যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প কিছুদিন আগে এআই ব্যবহার করে নকল অডিও-ভিডিও (ডিপফেক) তৈরির ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। এখন তিনি আত্মজীবনীর এমন একটি অডিওবুক সংস্করণ প্রকাশ করছেন, যেখানে তাঁর কণ্ঠে কথা বলছে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)।

৫৫ বছর বয়সী মেলানিয়া বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মেলানিয়া ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি সাত ঘণ্টার একটি অডিওবুক প্রকাশ করছেন। এর মূল্য ধরা হয়েছে ২৫ ডলার।

সাদা ও কালো রঙের ছোট একটি ভিডিওতে স্লোভেনিয়ার বংশোদ্ভূত সাবেক মডেল মেলানিয়ার মুখের একটি গ্রাফিকস ভেসে উঠতে দেখা যায়। সেখানে তাঁর কণ্ঠস্বরে বলতে শোনা যায়—‘আমার গল্প, আমার দৃষ্টিভঙ্গি, সত্যতা’। তবে ভিডিওতে মেলানিয়ার নিজের কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে, নাকি এটি তাঁর এআই কণ্ঠস্বর, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মেলানিয়া আরও লিখেছেন, ‘আমার নিজস্ব কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে পুরোপুরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বর্ণিত “মেলানিয়া—দ্য এআই অডিওবুক” আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পেরে আমি সম্মানিতবোধ করছি। প্রকাশনার নতুন যুগ শুরু হোক।’

অডিওবুকটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মেলানিয়া ট্রাম্পের নির্দেশনা অনুযায়ীই এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁর কণ্ঠস্বরের রেপ্লিকা তৈরি করা হয়েছে। চলতি বছরের শেষের দিকে একাধিক বিদেশি ভাষায় এর সংস্করণ প্রকাশিত হবে বলে ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে।

অডিওবুকটি এমন সময়ে প্রকাশিত হলো, যার মাত্র কয়েক দিন আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন মেলানিয়া। স্বাক্ষরিত ওই বিলের আওতায় বাস্তব বা এআই-নির্মিত যেকোনো ‘প্রতিশোধমূলক পর্নোগ্রাফি’ অনলাইনে প্রকাশ করাকে ফেডারেল অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

গত অক্টোবরে মেলানিয়ার লেখা আত্মজীবনীর ছাপা সংস্করণ প্রকাশিত হয়। ‘প্রিমিয়াম আর্ট পেপারে’ ছাপা হওয়া স্বাক্ষরযুক্ত এই বিশেষ সংস্করণের দাম ধরা হয়েছে ১৫০ ডলার।

অডিওবুকটি এমন সময়ে প্রকাশিত হলো, যার মাত্র কয়েক দিন আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন মেলানিয়া। স্বাক্ষরিত ওই বিলের আওতায় বাস্তব বা এআই–নির্মিত যেকোনো ‘প্রতিশোধমূলক পর্নোগ্রাফি’ অনলাইনে প্রকাশ করাকে ফেডারেল অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

গত মার্চে মেলানিয়া ট্রাম্প ‘টেক ইট ডাউন অ্যাক্ট’ নামের ওই বিলের পক্ষে প্রচারে অংশ নেন। এর মাধ্যমে তিনি তাঁর স্বামী আবার ক্ষমতায় ফেরার পর প্রথম প্রকাশ্য কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেন। সেখানে ‘ডিপফেকের মতো ক্ষতিকর অনলাইন কনটেন্ট’-এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হন মেলানিয়া।

গত ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকে বেশির ভাগ সময়ই মেলানিয়াকে আড়ালে থাকতে দেখা গেছে। শুধু ওয়াশিংটনে স্বামীর সঙ্গে সীমিত সময় কাটিয়েছেন তিনি। তবে এটি তাঁকে কিছু বেছে নেওয়া প্রকল্পে যুক্ত হতে আটকায়নি, যেগুলো একদিকে তার ভাবমূর্তিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, অন্যদিকে অর্থ আয়ের পথও খোলে।

এআই অডিওবুকের পাশাপাশি মেলানিয়া এখন একটি তথ্যচিত্র সিরিজ নির্মাণে ব্যস্ত, যা অ্যামাজনের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক। এর মূল্য কয়েক কোটি ডলার বলে জানা গেছে।

এআই অডিওবুকের পাশাপাশি মেলানিয়া ট্রাম্প অ্যামাজনের সঙ্গে একটি তথ্যচিত্র সিরিজ নির্মাণ করছেন। বলা হচ্ছে, এর চুক্তিমূল্য কয়েক কোটি ডলার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রক শ ত স স করণ

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ