প্রিয় কাউকে স্মরণ করে ১ জুলাই কিছু লেখা আমার জন্য চ্যালেঞ্জের। দিনটি তাঁদের দুজনের স্মৃতির সঙ্গেই জড়িয়ে আছে। তাঁরাও হয়তো এটাই চাইতেন। আমার ছটফটে ছোট ভাই এমন এক জায়গায় গেছে যে তাকে পরপারে পাড়ি জমানো নানাভাইয়ের সঙ্গে একই দিনে স্মরণ করা ছাড়া উপায় নেই।
ছোটু (ফারাজ হোসেন) আর নানাভাই (লতিফুর রহমান)—আজ এই দুজনের কথা স্মরণ করে আমি ভাবছি, নানাভাইয়ের সঙ্গে ২০ বছরের একটা ছেলের কী মিল থাকতে পারে। দেখছি, অনেক মিল। তাঁদের শান্ত উপস্থিতি বাসার সবাই অনুভব করে। তাঁদের আত্মবিশ্বাস নীরবে অবিশ্বাস্য শক্তির জোগান দেয়। ঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য করার গভীর অনুভূতি ছিল দুজনের। ছিল প্রতিকূলতার মুখে পিছিয়ে না যাওয়ার শক্তি।
ফারাজ আর আমি যখন ছোট্ট, তখন নানাভাই ও নানুমাকে নতুন স্কুলবর্ষ শুরুর আগে একদিন সন্ধ্যায় দেখতে যাই। সে রাতে নানাভাই আমাদের সেন্ট এডমন্ডসের বোর্ডিং স্কুলে তাঁর প্রথম দিনের ঘটনা শোনান। এক শীতের সকালে নতুন শিশুশিক্ষার্থী হিসেবে তিনি শিলংয়ের স্কুলটিতে গিয়েছিলেন। তাঁর এক বছরের বড় একজন শিক্ষার্থী তাঁকে বিরক্ত করা শুরু করেন। নানাভাইয়ের কথায়, ওই শিক্ষার্থী ‘মজা করার অভিনয়’ করছিলেন। তাই নিজেকে ঠিক রাখতে কিছু একটা করতে হয়েছিল তাঁকে। নিজের চেয়ে বড় ছেলেটিকে থামাতে তিনি তাঁকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে প্রতিবাদী শিশুর পরিচয় দেন। কেননা জানতেন, কাউকে উৎপীড়ন করা ঠিক নয়। ঘটনাটি শুনিয়ে তিনি আমাদের শেখাতে চেয়েছেন, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতেও আমাদের অবশ্যই লড়াই করার শক্তি জোগাতে হবে।
সেই ছোট লতিফুর রহমান পরে ওই একই চেতনায় জীবন কাটিয়েছেন। নিজের, পরিবারের ও প্রিয়জনদের রক্ষায় উঠে দাঁড়িয়েছেন।
একজন তরুণ হিসেবে ফারাজকে নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে বৃহত্তর পরিসরে রুখে দাঁড়াতে হয়েছে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মুখোমুখি হয় সে। নিজের জীবন যখন বিপদাপন্ন, ফারাজ তখন লড়াই, রক্ষা করা ও মন্দ শক্তির কাছে হার না-মানাকে বেছে নিয়েছে।
১ জুলাই নানাভাই ও ছোটুকে স্মরণ করতে হলে তাঁদের একই রকমের ন্যায়নিষ্ঠ মূল্যবোধ আমাদের সমুন্নত রাখা উচিত; যে মূল্যবোধ দুজনই তাঁদের জীবনে ধারণ করেছেন। বিরাট বিপর্যয়, অযাচিত চাপ ও ভয়ানক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভালো কিছু করতে আমাদের অবিচল থাকা উচিত। তাঁদের সম্মানে সেভাবেই দাঁড়ানো উচিত, যা তাঁরা দেখিয়ে গেছেন।
লতিফুর রহমান ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ফারাজ হোসেন সেই ছেলে, যে হোলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার ঘটনায় বীরোচিতভাবে জীবন দিয়েছে। তবে আমার আর আমার পরিবারের কাছে তাঁরা সব সময় একজন নানাভাই আর একজন ছোটু হয়েই থাকবে। নানাভাই আমাদের নানা এবং কারও স্বামী, কারও বাবা; আর ছোটু আমার ভাই এবং কারও ছেলে, কারও নাতি। আমাদের প্রিয় লতিফুর রহমান ও ফারাজ হোসেন ন্যায়ের জন্য আমাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন।
আজকের এই দিনে আমরা আমাদের এ দুই অভিভাবক দেবদূতকে একসঙ্গে স্মরণ করি। নানাভাই ও ছোটুকে সত্যিকারভাবে স্মরণ করা হবে যদি আমরা সাহস নিয়ে বাঁচি, যা তাঁরা আমাদের মধ্যে দেখতে চেয়েছিলেন। প্রার্থনা করি, তাঁদের ছড়িয়ে যাওয়া আলো আগের চেয়ে উজ্জ্বল হোক, আর যে শক্তি ও সাহস তাঁরা দিয়ে গেছেন, তা যেন কখনো মলিন না হয়।
সব সময় আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্বজন, বন্ধুবান্ধব, প্রিয়জন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে গভীর কৃতজ্ঞতা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ধূমকেতুর জন্য রাজের প্রতীক্ষা শেষ
‘‘এত বছরের প্রতীক্ষা শেষ। 'ধূমকেতু' উদযাপন শুরু। প্রত্যেক হলে হলে উন্মাদনা চোখে পড়ার মত। দেব-শুভশ্রী, কৌশিক গাঙ্গুলী সহ গোটা টিমকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। কেউ বড়পর্দায় ধূমকেতু মিস করবেন না যেন!’’—সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই বার্তাই দিয়েছেন টলিউডের জনপ্রিয় নির্মাতা রাজ চক্রবর্তী।
টলিউডে আজ মুক্তি পেয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘ধূমকেতু’। এতে অভিনয় করেছেন দেব-শুভশ্রী জুটি। এই জুটির প্রেমের কথা টলিউডে অজানা নয়। কিন্তু শুভশ্রী এখন রাজের স্ত্রী। আর দেবও পেয়েছেন নতুন প্রেমিকা। তারপরেও দেব-শুভশ্রীকে নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই। সিনেমাটি মুক্তির আগে নৈহাটির মন্দিরে আশীর্বাদ নিতে গিযেছিলেন দেব-শুভশ্রী। পাশাপাশি আসনে বসে পুজাও দেন। সেখানে তাদের পুজা দেওয়ার পাশাপাশি একসঙ্গে বাতি জ্বালাতেও দেখা যায়। মন্দিরের ছাদে উঠে ভক্তদের সঙ্গে দেখাও করেন। তাদের দেখতে অসংখ্য অনুরাগী মন্দিরের সামনে ভিড় জমান। তারা একে অপরের হাত ধরে মন্দিরের ছাদের প্রান্তে এসে দাঁড়ান। শেষে আসে বড় চমক। ভিড়ে ঠাসা জনতার মধ্যে দিয়ে, যত্ন করে শুভশ্রীকে আগলে, নায়িকার হাত ধরে তাকে গাড়িতে তুলে দেন দেব। যা ধূমকেতু নিয়ে আলোচনা একেবারে তুঙ্গে তুলে দিয়েছে।
এদিকে ধূমকেতু দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন রাজ। মৌমিতা চক্রবর্তী নামের একজন কমেন্টের ঘরে লিখেছেন ‘‘আপনি একজন ভালো স্বামী’’।
আরো পড়ুন:
এখনও হৃতিক সুজানের বন্ধুত্ব রয়ে গেছে
গান হলো কিন্তু সংসারটা ঠিকমতো হলো না অলকার
জয়িতা নাথ নামের একজন লিখেছেন, ‘‘কিসের টানে ধূমকেতু দেখবো জানেন।। দেব শুভশ্রী জুটি কে আবার একসাথে দেখবো তাই এর পিছনে আপনার অবদান অনস্বীকার্য।’’
ঢাকা/লিপি