ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান ও তাঁর নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। ফারাজ হোসেন ফাউন্ডেশন ও এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের আয়োজনে এসব ক্যাম্পে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ পেয়েছেন কয়েক শ মানুষ। 

গতকাল সোমবার দিনব্যাপী বরিশাল, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, নীলফামারী ও মাগুরায় মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। 

বরিশালের ক্যাম্পটি হয় সদর উপজেলার সাহেবের হাট বাজারে নজরুল সমাজকল্যাণ ক্লাব ও পাঠাগারে। এখানে চিকিৎসা নেন ৩১১ জন। সেখানে চিকিৎসা নিতে আসাদের একজন ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া বেগম (৬০)। তিনি দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্ট ও বুকের ব্যথায় ভুগছিলেন। 

বয়োবৃদ্ধ এই নারী বলেন, বাজার থেকে ওষুধ কিনে খেয়ে তিনি সাময়িক উপকার পান। কিন্তু পারিবারিক দৈন্যের কারণে কোথাও গিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে পারেননি। তাই মেডিকেল ক্যাম্পের মাইকিং শুনে তিনি এখানে চলে এসেছেন। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ ও বিনা মূল্যে ওষুধ পেয়ে খুশি হয়ে রাবেয়া বেগম বলেন, ‘মোগো গরিবে গো লইগ্গা এমন আয়োজন য্যারা করছে, হ্যাগো আল্লায় ভালো করুক। আমি প্রাণ খুইল্লা হ্যাগো লইগ্গা দোয়া করমু।’ 

চিকিৎসাসেবা পেয়ে নিজেদের খুশির কথা জানালেন দীর্ঘদিন ধরে জ্বালাপোড়া, উচ্চ রক্তচাপ ও ঘুমের সমস্যায় ভোগা বিশারদ গ্রামের মো.

হাসেম গাজী (৮০), বুকে-পিঠে ব্যথায় ভোগা কানাইপুরের খাদিজা বেগম (৪২) ও টনসিলের ব্যথা নিয়ে বাবার সঙ্গে ক্যাম্পে আসা ৮ বছর বয়সী শিশু হোসাইন।

বরিশালে চিকিৎসাসেবা দেন ডা. রউফুল ইসলাম হিমেল ও ডা. জয়দেব বোরাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসকেএফের আঞ্চলিক বিক্রয় ব্যবস্থাপক বিদ্যুৎ কুমার দাস, জ্যেষ্ঠ আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. আজিজুল ইসলাম, মেডিকেল সার্ভিস অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম, মো. মিয়াজ সরদার, সেলস অফিসার মো. মিলন হোসেন প্রমুখ।

সাতক্ষীরার ক্যাম্পটি হয় আশাশুনি উপজেলার বুধহাটার করিম সুপার মার্কেটের ডায়াবেটিস অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে। আয়োজকেরা জানান, এখানে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন ৪৫০ জনের মতো।

সাতক্ষীরার ক্যাম্পে রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিনাক কুমার বিশ্বাস ও প্রসূতি রোগবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনামিকা বাছাড়। চিকিৎসক দেখিয়ে ও ওষুধ পেয়ে নিজেদের ভালো লাগার কথা জানান বুধহাটা গ্রামের শারমিন সুলতান (২৮), বুধহাটা গ্রামের মোস্তাক আহমেদ, গুনাকরকাটি গ্রামের তাসলিমা খাতুন (২৫), নৈকাটি গ্রামের মহব্বত আলী (৬৫) প্রমুখ। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালের জ্যেষ্ঠ আঞ্চলিক বিক্রয় ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল করিম। ক্যাম্প পরিচালনায় সহযোগিতা করছেন এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের এলাকা ব্যবস্থাপক নারায়ণ চন্দ্র হালদার, মাঠ ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন, মেডিকেল সার্ভিস কর্মকর্তা কামারুজ্জামান ও দীপক কুমার রায়। 

কুষ্টিয়ার স্বাস্থ্য ক্যাম্পটি হয় মিরপুর উপজেলার অঞ্জনগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে। সেখানে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ৪২৫ জন রোগীকে বিনা মূল্যে ওষুধ ও ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়েছে। 

এখানে রোগী দেখেন ডা. লুৎফুল নাহার, দেবাশীষ দেবনাথ, মনিরুজ্জামান শিমুল, মুরাদ আলী, ইয়াসমিন আরা ও আবদুস সামাদ। সহযোগিতা করেন এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের জ্যেষ্ঠ এলাকা ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম, সিনিয়র মেডিকেল সার্ভিসেস অফিসার মিলন মোল্লা, কুতুবুজ্জামান, মেডিকেল সার্ভিসেস অফিসার আমিরুল ইসলাম ও আশিক হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের উপবিক্রয় ব্যবস্থাপক মাসুদ পারভেজ। 

নীলফামারীর ক্যাম্পটি হয় সৈয়দপুর উপজেলা শহরের বেসরকারি হাসপাতাল নিউ এভার কেয়ার-এ। এখানে ৩০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। রোগী দেখেন ডা. মো. জাভেদ ইউসুফ, নাহিদ আকতার, রাবেয়া সুলতানা ও আতাউর রহমান। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের পঞ্চগড় অঞ্চলের রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার মো. সোহাগ তালুকদার, সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার কামাল কৌটি সানা, সিনিয়র মেডিকেল সার্ভিস অফিসার মো. গাজী সালাউদ্দিন, মো. রফিকুল ইসলাম, মেডিকেল সার্ভিস অফিসার মো. রেজওয়ান আহমেদ, প্রণয় বিশ্বাস দীপ্ত। 

সৈয়দপুর শহরের একজন শ্বাসকষ্টের রোগী জাহানারা বেগম (৪০) বলেন, ‘অনেক কষ্ট পাচ্ছিলাম। খবর পেয়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে এসেছি। এখানে ডাক্তার দেখলাম, ফ্রি ওষুধও পেলাম।’ 

মাগুরার ক্যাম্পটি হয় শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়ন পরিষদে। এখানে সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত শিশু, গাইনি, মেডিসিন ও অর্থোপেডিক বিষয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রায় আড়াই শ রোগীকে এ চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের একজন আকিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের গ্রাম থেকে জেলা হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। গ্রামের মানুষ বড় কোনো সমস্যায় না পড়লে হাসপাতালে যেতে চান না। গ্রামে বসেই মানুষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ও ওষুধ পেয়ে উপকৃত হয়েছেন।’ 

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ফারাজ আইয়াজ হোসেন নিহত হন। আর ২০২০ সালের ১ জুলাই প্রয়াত হন তাঁর নানা, শিল্পপতি লতিফুর রহমান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স অফ স র ম র উপজ ল ল ইসল ম উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

একজনের প্রেমে পড়েছিলাম, এখন সে আমার বউ

প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইতালিতে বাইরে কাজ নিষিদ্ধ, ফ্রান্সে স্কুল বন্ধ
  • খুলনায় ১৯ হাজার ইয়াবাসহ একজন আটক, বড় মাদকের চালান জব্দ
  • রাজস্থলীতে দুই অটোরিকশার সংঘর্ষে মাছ ব্যবসায়ী নিহত
  • চট্টগ্রামে আরও ১৫ জনের করোনা শনাক্ত
  • ছোটু ও নানাভাইকে স্মরণ
  • ফোনালাপ ফাঁসের জেরে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত
  • নারীরা তাদের স্বামীদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারেন, সম্পর্কের বির্বতন নিয়ে অনুপম
  • গাজীপুরে কারখানায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও একজন গ্রেপ্তার
  • একজনের প্রেমে পড়েছিলাম, এখন সে আমার বউ