে করা হয়, তখন ওই অঞ্চলের ওপর ১ হাজার ৫০০ মিটার পুরু পাটাগোনিয়ান বরফের চাদর ছিল। 

শিলার খনিজ বিশ্লেষণ করে বোঝা গেছে, সেগুলো কত গভীরে ও কত তাপমাত্রায় গঠিত হয়েছিল। গবেষণা উপাত্ত অনুযায়ী, প্রায় ২৬ থেকে ১৮ হাজার বছর আগে পুরু বরফ চাদর অগ্ন্যুৎপাতের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিল। ফলে ভূপৃষ্ঠের ১০-১৫ কিলোমিটার গভীরে ম্যাগমা (গলিত বা অর্ধগলিত শিলা যা অত্যন্ত উত্তপ্ত এবং তরল অবস্থায় থাকে) জমে থাকতে পেরেছিল। কিন্তু প্রায় ১৩ হাজার বছর আগে যখন বরফ গলতে শুরু করে, তখন ম্যাগমা কক্ষের ওপর চাপ সরে যায়, তরল ম্যাগমার গ্যাস প্রসারিত হতে থাকে এবং বিস্ফোরণ ঘটে।

গবেষণা প্রতিবেদনটি চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে অনুষ্ঠিত গোল্ডস্মিডট জিওকেমিস্ট্রি সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে এটি একটি একাডেমি জার্নালে প্রকাশের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। গবেষকরা জানান, এখন বরফ গলতে শুরু করায় ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা কক্ষগুলোর ওপর চাপ কমে যাচ্ছে। ফলে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে এই প্রক্রিয়াটি আইসল্যান্ডে বেশি দেখা যাচ্ছে। আইসল্যান্ড দ্বীপটি একটি মধ্য সাগরীয় টেকটোনিক প্লেট সীমান্তে অবস্থিত। সেখানে আগ্নেয়গিরিগুলো আগের চেয়ে অনেক সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি মহাদেশীয় কোনো অঞ্চলে বরফ গলে যাওয়ার পর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বেড়ে যাওয়ার অন্যতম প্রথম প্রমাণ।

গবেষকদের ধারণা, অগ্ন্যুৎপাত বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে পশ্চিম আন্টার্কটিকায়। কারণ, সেখানে পুরু বরফের নিচে শতাধিক আগ্নেয়গিরি রয়েছে। ভয়ের বিষয় হলো, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে আগামী কয়েক দশকে অ্যান্টার্কটিকার বরফের অনেকটাই হারিয়ে যেতে পারে। তখন এখানকার আগ্নেয়গিরিগুলো জেগে উঠলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে গোটা পৃথিবীর জন্যই। দ্য গার্ডিয়ান
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন য গ র ম য গম হ মব হ বরফ র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ভাটারায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু

ঢাকার ভাটারায় সৈয়দ আরাফাত রহমান আপন (২০) নামে এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন। 

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে ভাটারার বিসমিল্লাহ রোডের ১১৪ নম্বর বাসার ছয়তলার একটি কক্ষ থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আপন ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সের (ইউআইটিএস) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের  বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

নিহতকে ঢামেকে নিয়ে আসা তার ফুফাতো ভাই সাজিদ হোসেন জানান, গতকাল দুপুরে আপন তার কক্ষের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে ছিলেন। দীর্ঘসময় ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে দরজায় নক করলে কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে তারা এসে দরজার ছিটকানি ভেঙে আপনকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আপনের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কমলেসর্দি গ্রামে। তার বাবার নাম মাহবুব মিয়া। 

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি ভাটারা থানাকে জানানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ তদন্তে পুলিশ কাজ করছে।

ঢাকা/বুলবুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ