সাইবার বুলিংয়ের প্রতিবাদে শাবিপ্রবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
Published: 22nd, June 2025 GMT
নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে সাইবার বুলিংয়ের প্রতিবাদে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) মানববন্ধন হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বক্তারা ২ মে শাবিপ্রবির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। সেই সঙ্গে নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে সাইবার বুলিংয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে যথাযথ শাস্তির দাবি জানানো হয়।
মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, দুই ছাত্রের দ্বারা ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা জানাজানির পর সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ধারাবাহিক সাইবার বুলিং করা হচ্ছে। কতিপয় অসাধু ব্যক্তি ফেসবুকে বিভিন্ন ভুয়া পেজ ও আইডি খুলে শিক্ষার্থীদের নামে বিভিন্ন অপতথ্য ছড়াচ্ছেন। এ ছাড়া নারী শিক্ষার্থীদেরকে মেসেঞ্জারে ও বিভিন্ন মাধ্যমে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় দুই ছাত্র জড়িত থাকায় সামাজিক বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মর্মাহত। আমরা জড়িতদের রাষ্ট্রীয় আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। আমরা তাদের সঙ্গে নিয়ে ক্লাসে বসতে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের মাধ্যমেও তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।’
ঘটনার পর থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক আল–আমিন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। আমরা এসব সাইবার বুলিংয়ের নিন্দা জানাচ্ছি। নারী শিক্ষার্থীদের নামে বানোয়াট তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তা বন্ধ না হলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে সাইবার বুলিংয়ের প্রতিবাদে আজ দুপুরে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘সাইবার বুলিংয়ে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে আমাদের সহপাঠী ও বিভাগের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। আমরা এর যথাযথ বিচার দাবি করছি।’
গত ২ মে শাবিপ্রবির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এরপর ধর্ষণের ঘটনায় প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ব প রব
এছাড়াও পড়ুন:
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি অনুমোদনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় তাঁরা দাবি বাস্তবায়নে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।
মানববন্ধনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি দ্রুত অনুমোদনের জন্য যদি সরকারের কাছে থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোনো আশ্বাস না পাওয়া যায়, তাহলে নির্ধারিত সময়ের পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপির অনুমোদন নিয়ে ক্রমাগত অবহেলা ও কালক্ষেপণে তাঁরা চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। এ জন্য ২৪ জুলাই থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পৃথক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে মানববন্ধন, মহাসড়কে প্রতীকী ক্লাস, প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তবে সরকারের তরফ থেকে এ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
এর আগে আজ সকাল থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অর্ধবেলা প্রশাসনিক কর্মবিরতি দিয়ে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে প্রকল্পটি প্রস্তাবিত হয় ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকায়। এরপর সাতবার সংশোধনের পর সবশেষ ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকায় নেমে আসে। প্রকল্প মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের মার্চ থেকে ২০২৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, সংগীত ও ব্যবস্থাপনা নামে পাঁচটি বিভাগে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ২০০ জন। সেই সঙ্গে আছেন ৩৪ জন শিক্ষক, ৫৪ কর্মকর্তা ও ১০৭ জন কর্মচারী। পৌর শহরের শাহজাদপুর মহিলা কলেজ, সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া ডিগ্রি কলেজসহ ভাড়া করা দুটি বাড়িতে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।