কেএমপি কমিশনারের অপসারণ দাবিতে রূপসা সেতু অবরোধ
Published: 1st, July 2025 GMT
খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণের দাবিতে খানজাহান আলী সেতুর (রূপসা) টোল প্লাজার সামনে দুই ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনকারীরা।
চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার পঞ্চম দিনে রূপসা সেতুর টোল প্লাজার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এতে সেতুর ওপর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেতুর দুই পাশে বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কারসহ শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। আগের চার দিন তাঁরা কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘সচেতন ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে আয়োজিত আজকের কর্মসূচিতে অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা। বেলা তিনটার দিকে আন্দোলনকারীরা টোল প্লাজার আশপাশে জড়ো হন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁরা সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এ সময় আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।
বিক্ষোভকারীরা এ সময় ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘পুলিশ কমিশনার জুলফিকার, আস্ত একটা স্বৈরাচার’, ‘পুলিশ লীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’—ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মাইকিং করে ঘোষণা দেওয়া হয়, বৈরি আবহাওয়া ও জনভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আজকের কর্মসূচি শেষ করা হচ্ছে। এরপর আন্দোলনকারী চলে যান।
এ প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দালনের খুলনা জেলা সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, ‘জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা আলটিমেটাম দিয়ে আজকের কর্মসূচি শেষ করেছি। তবে শেষ বারের মতো আইজিপিকে আলটিমেটাম দিয়েছি। আমরা বলেছি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ের সুরাহা না হলে আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত নগরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে রাজপথ ব্লকেড করা হবে। পরে শুক্রবার ও শনিবারের মধ্যে কোনো সমাধান না হলে রোববার থেকে সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথ একযোগে অবরোধ করা হবে।’
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কেএমপি কমিশনার মো.
প্রসঙ্গত, এসআই সুকান্তর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর খুলনা সদর থানায় একটি মামলা হয়, যেখানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া বিএনপির খুলনা মহানগর সভাপতি শফিকুল আলম মনার বাড়ি ভাঙচুরসহ আরও দুটি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এসআই সুকান্তকে সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গত বুধবার থেকে কেএমপি কমিশনারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। টানা দুই দিনের কর্মসূচি শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা কেএমপি কমিশনার অপসারণে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা দেন। নির্ধারিত সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার পর শনিবার থেকে আবার কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। সেদিন সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের খুলনা প্রেসক্লাবে আসার খবর পেয়ে আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাবের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। পরে প্রেস সচিবের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়। ওই রাতেই আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন—২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ কমিশনারকে অপসারণ না করা হলে খুলনার আটটি থানা, দুই উপকমিশনারের কার্যালয় ও কেএমপি সদর দপ্তর ঘেরাও করে শহর অচল করে দেওয়া হবে।
গতকাল সোমবারও কেএমপি সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে থেকেই তাঁরা ঘোষণা দেন, আজ মঙ্গলবার রূপসা সেতুর টোল প্লাজায় ‘ব্লকেড’ দেওয়া হবে।
এদিকে পুলিশ কমিশনারের অপসারণ দাবিকে ঘিরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ভেতরে বিভাজন দেখা দিয়েছে। এক পক্ষ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে থাকলেও অন্য পক্ষের দাবি, তাঁদের উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে, তাই তাঁরা সরে এসেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ ন ন র স মন ক এমপ অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৯
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি অপরাধপ্রবণ এলাকায় বুধবার দিনভর বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ছুরি, দুটি ধারালো চাকু, দুটি লোহার রড, একটি সাইকেল ও ৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়মিত মামলা, মাদক মামলা, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী রয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হীরা (১৯), রফিক (২১), আবদুর রহমান (৩৯), নাবিদ হাসান ওরফে চয়ন (২৬), খোকন (৩১), মনসুর (৩৫), জুয়েল (৩২), সানজু (২২), মিলন (৪২), শাওন (৩৬), নোয়াজ শরীফ (২৮), সেলিম (৩৪), আসাদুজ্জামান ওরফে ইমন (২৩), আনোয়ার হোসেন (৩৬), সজল (৩০), বরকত গাজী (২৮), জুয়েল (৩৮), আরমান (৩০), বাদল (৩৮), কোরবান (২৮), নয়ন (২৭), মাসরুফ (২৩), আল আমিন (২৭), রাকিব (১৮), মিলন (২৫), ওয়াজিদ (৩৬), এরশাদ (২৫), ছালাম ওরফে সামাদ (৩৭) ও দিলসার (৩০)।