কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা রেলস্টেশনে পুরাতন একটি গাছের গোড়ায় ভিতরে আগুন জ্বলতে দেখতে পায় স্থানীয়রা। এ সময় গাছের উপরের ডালের ফুটো দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখেন তারা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) ভোরে মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার সময় রমনা রেলস্টেশনে প্রায় ৫০ বছরের পুরনো একটি শিল-কড়াই গাছের ভেতর দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখেন দুই জন মুসল্লি। পরে গাছের কাছে গিয়ে দেখতে পান, গোড়ার ভিতর আগুন জ্বলছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মানুষ গাছের কাছে এসে ভিড় জমায়। সকাল সাড়ে ১১দিকে গাছটি ভেঙে পড়লে গাছের ভেতরে আগুন জ্বলার বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়।

আরো পড়ুন:

ধামরাইয়ে প্রাইভেটকার উল্টে আহত ৫

প্রবাসীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শ্বশুরবাড়ি পুড়িয়ে দিল গ্রামবাসী

খবর পেয়ে আগুন দেখতে আসা আলামিন জানান, এমন ঘটনা এর আগে চোখে পড়েনি। কীভাবে গোড়ার ভিতরে আগুন আসল, আর কীভাবে উপরের ডাল দিয়ে ধোঁয়া বের হতে থাকল? দেখে অবাক লাগছে।

চিলমারী রমনা রেলস্টেশন অফিস রুমের দক্ষিণ পাশে অবস্থান শিল-কড়াই গাছটির। এ গাছের ছায়ায় সময় কাটান ট্রেনের যাত্রীসহ স্থানীয়রা। কিন্তু জীবন্ত গাছের গোড়ার ভিতরে আগুন জ্বলতে এবং ডালপালা দিয়ে ধোঁয়া বের হওয়ার ঘটনা দেখে হতবাক হন তারা।

রমনা এলাকার বাবলু মিয়া বলেন, ‘‘খবর পেয়ে এসে দেখি ঘটনা সত্য। গাছটি পুরনো হওয়ায় গোড়ার ভিতর ফাঁকা হয়ে গেছে। এখানে কেউ আগুন দিয়েছে কি-না তা জানা যায়নি।’’

সকালে গাছে আগুন লাগার খবর শুনে ছুটে আসেন চিলমারী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ফিরে যায় তারা। পরে গাছটি ভেঙে পড়লে আবার এসে আগুন নেভায়।

চিলমারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম লিডার ফারুক হোসেন বলেন, ‘‘ঘটনা শোনার পর সকালে এসে দেখি গাছের ভেতরে আগুন জ্বলছে। পরে গাছের ডালের ধোঁয়া বের হওয়া ফুটোয় পানি দিয়ে নেভানোর চেষ্টা করেছি। পরে যখন গাছটি ভেঙে পড়ে তখন এসে আগুন নেভানো হয়। তবে গোড়ার ফাঁকা জায়গায় কেউ আগুন দিয়েছে কি-না তা জানা যায়নি।’’ 

স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতার পর রমনা রেল স্টেশনের জায়গায় অন্যান্য গাছের সঙ্গে শিল-কড়াই গাছটি রোপন করে রেল কর্তৃপক্ষ।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক বলেন, ‘‘গাছটি রেলওয়ের জায়গায়। খবর পেয়ে আমি সকালে গিয়েছিলাম। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সব দিক থেকে চেষ্টা করেও আগুন নেভানো যায়নি। গাছটি ভেঙে পড়লে আগুন নেভানো হয়। বিষয়টি রেলওয়ে ও বন বিভাগকে জানানো হয়েছে।’’ 

ঢাকা/সৈকত/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন আগ ন ন ভ ন গ ড় র ভ তর গ ছ র ভ তর

এছাড়াও পড়ুন:

শেষ ৫৩ রানের ৪৮-ই ম্যাক্সওয়েলের, ২ উইকেটের জয়ে সিরিজ অস্ট্রেলিয়ার

২০০৯ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। বাজে এই রেকর্ড সঙ্গী করে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার সুযোগ ছিল এবার সিরিজজয়ীর ঘরে নিজেদের নাম লেখানোর। কিন্তু আজ কেয়ার্নসে সিরিজ-নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে হেরে সেই সুযোগ হারিয়েছে প্রোটিয়ারা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজটা অস্ট্রেলিয়া জিতে নিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। এ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা ছয়টি একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া।

আজ অস্ট্রেলিয়ার জয়ের অবিসংবাদিত নায়ক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সহ নায়ক দলটির অধিনায়ক মিচেল মার্শ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দক্ষিণ আফ্রিকা করেছিল ৭ উইকেটে ১৭২ রান। রান তাড়ায় ট্রাভিস হেডকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৮ ওভারে ৬৬ রান এনে দেন মার্শ। এরপর দ্রুত আরও ৩ উইকেট হারালেও মূলত এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়েই অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান ম্যাক্সওয়েল। সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নেওয়া ম্যাক্সওয়েল ৩৬ বলে ৬২ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন।

হেডের বিদায়ের চার বল পরেই জশ ইংলিসকে বোল্ড করে দেন করবিন বশ। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই আউট হয়েছেন চোট কাটিয়ে এক ম্যাচ পর দলে ফেরা এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ৭১ রানের ইংলিসের বিদায়ের পর ১২ রান যোগ হতেই আউট মার্শ। তাঁর ৩৭ বলের ৫৪ রানের ইনিংসটি সাজানো ৫টি ছক্কায়। মার্শকে ফেরানোর তিন বল পরেই ক্যামেরন গ্রিনকে ডিপ মিডউইকেটে ডেভাল্ড ব্রেভিসের ক্যাচ বানান তরুণ প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার কোয়েনা মাফাকা।

দ্রুত ৪ উইকেট হারালেও সেটির প্রভাব বুঝতে দেননি ম্যাক্সওয়েল। নেমেই ট্রাভিস হেডকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে ১৪ বলে ৩২ রানের জুটি গড়েন পঞ্চম উইকেটে। ৯ বলে ১৭ রান করা টিম ডেভিডের ফিরতি ক্যাচ নিয়ে জুটি ভাঙেন কাগিসো রাবাদা। চার বল পরেই রাবাদা ফেরান অ্যারন হার্ডিকেও।

১২২ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার বেন ডোয়ারশুইসকে নিয়ে ২৯ বলে ৪১ রান যোগ করেন ম্যাক্সওয়েল। যে জুটিতে ডোয়ারসুইশের অবদান মাত্র ১ রান। এরপর আবার নাটক। ১৯তম ওভারে করবিন বশ পরপর দুই বলে ডোয়ারশুইস ও নাথান এলিসকে ফিরিয়ে দেন।

২ উইকেট হাতে থাকা অস্ট্রেলিয়া শেষ ওভারটা শুরু করে ১০ রানের প্রয়োজন নিয়ে। লুঙ্গি এনগিডির করা প্রথম বলটায় ম্যাক্সওয়েল চার পাননি করবিন বশের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে। বাউন্ডারি ভেতর থেকে উড়ি গিয়ে বলটাকে মাঠের ভেতরে পাঠিয়ে দেন বশ। পরের বলেই চার মেরে সমীকরণটাকে ৪ বলে ৪ বানান ম্যাক্সওয়েল। পরের দুবলে রান না নেওয়া ম্যাক্সওয়েল ফুল টস পঞ্চম বলটিকে রিভার্স সুইপ করে চার মেরে জিতিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়াকে।

এটি ছিল ৩৬ বলে ৬২ রান করা ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসের অষ্টম চার। এর সঙ্গে দুটি ছক্কাও মেরেছেন অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক। টিম ডেডিডের বিদায়ের পর অস্ট্রেলিয়ার দরকারি ৫৩ রানের ৪৮-এই এসেছে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে।  

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেছেন ব্রেভিস। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়ে সিরিজে সমতা ফেরানো ব্যাটসম্যান আজ ২৬ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৬টি ছক্কা। ১২তম ওভারে দলকে ১১০ রানে রেখে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্রেভিসের বিদায়ের পরই রান তোলার গতি কমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। দলটির ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ রান (২৬ বল) করে অপরাজিত ছিলেন রেসি ফন ডার ডুসেন।

দুই দল এখন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে। সিরিজের প্রথম ম্যাচ কেয়ার্নসেই ১৯ আগস্ট।

সংক্ষিপ্ত স্কোরদক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৭২/৭ (ব্রেভিস ৫৩, ফন ডার ডুসেন ৩৮*, স্টাবস ২৫, প্রিটোরিয়াস ২৪; এলিস ৩/৩১, জাম্পা ২/২৪, হ্যাজলউড ২/৩০)।
অস্ট্রেলিয়া: ১৯.৫ ওভারে ১৭৩/৮ (ম্যাক্সওয়েল ৬২*, মার্শ ৫৪, হেড ১৯; বশ ৩/২৬, রাবাদা ২/৩২, মাফাকা ২/৩৬)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩-ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২-১ এ জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
ম্যান অব দ্য সিরিজ: টিম ডেভিড।

সম্পর্কিত নিবন্ধ