১৯৭৪ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন এস এম ফজলুল হক। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হয়েছেন। চাকসু নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
সমকাল: কেমন ছিল ১৯৭৪-এর চাকসু নির্বাচন?
এস এম ফজলুল হক: আমাদের সময় চাকসু প্রার্থীদের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে কতটুকু সক্রিয়– সেসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় পর্যায়ের সমস্যা নিয়ে মতামত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এসবের ভিত্তিতে প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। তৃতীয় চাকসু নির্বাচন ছিল সেটি। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছিলেন।
সমকাল: সেই নির্বাচনে কত ভোটার ও প্রার্থী ছিল?
এস এম ফজলুল হক : তখন প্রায় ১০ থেকে ১১ হাজারের মতো ভোটার ছিল। বিভিন্ন সংগঠনের প্রার্থীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আমি জাসদ ছাত্রলীগ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। বিপুলসংখ্যক ভোট পেয়েছিলাম আমরা।  জিএস হয়েছিলেন গোলাম জিলানী চৌধুরী।
সমকাল: চাকসু নিয়ে বর্তমান প্রশাসনের প্রতি আপনার পরামর্শ কী থাকবে?
এস এম ফজলুল হক: চাকসু বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নির্বাচন হলো জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব তৈরি করার কারখানা। কিন্ত বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এই ছাত্র সংসদ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেতা তৈরির পথ বন্ধ হয়ে আছে। সেজন্য জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিতে একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এসব কাটিয়ে উঠতে হলে নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে হবে। তাদের অংশগ্রহণ শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ না রেখে জতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বৃদ্ধি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে এক্ষেত্রে সক্রিয়  হতে হবে। নির্বাচনে আইন ও নিয়মনীতি সবার জন্য সমান রাখতে হবে। চাকসুর নিয়ম, নীতি ও গঠনতন্ত্রে আধুনিকায়ন প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
 সমকাল: চাকসুতে আপনি কী পরিবর্তন চান?
এস এম ফজলুল হক: সারা বিশ্বে প্রযুক্তিনির্ভর যে পরিবর্তন সেই আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে আধুনিকায়ন প্রয়োজন। চাকসু নেতৃত্বদের অংশগ্রহণের বা মতামত রাখার পরিসর বাড়াতে হবে। বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণ ও প্রাপ্তির পরিমাণ আনুপাতিক হারে বাড়াতে হবে। আমাদের দেশে নারীদের এসব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিয়ে কথিত আলোচনা হলেও বাস্তবে অংশগ্রহণে যথাযথ সহযোগিতা পান না। তাই আমার মতে নারী শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও অর্জনের পথ তৈরি করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর য য সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

কাউখালীর দুর্গম এলাকা থেকে রাউজানের যুবদল কর্মীর লাশ উদ্ধার

সন্ত্রাসীর হাতে যুবদল নেতা সেলিম (৪৫) হত্যার চার দিন পর রাঙামাটি জেলার কাউখালী থেকে দিদারুল আলম (৩২) নামে রাউজানের আরও এক যুবদল কর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দিদারুল ও সেলিম একই গ্রামের বাসিন্দা এবং তাঁর সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কাউখালীর বেতবুনিয়ার একটি পাহাড়ি সড়ক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠিয়েছে। নিহত দিদারুল আলম রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শমসের পাড়ার মৃত জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। পরিবারের সদস্যরা জানান, দিদারুলের ৮ ও ১১ বছরের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বুধবার রাত ১০টায় রাউজানের নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর ঘরে ফেরেননি দিদারুল। আজ দুপুরে ঘটনাস্থলে তাঁর লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে শনাক্ত করেন। দিদারুল কখনো সিএনজি অটোরিকশা চালাতেন, আবার কখনো দিনমজুরির কাজ করে সংসার চালাতেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত দিদারুল গত ৫ আগস্টের পর বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী। এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব সেলিমের সহযোগী ছিলেন তিনি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন, নিহত দিদারুল তাঁর কর্মী। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। গত রোববার যেসব সন্ত্রাসী যুবদল নেতা সেলিমকে হত্যা করেছেন, তাঁরা দিদারুলকেও হত্যা করেছেন।

নিহত ব্যক্তির স্ত্রী কোহিনুর আকতার বলেন, বুধবার রাত ১০টার সময় তাঁর স্বামী বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশে এক আত্মীয়ের বাড়িতে মেজবানের দাওয়াত খেতে যান। তখন স্ত্রীকে ফোনে জানান, মোবাইল বন্ধ থাকলে যেন চিন্তা না করেন। রাতেই বাসায় ফিরে আসবেন তিনি। রাতে বাসায় না ফিরলে সকালে পরিবারের সবাইকে নিয়ে তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও পাননি। বিকেলে কাউখালীতে অজ্ঞাতনামা একটি লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখেন তাঁর স্বামীর লাশ এটি।

কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক সুরতহালে নিহত ব্যক্তির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যাকাণ্ড কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এরপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ