ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী শাসনের আমলে ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডিদের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও প্রশ্নবিদ্ধ প্রকল্প নিয়ে বারবার সমালোচনা হয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা যথাযথ সম্ভাব্যতা যাচাই করা ছাড়া প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যা কোনো কাজে আসছে না। শম্বুকগতিতে প্রায় এক দশক সময় নিয়ে ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলো, যেন সেখানে টাকা খরচ করাটাই মুখ্য ছিল। এ প্রকল্প জনগণের কাজে এল কি এল না, তা নিয়ে যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই ওয়াসার। এভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, চট্টগ্রাম ওয়াসা দক্ষিণ চট্টগ্রামের চারটি উপজেলায় (বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা ও কর্ণফুলী) শিল্প ও আবাসিক গ্রাহকদের কাছে পানি পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশাল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। চট্টগ্রাম নগর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে একটি পাহাড়ের পাদদেশে এ পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু আড়াই বছর ধরে সংযোগ প্রক্রিয়া শুরু করার পরও ১৫ হাজার গ্রাহকের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মাত্র ৩ হাজার সংযোগ নেওয়া হয়েছে, যা মাত্র ২০ শতাংশ! শিল্পকারখানাগুলোর মধ্যে মাত্র একটি (সিইউএফএল) সংযোগ নিয়েছে, তা–ও তারা সম্পূর্ণ পানি ব্যবহার করছে না। কারণ, ওয়াসা থেকে পানি নিলে তাদের খরচ দ্বিগুণ হয়ে যায়।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে পর্যাপ্ত পানির উৎস আছে। অনেক পুকুর ও জলাশয় আছে, আছে নদী ও খাল। তা ছাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সেখানে আছে বিনা মূল্যের গভীর নলকূপ। তাহলে কী কারণে ওয়াসার সংযোগ নেবে সেখানকার মানুষ? প্রকল্পটি শুরুর আগে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে কেন সমন্বয় করেনি ওয়াসা? কেন গ্রাহকদের চাহিদা ও আগ্রহের বিষয় নিয়ে জরিপ করেনি?
এখন এই বিশাল বিনিয়োগের সদ্ব্যবহার কীভাবে হবে? চট্টগ্রাম নগরীর বিশাল একটি অংশ যখন তীব্র পানির সংকটে ভুগছে, তখন পানি শোধনাগারটি তেমন কাজে আসবে না, তা কী করে হয়? ওয়াসাকে অবশ্যই দ্রুত বিকল্প ভাবতে হবে। এই উৎপাদিত পানি কীভাবে নগরীর ১৫ লাখ পানিবঞ্চিত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেদিকেই তাদের নজর দেওয়া উচিত। অন্যথায় এই প্রকল্প জনগণের অর্থের এক বিশাল অপচয় হয়েই থেকে যাবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামে গ্রাহক বাড়ানোর জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করা উচিৎ ওয়াসার।
কারণ, সেখানে স্থাপিত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ভূগর্ভস্থ পানি তুলছে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। ফলে কীভাবে ভূগর্ভস্থ পানি তোলা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা যায়, সে পরিকল্পনাই করতে হবে এবং সে অনুসারেই পদক্ষেপ নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রকল প
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো চাঁদাবাজ দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘‘বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশের মানুষ আর চলতে চায় না। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তাই মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। এজন্য দেশপ্রেমিক ইসলামিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীতে ইসলামের পক্ষে ভোটের বাক্স হবে একটি। আমরা ইসলামী দলগুলো আর কোনো চাঁদাবাজ দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না।’’
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রেজাউল করীম বলেন, ‘‘একটি দল আছে, যারা পূর্বে ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে একাধিকবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিল। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দলবাজিসহ নানা অপরাধ করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীও করছে। আবারো ক্ষমতায় যেতে ওরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ দেশের ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে ফ্যাসিস্ট বিদায় করেছে পুরনো বন্দোবস্তর জন্য নয়। নতুন সিস্টেম ও নতুন কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। কারণ দেশের মানুষ গত ৫৩ বছর বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ক্ষমতা দেখেছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘দেশের মানুষ পুরনো সিস্টেম আর দেখতে চায় না। পুরনো বউকে নতুন কাপড়ে সাজিয়ে এনে জনগণের সামনে উপস্থাপন করলে জনগণ আর মেনে নেবে না। তাই নির্বাচনের পূর্বে গণভোট দিতে হবে। পিআর কার্যকর করতে হবে। জুলাই সনদের আইনিভিত্তি নির্বাচনের পূর্বেই দিতে হবে। বিদেশি অথবা দেশের কোনো অপশক্তির ইশারায় যদি এগুলো কার্যকর করা না হয়। তাহলে, ইসলামী আন্দোলন দেশের মানুষকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’’
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/রাজীব