সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, আপনারা যদি গত জুলাই আন্দোলনের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন কবি নজরুল কী রকমভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিল। দেয়ালের লেখনীতে দেখবেন নজরুলের কবিতা গান কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। এটি শিল্পের শক্তি যে আজ থেকে শত বছর আগে তিনি কোথায় বসে গান কবিতা লিখেছেন, উনি তখনও জানতেন না বাংলাদেশের মানুষ তার গান কবিতার অবলম্বন হয়ে উঠবে। তার ওপর অবলম্বন করে একটি গণঅভ্যুত্থান পরিচালনা করবে। এটিই শিল্পের শক্তি নজরুলের শক্তি।

রোববার কুমিল্লায় জাতীয় পর্যায়ে ৩ দিনব্যাপী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী উৎসব উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক কাল সিলেক্টিভ ইতিহাস চর্চা করেছি। সিলেক্টিভ ইতিহাস মানে ইতিহাসের একটা পর্যায় পর্যন্ত আলোচনা করেছি, এর আগে করিনি। এটা দূর করা উচিত। এটা দূর করলে নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে।’ তার ভাষ্য, নজরুলকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে অনুবাদের কাজ করছে নজরুল ইনস্টিটিউট। নজরুলের ক্যারেক্টার তুলে ধরতে বায়োপিক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

অনুষ্ঠানমালার শুরুতে চেতনায় নজরুলে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন অতিথিরা। পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা। এবারের প্রতিপাদ্য ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী। স্বাগত বক্তব্য দেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার। স্মারক বক্তব্য দেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান।

অনুষ্ঠানে ২০২৩-২৪ সালে নজরুল ইন্সটিটিউট ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কবি নজরুল বিষয়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চারজনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে নজরুল চর্চায় ইশরাত আহমেদ শাহীন, সঙ্গীতে রুমী আজনবী, গবেষণায় কবি-সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার ও আবৃতিতে নাসিম আহমেদ।

২৬ মে দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠান হবে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে এবং ২৭ মে সমাপনী অনুষ্ঠান হবে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

এছাড়া ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী ১২৬তম নজরুল জয়ন্তী শুরু হয়েছে রোববার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গাহি সাম্যের গান মঞ্চে’ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নজরুল জয়ন্তীর উদ্বোধন করেন ইউজিসির অধ্যাপক ড.

এস. এম. এ. ফায়েজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। উদ্বোধনী ও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী, সিন্ডিকেট সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য জেহাদ উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক রায়হানা আক্তার ও ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক জিল্লাল হোসাইন। এর আগে বেলা ১১টার দিকে নজরুল ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অতিথিরা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নজর ল উৎসব উপদ ষ ট নজর ল ইসল ম অন ষ ঠ ন নজর ল র উপদ ষ ট ব ষয়ক

এছাড়াও পড়ুন:

পদত্যাগ হবে ড. ইউনূসের জন্য আত্মঘাতী: ফরহাদ মজহার

কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে ভুল করেছেন। পদত্যাগ করা হবে তার ব্যর্থতা, তার জন্য আত্মঘাতী। 

শুক্রবার নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ফেসবুকে তিনি লেখেন, কোনো ব্যক্তি বা দল নয়, তার উচিত জনগণের ঐতিহাসিক অভিপ্রায়কে সম্মান করা, কোনো দল বা গোষ্ঠীর চাপে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখা।

ফরহাদ মজহারের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘ড. ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে ভুল করেছেন। পদত্যাগ করা হবে তার ব্যর্থতা, তার জন্য আত্মঘাতী। কোনো ব্যক্তি বা দল নয়, তার উচিত জনগণের ঐতিহাসিক অভিপ্রায়কে সম্মান করা, কোনো দল বা গোষ্ঠীর চাপে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখা।

বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নয়, রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ড. ইউনূসকে নির্বাচিত করেছে। তাকে অবশ্যই খুনিদের বিচার করতে হবে, নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ণের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠন করবার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে, কাছা খোলা বাজার ব্যবস্থার জবরদস্তি দ্বারা বৈশ্বিক কর্পোরেট দখলদারি কায়েমের বিপরীতে গণবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও কার্যকর করতে হবে, সর্বোপরি দিল্লি ও মায়ানমারসহ শত্রুদেশের বিরুদ্ধে লড়ে জিতবার ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করতে হবে; কারণ রোহিঙ্গাদের তাদের নিজের দেশে যাবার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং তাদের পুনর্বাসনের হিম্মত বাংলাদেশকেই অর্জন করতে হবে। বাংলাদেশের সৈনিকেরা এই দেশের সন্তান বাংলাদেশের জনগণের সামষ্টিক ইচ্ছা বা অভিপ্রায়ের সঙ্গে তারা অঙ্গাঙ্গী জড়িত। জনগণের স্বার্থ তাদেরও স্বার্থ। কারণ তারাও জনগণের অংশ– আমরা কেউই মঙ্গলগ্রহ থেকে আসিনি।

এই সকল লক্ষ্য অর্জনের জন্য জনগণ চায় প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ড. ইউনূসের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক। নির্বাচন অবশ্যই যতো দ্রুত সম্ভব হতে হবে, কিন্তু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে সেনাপ্রধান তার এখতিয়ারের বাইরে নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণিকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর যুক্তি। গণঅভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী জনগণ তা মেনে নেবে না। দেশকে বিভিন্ন শক্তির ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতার ময়দান ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবার দায় তখন সেনাপ্রধানের ওপর বর্তাবে।

সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করবেন, জনগণ সেই আশাই করে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সব পক্ষ শান্ত হয়ে আন্তঃযোগাযোগ বাড়ান
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ হাসানের মরদেহ দেশে ফিরেছে
  • জুলাই শহীদ হাসানের মরদেহ গ্রহণ করবেন মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা
  • সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় এনসিপি
  • দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই: নাহিদ
  • সরকারে থাকা ২ ছাত্র উপদেষ্টা এনসিপির কেউ নয়: নাহিদ
  • মহাসড়কের ওপর সমাবেশ গণঅধিকার পরিষদের
  • পদত্যাগ হবে ড. ইউনূসের জন্য আত্মঘাতী: ফরহাদ মজহার
  • ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করছে বিএনপি