ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টন অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করেছে। ৫৭ বছরের ইতিহাসে এবার সর্বোচ্চ তেল পরিশোধন করল সংস্থাটি। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় শোধনাগারটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। 

১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইআরএল বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সরকারি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার। এখানে বিপিসির মাধ্যমে আমদানি করা অপরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কেরোসিন, এলপিজি, ফার্নেস অয়েলসহ ১৪ ধরনের জ্বালানি উৎপন্ন হয়। সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন ইআরএল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান, বিপিসির সচিব শাহিনা সুলতানা ও ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো.

শরীফ হাসনাত।

ইআরএলের চেয়ারম্যান নাসিমুল গনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি তেল শোধন সম্ভব হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এবার শোধন কার্যক্রমে বড় অগ্রগতি হয়েছে। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শোধিত হয়েছিল ১২ লাখ ৭৯ হাজার টন; ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার টন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৭৭ হাজার টন। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ লাখ ১৩ হাজার টন শোধন হয়েছিল, যা এত দিন ছিল সর্বোচ্চ।

বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান বলেন, ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ ছাড়া মহেশখালীতে ১০ লাখ টন সক্ষমতার নতুন শোধনাগার এবং পায়রা বন্দরে আরেকটি শোধনাগার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে মহেশখালীর জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বছরে প্রায় ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত তেল শোধন করতে পারে ইআরএল। দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণ করা গেলে শোধন ক্ষমতা বেড়ে ৩০ লাখ টনে উন্নীত হবে।

ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরীফ হাসনাত বলেন, বর্তমানে পরিশোধন ক্ষমতা যথেষ্ট না হওয়ায় প্রতিবছর ডিজেলসহ বিভিন্ন জ্বালানি আমদানি করতে হয়। এতে সরকারকে অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয়। ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট বাস্তবায়িত হলে বছরে প্রায় ২৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হ জ র টন

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি

চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।

এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।

আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।

এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।

এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে ১৪ দিনে ২০ কোটি টাকার ইলিশ রপ্তানি
  • ১০ বছরে উৎপাদন বেড়েছে ৪৮%
  • কংগ্রেসে অর্থ বিল নাকচ, সংকটে ট্রাম্প প্রশাসন
  • দুর্গাপূজার আগে ভারতে গেল ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি ইলিশ
  • বাজারে এখনো কদর ইনস্ট্যান্ট কফির
  • শুল্কছাড়েও দেশি বিনিয়োগ নেই কনটেইনার পরিবহন খাতে
  • বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়ছে
  • চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি