দুঃখ প্রকাশ না করা পর্যন্ত শান্তি পাবে না, আওয়ামী লীগকে শফিকুল আলম
Published: 1st, July 2025 GMT
আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, সদস্য ও সমর্থকরা যতক্ষণ না জুলাই বিপ্লবে নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো শুরু করে, দুঃখ প্রকাশ না করে-ততক্ষণ পর্যন্ত তারা শান্তি পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১ জুলাই) শফিকুল আলম আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন।
তিনি লেখেন, “আমরা মাটি থেকে আপনাদের কুৎসিত প্রভাবের দাগ মুছে ফেলব এবং তা রক্ত দিয়ে ধুয়ে ফেলব। আপনারা কখনও শান্তি পাবেন না—যতক্ষণ না শহীদ ও আহতদের প্রতি সম্মান দেখান। যতক্ষণ না আপনি ‘দুঃখিত’ বলেন।”
প্রেস সচিব বলেন, “আমরা অপেক্ষা করেছি প্রায় দশ মাস—যাতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, সদস্যবৃন্দ এবং তাদের সমর্থকরা দুঃখ প্রকাশ করে এবং একটি বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টায় আমাদের পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু গত বছরের জুলাই থেকে আপনারা যা করেছেন তা হল শহীদদের নিয়ে উপহাস, আমাদের সংগ্রামকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং ১৭ কোটি মানুষকে ‘জঙ্গি’ বলে কলঙ্কিত করেছেন—এই আশায় যে, আপনার ঔপনিবেশিক প্রভুরা এসে আবারো আপনাদের হাতে দেশ তুলে দেবে, যেন লুণ্ঠন ও বিশৃঙ্খলার আরেকটি অধ্যায় শুরু করতে পারেন।”
“দুঃখিত, এবার আর তা হবে না। জুলাই আমাদের সাহসী করেছে। জুলাই আমাদের শিখিয়েছে প্রতিকূলতার মুখেও মাথা তুলে দাঁড়াতে। জুলাই আমাদের ডিএনএ-তে স্থায়ীভাবে এক বিরল সাহসের জিন প্রবেশ করিয়েছে। আমরা আর আগের মতো নই।”
শফিকুল আলম বলেন, “জুলাই আমাদের শিখিয়েছে হাল না ছেড়ে ঝড়ের মতো গুলির মধ্যেও দাঁড়িয়ে থাকার দৃঢ়তা। জুলাই আমাদের ভুলতে দেয় না আমাদের শহীদদের, যাদের আপনারা নির্মমভাবে হত্যা করেছেন; যাদের চোখ উপড়ে নিয়েছেন, যাদের আত্মাকে ছিন্নভিন্ন করেছেন।”
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, “আপনাদের সঙ্গে কখনও শান্তি হবে না—যতক্ষণ না আপনি ‘দুঃখিত’ বলেন, যতক্ষণ না আপনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপনার হাতে রক্ত দেখতে পান।”
মানবতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে শফিকুল আলম বলেন, “আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে লড়ব—আমাদের জমিতে, নদীতে, পাহাড়ে। আমরা লড়ব ভার্চুয়াল জগতেও। আপনারা গণহত্যার সহযোগী ও মানবাধিকারের ডাকাত, আমরা আপনাদের মুখোশ খুলে ফেলব।”
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই আম দ র আপন দ র কর ছ ন আওয় ম আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
সৈয়দ আব্দুল হাদীর জন্মদিনে গানে গানে তরুণ শিল্পীদের শ্রদ্ধা
‘সূর্যোদয়ে তুমি’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘একবার যদি কেউ’, ‘যেও না সাথী’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘আমি তোমারই প্রেম ভিখারি’, ‘আছেন আমার মোক্তার’, ‘তেল গেল ফুরাইয়া’, ‘তোমরা কাউকে বলো না’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’-সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদীর জন্মদিন আজ।
যদিও এ মুহূর্তে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করেছেন, তারপরও দেশবরেণ্য এই শিল্পীর ৮৫তম জন্মদিন আলাদাভাবে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে চ্যানেল আই। আজ সকাল ৭টায় সংবাদের পর প্রচার করতে যাচ্ছে সৈয়দ আব্দুল হাদীর সাড়া জাগানো কিছু গান নিয়ে সাজানো ‘গান দিয়ে শুরু’ অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্ব। সরাসরি সম্প্রচারিত এ অনুষ্ঠানে সৈয়দ আব্দুল হাদীকে গানে গানে শ্রদ্ধা জানাবে এ প্রজন্মের তিন তরুণ শিল্পী মহারাজা, আলাউদ্দিন ও শানু। এ ছাড়াও থাকছে সৈয়দ আব্দুল হাদীকে নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র।
১৯৪০ সালের এই দিনে জন্ম নেওয়া সৈয়দ আব্দুল হাদী হতে চেয়েছিলেন একজন শিক্ষক। কিন্তু জীবনের গতিপথ বদলে গেছে গানের ভুবনে পা রাখার পর। কখনও ভাবতে পারেননি, শখের বশে গান গাইতে গিয়ে কণ্ঠশিল্পী পরিচিতি ও প্রতিষ্ঠা পেয়ে যাবেন। তাঁর অনিন্দ্য সুন্দর কণ্ঠ আর অনবদ্য গায়কি যখন শ্রোতাদের হৃদয় জয় করে নেওয়া শুরু করে, তখন আর চলার পথ বদলে ফেলার সুযোগ পাননি। ততদিন নিজেও সংগীতের প্রেমে ডুবে গিয়েছিলেন। অনুভব করেছিলেন, শিল্পী হিসেবে শ্রোতাদের প্রতি তাঁর এক ধরনের দায়বদ্ধতা তৈরি হয়েছে। সে কারণে নিরলস গান করে যাচ্ছেন তিনি। নিজের আত্মজীবনীতেও এ কথা অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি।
একুশে পদক ও পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত সৈয়দ আব্দুল হাদী। তিনি শিল্পী হিসেবে শুধু গান গেয়ে যাওয়া নয়, সংগীত ভুবনে নতুন কিছু তুলে ধরা এবং নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলার বিষয়েও বিভিন্ন সময় নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন।
‘গানে গানে দেশে দেশে’ ও ‘স্মৃতিময় গানগুলো’ টিভি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বের গানগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন শ্রোতা ও তরুণ শিল্পীদের। আরও আগে বিটিভির প্রযোজক হিসেবে ভিন্নধর্মী আয়োজনের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় শিল্পীদের পরিচিত করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
এ নিয়ে সমকালকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘সবার জীবনে একটা সময় আসে, যখন নিজের পরিবর্তে আগামী প্রজন্মকে নিয়ে ভাবতে হয়। আমি কতটুকু কী দিতে পেরেছি, আরও কিছু দেওয়ার আছে কিনা– সেই ভাবনার চেয়ে বড় হয়ে উঠে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কী করা উচিত। সেই ভাবনা থেকেই ‘গানে গানে দেশে দেশে’, ‘স্মৃতিময় গানগুলো’সহ আরও কিছু অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এবং আমাদের কালজয়ী গানগুলোর পরিচিতি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। নতুন আয়োজনেও উৎস জুগিয়েছি নানাভাবে।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সময়ের সঙ্গে শ্রোতার চাহিদা বদলে যায়। এজন্য শিল্পী থেকে শুরু করে গীতিকার, সুরকার, সংগীতায়োজক’ সবাই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। এই চেষ্টা থেকেই তো বিবর্তন। আমরাও চেষ্টা করছি, গানের কথা, সুর সংগীত এবং গায়কিতে সময়কে ধরে রাখার। একটা বিষয় সবসময় মাথায় রেখেছি, তা হলো গানে মেলোডি ধরে রাখা। কারণ, মেলোডি সুরের গানের চাহিদা কখনও ম্লান হয়নি।’ তার এই কথায় স্পষ্ট, দেশীয় সংগীতের সমৃদ্ধিতে নিরলস কাজ করে যেতে চান তিনি।