যশোরে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পালিত ছেলের বিরুদ্ধে। শনিবার শহরের মনিহার ফলপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশ বিকেলে নিহত খালেদা খানম রুমির মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত পালিত ছেলে শেখ শামসকে (২৪) আটক করেছে।  

পুলিশ জানায়, মনিহারের ফলপট্টির শামস্ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ভবনমালিক খালেদা খানম বসাবস করেন। তার কোনো সন্তান না থাকায় শামসকে দত্তক দেন। শনিবার সকাল থেকে ফলপট্টির দোকানদাররা পানি না পাওয়াতে খালেদাকে ডাকাডাকি করেন। ঘর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দুপুরে আবার ডাকাডাকি করেন। ভেতর থেকে কেউ দরজা না খোলায় দোকানদাররা ৯৯৯-এ কল দেন। পরে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা এসে ডাকাডাকি করলে শামস্ দরজা খোলেন। এ সময় পুলিশ ও দোকানদাররা খালেদার খোঁজ নিলে বাড়িতে নেই বলে জানান তিনি। পরে পুলিশের সন্দেহ হলে খালেদার কক্ষের দরজার কাছে যায়। তখন দরজা খুলতে নিষেধ করেন শামস্‌। একপর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শুক্রবার রাত ১টার দিকে খালেদাকে লাঠি দিয়ে পিটিতে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

পরে খালেদার স্বজনের উপস্থিতিতে কক্ষ থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানার হেফাজতে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা জানান, শামস মাদকাসক্ত। বিভিন্ন সময়ে মাদকসেবনের টাকার জন্য তিনি তার মাকে মারধর করতেন। এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: যশ র মরদ হ এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ