নিজের ব্যবহৃত ওয়াই-ফাই সংযোগ অজানা কাউকে দেওয়া বা সহজেই অন্যের ওয়াই-ফাই পরিষেবা নেওয়া উচিত নয়। অন্যদিকে ব্লুটুথ সংযোগ ব্যবহারে প্রয়োজন বাড়তি সচেতনতা। তা না হলে নিজের ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে অন্যের হাতে।
ব্লুটুথ ডিভাইসে কয়েক ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। অনেকে সেসব ঝুঁকি বেশি আমলে নেন না। তবে কৌশল মেনে চললে ব্লুটুথ ডিভাইসে পরিষেবাজনিত আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অনুমোদন নেই এমন সংযোগের অনুরোধ না বুঝে গ্রহণ করলে ডিভাইসে ‘ম্যালওয়্যার রেন্ডার’ সক্রিয় হয়ে পড়ে। 
ফলে ডিভাইসে সমস্যা ও গোপন কিছুর অনুপ্রবেশ ঘটে। হুট করে সিস্টেম ক্র্যাশের সম্মুখীন হতে পারে। ব্লুটুথ সংকেত মূলত সীমিত দূরত্বে সংযোগ নিশ্চিত করে। কিছু বিশেষ আধুনিক নেটওয়ার্ক যন্ত্র ব্যবহার করে আক্রমণকারী ডেটা বা আলাপচারিতা হ্যাক করতে পারে। ব্লুটুথের মাধ্যমে পাঠানো অপরিচিত তথ্য বা আহ্বান অবশ্যই সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। অনুপ্রবেশকারী বিশেষ এমআইটিএম পদ্ধতির কৌশলে ব্লুটুথ ডিভাইসে আন্তঃযোগাযোগে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এমন পদ্ধতিতে তথ্য বাগিয়ে নেওয়া নিতান্তই সহজ। তথ্যের গোপনীয়তা এতে শিথিল হয়ে পড়ে। বিশেষায়িত আরেকটি নিরাপত্তা দুর্বলতার নাম ব্লুবোর্ন, যা কোটি কোটি ব্লুটুথ ডিভাইসকে প্রভাবিত করতে সক্ষম।
সব ডিভাইসের পাসওয়ার্ড বদলে সহজেই বিনা অনুমতিতে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া যায়। প্রতারক চক্র
ক্ষতিকারক ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস ডেটা ডিভাইসে স্বয়ংক্রিয় আপলোড হয়ে স্মার্টফোনের নিরাপত্তা বলয় দুর্বল করে এবং তাতে প্রবেশ করে।
কী করবেন কৌশলে
সুনির্দিষ্ট কিছু ব্লুটুথ ডিভাইস দুর্বল এনক্রিপশন বা ডিফল্ট পিন পদ্ধতিতে কাজ করে, যা ব্রুট-ফোর্স আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়। হ্যাকার চক্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা এড়িয়ে যেতে ডিভাইসে অনুমতি ছাড়াই অনুপ্রবেশ পেতে উল্লিখিত দুর্বলতা মেনে কাজ করে। ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) ডিভাইস ও পরিধানযোগ্য সব যন্ত্রে ব্যবহৃত 
বিএলই পদ্ধতি কিছুটা নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। বিএলই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এটি সহজেই ডেটা ম্যানিপুলেশন সমর্থন করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অচেনা পরিবেশে, পথের যাত্রায় বা ক্যাফে ও রেস্টুরেন্টে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েই সংযোগ বা ব্লুটুথ ব্যবহার করতে হবে। 
ছবি ও ভিডিও ডাউনলোড করাই হয় এসব প্রতারণার মূল লক্ষ্য। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে কেমন খেলল আনচেলত্তির ব্রাজিল

গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন ‘ফর্ম’ বা ‘আইডিয়াজ’-এর কথা। তাঁর মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি চিরস্থায়ী, নিখুঁত ও আদর্শ রূপ আছে। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি, তা আসলে সেই নিখুঁত রূপেরই অনুকরণ। যেমন কালো রঙের একটা নিখুঁত ধারণা আমাদের মনের ভেতরে আছে বলেই আমরা চারপাশে কালো রঙের নানা রূপ দেখি। বাস্তবে আমরা যে কালো দেখি, সেটা আসলে সেই নিখুঁত কালোরই প্রতিলিপি।

ফুটবলকে যদি প্লেটোর এই ধারণার আলোকে দেখি, তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৃষ্টি ‘জোগো বনিতো’কে নিখুঁত ফুটবল বলা যায়। আমরা যে ফুটবলের নান্দনিকতা, কৌশল আর সৌন্দর্য দেখি, তা মূলত সেই নিখুঁত ফুটবলেরই প্রতিফলন। আমাদের চোখ সব সময় সেই আদর্শ ফুটবল খুঁজে বেড়ায়। কোথাও তার আভাস পেলেই আমরা উল্লসিত হয়ে উঠি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা থাকে ব্রাজিলের কাছেই, যারা নিজেরাও অনেক আগেই সেই খেলা পেছনে ফেলে এসেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে আবারও সামনে এসেছে ‘জোগো বনিতো’র আলাপ। সেদিন ৯০ মিনিট ধরে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। এরপরই কিছু সংবাদমাধ্যম ও সমর্থক প্রশ্ন তোলে—ব্রাজিলের ‘জোগো বনিতো’ কি আবার ফিরে এল? তবে প্লেটোর ফর্মের যুক্তি মেনে নিলে, সেই নিখুঁত রূপ আসলে কোথাও নেই।

আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যা বললেন ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি১০ অক্টোবর ২০২৫

বরং মনে হয়, ব্রাজিলও হয়তো ভুলে গেছে সেই রূপটা কেমন ছিল। কিন্তু হারানো ঐতিহ্যের প্রতি টানই মাঝেমধ্যে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই খেলার কথা। ‘জোগো বনিতো’র আলোচনাটা সরিয়ে রাখলেও, সেদিন ৫–০ গোলে জেতার পথে ব্রাজিলের ফুটবল সত্যিই ছিল চোখধাঁধানো। অনেক দিন পর সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন। যদিও পরের ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে সেই ব্রাজিলকে পাওয়া গেল সামান্যই।

প্রথমার্ধে ২–০ গোলে এগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। আনচেলত্তি এ ম্যাচে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবু প্রশ্ন উঠতেই পারে—আসল ব্রাজিল কোনটা? দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া দল, নাকি জাপানের বিপক্ষে এগিয়েও হেরে যাওয়া দল? হয়তো আসল ব্রাজিলকে খুঁজতে হবে এই দুই রূপের মাঝামাঝি কোথাও।

ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি

সম্পর্কিত নিবন্ধ