খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে রূপসা সেতুর (খানজাহান আলী সেতু) টোল প্লাজা অবরোধ করেছে আন্দোলনকারীরা। 

মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় তারা সেতুর টোল প্লাজা আটকে দেয়। ‘সচেতন ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে আন্দোলন হলেও সেখানে রূপসা উপজেলা বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের কয়েকজনকে অংশ নিতে দেখা যায়।

এদিকে সেতুর টোল প্লাজা অবরোধের ফলে দুই পাশে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ শত শত যানবাহন আটকা পড়ে আছে। বৃষ্টির মধ্যে ঘণ্টা ধরে আটকে থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যানবাহনের যাত্রীরা। রূপসা সেতুর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।

কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে গত বুধবার থেকে খানজাহান আলী সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছিলেন বৈষম্যবিরোধী একাংশ, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকর্মীরা। সোমবার রাতে তারা রূপসা সেতু ব্লকেডের ঘোষণা দেয়।

এর আগে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ‘পুলিশ কমিশনার বিরোধী আন্দোলন মহল বিশেষের প্ররোচনায় হচ্ছে’ অভিযোগ তুলে কর্মসূচি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আরেক অংশসহ সমমনা ৭টি সংগঠন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রূপসা উপজেলা বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী টোল প্লাজার কাছে জড়ো হন। এ সময় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা খায়রুল ইসলামকে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিতে দেখা যায়। 

পরে বিকেল ৪টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদসহ কয়েকজন উপস্থিত হলে অবরোধ শুরু হয়। তখন বিএনপির সিনিয়র নেতারা চলে যান। আন্দোলনকারীরা ইজিবাইকের ওপর মাইক বেধে নানা স্লোগান দেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল ৫টা) অবরোধ চলছিল। 

আন্দোলনকারী সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, আমাদের দাবির বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি।

গত মঙ্গলবার পুলিশের এসআই সুকান্ত দাশকে মারধর করে খানজাহান আলী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা। সুকান্তের বিরুদ্ধে মামলা থাকা সত্ত্বেও রাতে তাঁকে থানা থেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এর প্রতিবাদে গত বুধবার আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ এবং কেএমপি সদরদপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুকান্তকে গ্রেপ্তার করা না হলে কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগের দাবি জানান। বুধবার ভোরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অবর ধ ন ত কর ম ব এনপ র ক এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় কৃষি ব্যাংকের লকার ভেঙে ১৬ লাখ টাকা লুট

খুলনার রূপসা উপজেলায় কৃষি ব্যাংকের একটি শাখা থেকে ১৬ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। দুর্বৃত্তরা প্রবেশ গেটের পাঁচটি তালা ও লকার ভেঙে এ অর্থ লুট করে। 

তবে, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ব্যাংক বন্ধ থাকায় সেখানে নিজস্ব নিরাপত্তা প্রহরী ছিল না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার ম্যানেজার (ব্যবস্থাপক) কামরুল ইসলাম বলেন, “ভল্টে ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা ছিল, যা দুর্বৃত্তরা লুট করেছে।”

পুলিশ ও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকটি পূর্ব রূপসা পেট্রোল পাম্প ও পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড পুলিশ ফাঁড়ির কাছে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে যেকোনো সময়ে লুটের ঘটনা ঘটতে পারে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কাশেম ব্যাংকে গিয়ে দেখেন মেইন গেটের তালা ভাঙা। ভেতরে ঢুকে তিনি দেখেন মূল গেট ও লকারও ভাঙা অবস্থায় রয়েছে এবং সবকিছু এলোমেলো। তিনি বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পুলিশের উপস্থিতিতে লেজার ও ক্যাশ মিলিয়ে দেখা যায় ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা নেই। লুটপাটের আগে দুর্বৃত্তরা প্রতিটি সিসিটিভি ক্যামেরার ওপর রুমাল দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল।

নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কাশেম জানান, তার স্ত্রী অসুস্থ থাকার কারণে তিনি শুক্রবার সারাদিন ব্যাংকে ছিলেন না। তবে দুপুর ২টার দিকে তিনি একবার ব্যাংকে গিয়ে দেখেছিলেন সবকিছু ঠিক আছে। তার অনুমান, বিকেলের দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।

রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়। ওই দিন থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে যেকোনো সময়ে ব্যাংকে লুটের ঘটতে পারে। আমরা ব্যাংক থেকে এবং আশপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেগুলোর বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।”

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ