বিএনপির উদ্দেশ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ চাওয়ার পাশাপাশি গণহত্যার বিচারের রোডম্যাপ চান, দেশের মৌলিক সংস্কারের রোডম্যাপ চান, জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা খুনি হাসিনার বিচারের রোডম্যাপ চান।’

আজ শুক্রবার বিকেলে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন। 

এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, আজ বিএনপির সালাহউদ্দিন ভাই বলেছেন, ‘চলমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ নির্বাচনী রোডম্যাপ দেওয়া। এই মুহূর্তে বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। সেই হিসেবে তাদের কাছে আমাদের এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তাদের দায়বদ্ধতাও সবচেয়ে বেশি।’

তিনি বলেন, ‘সমাধানের একমাত্র পথ হিসেবে যখন নির্বাচনী রোডম্যাপের কথা বলা হয়; তখন জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করা সাধারণ জনগণ, শহিদ পরিবারের সদস্যরা, আহত যোদ্ধারা আশাহত হয়। কোটি মানুষ যে আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে ৫ আগস্টে জীবনের মায়া না করে রাজপথে নেমে এসেছিল; তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়।’ 

সরজিস বলেন, ‘তাই, সালাহউদ্দিন ভাইসহ বিএনপির কাছে আহ্বান থাকবে, ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ চাওয়ার পাশাপাশি গণহত্যার বিচারের রোডম্যাপ চান, দেশের মৌলিক সংস্কারের রোডম্যাপ চান, জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা খুনি হাসিনার বিচারের রোডম্যাপ চান।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘এত বড় একটা গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপির মত বড় দল সবকিছু বাদ দিয়ে খালি নির্বাচন নিয়ে কথা বললে; আমরা আশাহত হই, বাংলাদেশ আশাহত হয়।’

এদিকে আজ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ড.

ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইলে সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে। আমরা (বিএনপি) কখনও তার পদত্যাগ দাবি করিনি।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা না করে যদি তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান, সেটিও তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে একান্তই যদি তিনি দায়িত্ব পালনে অপারগ হন, তাহলে রাষ্ট্র তো বসে থাকবে না। রাষ্ট্র নিজ দায়িত্বে বিকল্প ব্যবস্থা নেবে। জনগণ বিকল্প বেছে নেবে।’

তিনি আরও বলেন, এই পৃথিবীতে কেউ অপরিহার্য নয়। তবে আমরা আশা করি, তিনি একজন বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝবেন। আমরা চাই, জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন। এ সময় নির্বাচন, করিডোর ও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে স্বাগত জানান সালাহউদ্দিন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ এনস প স ল হউদ দ ন গণহত য র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

এ দেশের মানুষ আর কত জীবন দেবে, কত লড়াই করবে: নজরুল ইসলাম

দেশের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে, ৯০-এর ছাত্র আন্দোলন, ২৪-এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে জীবন দিয়েছে। আর কত জীবন দেবে এ দেশের মানুষ, আর কত লড়াই করবে।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, মানুষ প্রাইমারি স্কুল থেকে হাই স্কুলে উঠে, হাই স্কুল থেকে কলেজে যায়, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, আস্তে আস্তে মানুষ উন্নত হয়। আস্তে আস্তে মানুষের পরিবর্তন হয়, ইতিবাচক পরিবর্তন। আর আমরা বারবার যেন সাপ-লুডুর মতো অনেকদূর আগে যাই আবার সাপে কেটে নিচে চলে আসি, আবার আগানোর চেষ্টা করি, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এতো জীবন দেওয়ার পর এখনও অসংগতি নিয়ে আলোচনা হয়, এটা কেন হবে?

তিনি বলেন, যা যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল, সেটা এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি। এই অধ্যাদেশে অতীতে যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা মুক্তি পাবেন। কিন্তু ঘুরেফিরে ওই একই বিধান আরেক জায়গায় রাখা হয়েছে, যাতে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হবে। এর চেয়ে বড় অযৌক্তিক বিষয় আর কী হতে পারে। অধ্যাদেশের বিধানে অস্পষ্টতা আছে। আইনে অস্পষ্টতার সুযোগে যারা আইন প্রয়োগ করে, তারা জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়। আইনে যদি অস্পষ্টতা থাকে এবং জনগণ হয়রানির শিকার হয় তাহলে সে অস্পষ্টতা দূর করার কর্তব্য যারা আইন করেন তাদের।

নজরুল ইসলাম বলেন, যারা আইনের অপব্যবহার করে এবং ব্যতয় ঘটিয়ে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়, তাদের শাস্তির বিধান ও জবাবদিহির বিধানও থাকা উচিত। বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড চলে ঐকমত্য কমিশনে। সেখানে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও এই সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে আলোচনা নেই।

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের ৩৫ ধারার বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধানের সমালোচনা করে সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যদিও সরকার বলছে, বিধানটি আগের মতো উন্মুক্ত নয়, সংকুচিত করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোনো সীমাবদ্ধতায় থাকে না। যে আইন নেই, তার ওপরও পুলিশ কাজ করে। এই অধ্যাদেশ রাখা যাবে না।

সেমিনারে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশুরুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়ক আকরাম হুসাইন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া সেমিনারে মূল বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ১০ জুলাই 
  • গাজায় গণহত্যার প্রতিক্রিয়া দেখাতে বিশ্বকে লুলার আহ্বান
  • একটি দলের কারণে মৌলিক সংস্কার আটকে যাচ্ছে: আখতার
  • নির্বাচনে যাদের ভরাডুবি হবে, তারাই পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়: সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স
  • শাসক পরিবর্তনের মার্কিন নীতি ইরানিদের ‘স্বাধীন’ করবে?
  • ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এরদোয়ানের কপাল খুলে দিতে পারে
  • গণহত্যার বিচার ও সংস্কারের পরেই নির্বাচন: নাহিদ ইসলাম
  • এ দেশের মানুষ আর কত জীবন দেবে, কত লড়াই করবে: নজরুল ইসলাম
  • গাজায় ‘ফ্রেন্ডলি ফায়ারে’ ৩১ ইসরায়েলি সেনা নিহত
  • বিচার, সংস্কার তারপর নির্বাচন: নাহিদ ইসলাম